কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে প্রতিবছর কাপ্তাই উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারের কামার পল্লিতে কর্ম ব্যস্ততা বাড়লেও এইবছর ভিন্ন চিত্র দেখা যাচ্ছে। পবিত্র ঈদুল আযহার (কোরবানির) আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। আর কোরবানির পশু জবাই ও মাংস কাটতে দা, বটি, ছোরা, ছুরিসহ নানা হাতিয়ার এর বিকল্প নেই। তাই বছরের এই সময়টাতে ঈদকে সামনে রেখে কামারদের দম ফেলবার ফুসরত থাকতো না। দিন-রাত কামারশালায় টুংটাং শব্দ লেগেই থাকতো।
কিন্তু বুধবার কাপ্তাই নতুন বাজার সহ বিভিন্ন হাট বাজার এলাকায় সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অলস সময় পার করছে কামার দোকানীরা। বিশেষ করে কিছু কিছু ধাতব সরঞ্জামাদি শান দিতে শানদানের দোকানে সামান্য ভিড় দেখা গেলেও তা অনান্য বছরের তুলনায় অনেক কম বললেন কামার দোকানীরা। এছাড়া পূর্বের মতো কাজের চাপ নেই বলে জানান তারা।
কাপ্তাইয়ের শ্রী সাধন কর্মকার নামের এক কামার দোকানি বলেন, প্রতিবছর ঈদ আসলেই কাজের চাপ কয়েকগুণ বেড়ে যায়। কিন্তু এবার সে পরিমাণ কাজ নেই। তিনি আরও বলেন, ঈদের এক মাস আগ থেকেই দা, ছুরি, বটি, চাপাতিসহ নানা হাতিয়ার তৈরির কাজ শুরু হতো। কামারশালার সামনে বিক্রি করার জন্য সাজানো থাকতো কোরবানি করার বিভিন্ন সরঞ্জামাদি। বিক্রি শুরু হতো দুই সপ্তাহ আগে থেকে। কিন্তু কোরবানী ঘনিয়ে আসলেও এখনো বেচাবিক্রি অনেক কম বলে জানান তিনি।
অপরদিকে কামার দোকানী মোঃ আরাফাত হোসেন ও নয়ন কর্মকার সহ কয়েকজন জানান, বর্তমানে নতুন সরঞ্জাম বিক্রি না হলেও অনেকে তাদের পুরানো দা, ছুরি, বটি শান দিতে আসছেন। তবে অনান্য বছরের তুলনায় এ বছর বেচা বিক্রি কম হওয়াতে লোকশানের আশংকা করছেন তারা। এছাড়া করোনার পর থেকেই কামার শিল্পে ধস নেমেছে বলে তারা জানান। কেননা করোনার পূর্বে কোরবানীর ঈদ গুলোতে তাদের ব্যস্ততা অনেক বেড়ে যেতো। তবে বর্তমানে তারা সকলেই প্রায় অলস সময় পার করছেন বলে জানান।
এদিকে, কামারের দোকানে আসা কয়েকজন ক্রেতার সাথে কথা বলে জানা যায়, অন্য বছরের তুলনায় এবার ছুরি-চাপাতি এবং দা-বটির দাম বেশি চাওয়া হচ্ছে। আর কামার দোকানীরা বলছেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, লোহা ও কয়লার দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এসব হাতিয়ার তৈরি করতে খরচ বেশি হচ্ছে।