রাঙামাটির বরকল উপজেলার সুবলং ইউনিয়নে কুরকুটি ছড়ি এলাকার ইসলাপুর গ্রামে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মো. আবুল কালামের আম বাগানে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন প্রকল্পের দুটি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। ঘর দুটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়ে ঘরের চাবি হস্তান্তর করা হলেও ঘরগুলোতে কেউ থাকে না।
এটি স্থানীয় জনমনে নানান কৌতুহল তৈরি করেছে। এ নিয়ে দুদক রাঙামাটি কার্যালয়ে অভিযোগও দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, আম বাগান পাহারা দেওয়ার জন্য আওয়ামীলীগ নেতা এ ঘরগুলো নিজের বাগানে তৈরি করিয়েছেন।
তবে আবুল কালামের দাবী আম বাগানটি তার। তবে ঘর দুটি ঘরের জন্য তার রেকর্ডকৃত জমি দুজনকে দান করেছেন। এরা দুজনই গৃহহীন লোক।
গেল শুক্রবার এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কুরকুটি ছড়ির কাপ্তাই হ্রদের দ্বীপের মাঝে আবুল কালামের আম বাগানের ভিতরে একই নকশায় ঘর দুটি নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। তবে ঘর দুটিতে কাউকে পাওয়া যায়নি। একটি ঘরের ভিতরে একটি কক্ষে কাপড় মোড়ানো একটি বালিশ ও পাটি দেখা গেছে। একটি কক্ষে তাস পড়ে থাকতে দেখা গেছে। দুটি ঘরের মাঝে একটি গভীর নলকুপ বসানো হয়েছে।
সুবলং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তরুন জ্যোতি চাকমা বলেন, সর্বশেষ দফায় হস্তান্তরিত ঘরের মধ্যে এ ঘর দুটির চাবি হস্তান্তর করা হয়েছিল। তবে সেখানে এখন মানুষ থাকে কিনা আমার জানা নেই। তবে সেখানকার মানুষ একটু জটিল। এরা সব সময় এক জনের পিছে আরেকজন লেগে থাকে। এদের চেনা বড় দায়।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, ঘর দুটির একটি আবুল কালামের আপন ছোট ভাই নুরনবীর। অন্যটি বরকল ইউনিয়নের বাসিন্দা রহিমা বেগমের নামে। স্থানীয়দের দাবী আবুল কালাম এলাকায় খুব প্রভাবশালী ব্যক্তি।
নঈম উদ্দিন (৫০) নামে এক বাসীন্দা বলেন, নুরনবীর নিজস্ব বাড়ি আছে। জমি আছে। ব্যবসা আছে। জাল আছে। কিন্তু তার নামে ঘর নিয়ে দিয়েছে কালাম। রহিমা বেগমের নামে যে মহিলার কথা বলা হচ্ছে সে কুরকুটি ছড়ি এলাকার কেউ না।
সুবলং বাজারের কালামের অফিসে কথা হয় রহিমা বেগম (৬০) সাথে। তিনি বলেন, তার বাড়ি বরকলে। বরকলে যে জমি আছে সে জায়গা খাড়া পাহাড় হওয়ায় ঘর তৈরির অবস্থা নেই। সেজন্য কুরকুটি ছড়িতে আমার বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে। সুবলংয়ে নিজের মেয়ের বাড়িতে থাকেন বলেন রহিমা। এ সময় রহিমা বেগমের সামনে বসা ছিলেন আবুল কালাম। সুবলং থেকে ইসলাম পুরের দুরত্ব প্রায় ৭ কিলোমিটার।
আবুল কালাম বলেন, আমার বাগানে যে ঘরগুলো নির্মাণ করা হয়েছে এগুলোর একটি আমার ছোটভাই নুরনবী আরেকটি রহিমা বেগমের। দুজনই খুব অসহায় গৃহহীন লোক। নুরনবীর জীবনে কোনদিনই ঘর ছিল না। এবার একটি ঘর পেল। একই অবস্থা রহিমা বেগমের। ইউএনও সাহেব আমার কাছে জমি চেয়েছে। তাই আমি জমি দিয়েছি। আমার রেকর্ড করা জমি আমি দান করেছি।
এ ব্যাপারে বরকল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জুয়েল রানা বলেন, সব কাগজপত্র দেখে সরেজমিন তদন্ত করে এ ঘরগুলো সেখানে নির্মাণ করা হয়েছে। এখানে অস্পষ্টতার কোন কারণ নেই। দুজনের নামে কালাম জমি দান করেছে। অনেকে ঘর পায়নি সে কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে এ কাজ করছে তা হতে পারে।