ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)’র গঠিত সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক), রাঙামাটির উদ্যোগে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে “কোভিড-১৯ টিকা প্রদানে সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়” শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার সকালে হাসপাতালের তত্ত¡াবধায়কের কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সনাক সদস্য মোহাম্মদ আলীর সঞ্চালনায় সনাকের স্বাস্থ্য বিষয়ক উপ কমিটির আহবায়ক অমলেন্দু হাওলাদার এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সনাক সদস্য গৈরিকা চাকমার স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে শুরু হয়।
আলোচনার শুরুতে চট্টগ্রাম ক্লাস্টারের ক্লাস্টার কো-অর্ডিনেটর মো: জসিম উদ্দিন পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনের মাধ্যমে জানান বাংলাদেশে দুর্নীতিমুক্ত ও স্বচ্ছ টিকা সরবরাহ ব্যবস্থা এবং টিকায় সকলের সমান সুযোগ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) ‘গভর্ন্যান্স চ্যালেঞ্জেস ইন হেলথ সেক্টর: টুওয়ার্ডস ইফেক্টিভ কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ডেলিভারি’ শীর্ষক একটি প্রকল্প (মেয়াদ: ০১ জুন ২০২১ – ৩১ ডিসেম্বর ২০২১) বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করে। এরই অংশ হিসেবে টিআইবি’র ৪৫টি সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক)-এর কর্ম এলাকায় ১২-১৪ ডিসেম্বর ২০২১ পর্যন্ত কমিউনিটি মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। কমিউনিটি মনিটরিং-এর মাধ্যমে টিকা প্রদান কার্যক্রমে সেবাগ্রহীতাদের সরাসরি অংশগ্রহণ ও অভিজ্ঞতার আলোকে সেবার মান, পর্যাপ্ততা, স্বচ্ছতা, দুর্বলতা এবং সংশ্লিষ্ট টিকা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা সম্পর্কে মতামত সংগৃহীত হয়েছে। তিনি জানান সনাক আশা করে, প্রাপ্ত ফলাফলের আলোকে স্থানীয় পর্যায়ে টিকা প্রদান কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধিসহ দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠির অভিগম্যতা নিশ্চিতকরণে এবং দুর্নীতি প্রতিরোধে স্থানীয় প্রশাসন ও জনগণ এ বিষয়ে যৌথ ভূমিকা পালনে উদ্যোগী হবে।
কমিউনিটি মনিটরিং এর প্রাপ্ত ফলাফলের আলোকে মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে নাইউপ্রু মারমা মেরী, নির্বাহী পরিচালক, উইভ বলেন, বিগত বছরগুলোর তুলনায় রাঙামাটিতে স্বাস্থ্য সেবার মান বৃদ্ধি পেয়েছে এটা অস্বীকার করার কোন সুযোগ নেই। ইতিমধ্যে জেনারেল হাসপাতাল নারীবান্ধব হাসপাতাল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। তিনি নারীবান্ধব টয়লেট এবং নারী বান্ধব টিকাদান কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অনুরোধ করেন।
ডা: মোহাম্মদ শওকত আকবর, আবাসিক মেডিকেল অফিসার, রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতাল বলেন, আমরা খুবই প্রতিকুল পরিস্থিতির মধ্যে কাজ করেছি, শুরুতে আমরা মানুষের কাছ থেকে সারা পায়নি। কিন্তুু ধীরে ধীরে অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে। আমরা রাঙ্গামাটি জেলার প্রায় সকল মানুষকে টিকা আওতায় আনতে পেরেছি। এই গবেষণা আমাদের সীমাবদ্ধতাগুলো কাটিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথ দেখাবে।
সিভিল সার্জন প্রতিনিধি ডা: শুশোভন দেওয়ান এই গবেষণাটি করা জন্য টিআইবিকে প্রথমে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন আমাদের কিছু ক্রটি বিচ্যুতি আছে। তবে অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যেও আমরা চেষ্টা করেছি আমাদের সর্বোচ্চটা দেওয়া চেষ্টা করেছি। তিনি বলেন কোভিড-১৯ টিকা প্রদানে সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের জন্য আমাদের সকল পক্ষকে এক সাথে কাজ করতে হবে। তবেই কোভিড-১৯ টিকা ব্যবস্থাপনায় ¯^চ্ছতা, জবাবদিহীতা ও সুশাসন নিশ্চিত হবে। সমাপনী বক্তব্যে অমলেন্দু হাওলাদার বলেন, আমরা একে অন্যকে সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে কাজ করার জন্য এগিয়ে এসেছি, কোন ভুল ধরা আমাদের উদেশ্যে নয়। গবেষণাটি সুপারিশ সমূহ স্বাস্থ্যবিভাগ আমলে নিলে ক্রটি বিচ্যুতি হওয়ার আর সুযোগ থাকবে না। পরিশেষে এই মতবিনিময় সভাটি আয়োজনে সুযোগ করে দেওয়ার জন্য সিভিল সার্জন ও অংশগ্রহণকারী সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ডা: ইসতিয়াক হোসেইন, হাবিবুর রহমান, খোকন কুমার দে, সাইফুল উদ্দীন, বরুন জ্যোতি চাকমা প্রমুখ। এ সময় হাসপাতাল কর্মকর্তা/কর্মচারী, বিভিন্ন এনজিও কর্মকর্তা, ¯সেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধি, সনাক, এসিজি, টিআইবি কর্মকর্তা ও ইয়েস প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি