রাঙামাটি জেলার বিলাইছড়ি উপজেলাধীন বড়থলি ইউনিয়নের সাইজাম পাড়ায় গত ২১ জুন ২০২২ দুর্বৃত্তের গুলিতে তিনজন ব্যক্তিকে হত্যা ও দুই শিশু আহত এবং দুর্বৃত্তদের প্রাণনাশের হুমকিতে প্রায় একশত পরিবার আতঙ্কে গ্রাম ছাড়া হওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) সমর্থিত ছাত্র-যুব-নারী সমাজের প্রতিনিধিত্বকারী তিন সংগঠন। এগুলো হল গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ এবং হিল উইমেন্স ফেডারেশন।
সোমবার দুপুরে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের দপ্তর সম্পাদক শুভাশীষ চাকমা স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে যুব ফোরামের সভাপতি অংগ্য মারমা, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি সুনয়ন চাকমা ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সভাপতি নীতি চাকমা সোমবার (৪ জুলাই ২০২২)সংবাদ মাধ্যমে দেয়া এক যৌথ বিবৃতিতে উক্ত ঘটনায় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং সাধারণ জনগণের ওপর দুর্বৃত্তদের এহেন ন্যাক্কারজনক কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
তিনসংগঠনের নেতারা অবিলম্বে ঘটনার সাথে জড়িত দুর্বৃত্তদের গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং নিহত ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার, আহত শিশুদের সু-চিকিৎসাসহ গ্রামবাসীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি করেছেন।
বিবৃতিতে তিন সংগঠনের নেতারা বলেন, আমরা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে জানতে পারি গত ২১ জুন ২০২২ সন্ধ্যা ৭টার দিকে একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী বড়থলি ইউনিয়নে সাইজাম পাড়ায় ঢুকে গ্রাম বাসীদের লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি ছুঁড়লে ঘটনাস্থলে চিতারাম ত্রিপুরা, বিশ্ব চন্দ্র ত্রিপুরা ও সুভাষ ত্রিপুরা নামে তিন গ্রামবাসী নিহত এবং দুই শিশু আহত হয়।
আহত শিশুরা এখনো চট্টগ্রাম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে। ঘটনার ১২ দিনপরও তিন মৃত দেহ উদ্ধার, হত্যার রহস্য উদঘাটন ও দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে প্রশাসন কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।
তিন সংগঠনের নেতারা পার্বত্য চট্টগ্রামে এ ধরনের ঘটনা বিচ্ছিন্ন কোন ঘটনা নয়, এর পেছনে সরকার ও রাষ্ট্রীয় বাহিনী প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত বলে মন্তব্য করেন।
বিবৃতিতে তারা আরও অভিযোগ করে বলেন, পাহাড়ি জনগণকে‘ভাগ কর, শাসন কর’নীতি প্রয়োগের মাধ্যমে বিভক্ত করে রাখা হয়েছে।
রাষ্ট্রীয় বাহিনী পাহাড়িদের মধ্যেকার একটি গোষ্ঠীকে মদদ দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে সন্ত্রাসী রাজত্ব কায়েম করে নিজেদের হীনস্বার্থ হাসিলের ঘৃণ্য খেলায় মেতে উঠেছে। বিলাইছড়ি সাইজাম পাড়া ঘটনা তারই অংশ।
সে কারণে সরকার-প্রশাসন এ ব্যাপারে নির্বিকার। আতঙ্কগ্রস্ত গ্রামবাসী নিজপাড়া-গ্রাম ছাড়তেবাধ্য হলেও সেনা-পুলিশ প্রশাসন কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
সূত্র: প্রেস বিজ্ঞপ্তি