আগামীকাল বুধবার রাঙামাটিতে আহবান করা পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের সভা স্থগিত করায় রাঙামাটি শহরে ঘোষিত ৩২ ঘন্টার হরতাল প্রত্যাহার করেছে পার্বত্য বাঙালি ভিত্তিক সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ।
বুধবার দুপুর আড়াই টায় নাগরিক পরিষদের সভা শেষে সংবাদিকদের এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন নাগরিক পরিষদের কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান কাজী মজিবুর রহমান ৷
এ সময় তিনি বলেন, ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের বৈঠক স্থগিত করায় আমাদের ঘোষিত হরতাল কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে এ সময়ের মধ্যে গোপনে কোন বৈঠক করা হয় তবে আমরা আবারও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে। তিনি দাবী করেন নাগরিক পরিষদের হরতাল সফল হয়েছে। সকল সম্প্রদায়ের মানুষ স্বতস্ফুর্তভাবে হরতাল পালন করেছে।
এদিকে, পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের ৭ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠেয় বৈঠক ও ৭ দফা দাবিতে মঙ্গলবার সকাল ৬টা রাঙামাটি শহরে শুরু হয় টানা ৩২ ঘন্টার হরতাল। হরতালের প্রথমদিন দুপুরেই এক আদেশে পূর্বনির্ধারিত বৈঠক স্থগিত করেন ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন সচিব মোহাম্মদ নেজাম উদ্দীন। আদেশে বলা হয় পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ও অন্যান্য সদস্যরা রাঙামাটিতে পূর্ব নির্ধারিত ৬ ও ৭ সেপ্টেম্বর ভূমি কমিশনের সভায় স্থগিত করার অনুরোধ করায় সভা স্থগিত করা হল।
এর আগে গত সোমবার পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের বৈঠক ‘প্রতিহতে’ মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে বুধবার দুপুর ২টা পর্যন্ত রাঙামাটি শহরে হরতাল ডাকে নাগরিক পরিষদ। নাগরিক পরিষদ পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন সংশোধনে ৭ দফা দাবি তুলে ধরে।
দাবিগুলো হল; ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনে জনসংখ্যা অনুপাতে সকল জাতিগোষ্ঠী থেকে সমান সংখ্যক সদস্য নিশ্চিত করা; ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি এর কার্যক্রম শুরুর পূর্বে, ভূমির বর্তমান অবস্থা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ভূমি জরিপ সম্পন্ন করা; জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সকল সম্প্রদায়ের মানুষের ভূমির ওপর ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দেশের সংবিধানের সঙ্গে ‘সাংঘর্ষিক’ ভূমি কমিশন সংশোধনী আইন ২০১৬ এর ধারা সমূহ বাতিল করা; পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূমি ব্যবস্থাপনা দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী প্রবর্তন করতে হবে এবং সমতলের ন্যায় জেলা প্রশাসকগণকে ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তির অধিকার দেয়া; কমিশন কর্তৃক ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তির কারণে কোন ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হলে তাকে পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকারি খাসজমিতে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা; পার্বত্য চট্টগ্রামে ‘তথাকথিত’ রীতি, প্রথা ও পদ্ধতির পরিবর্তে দেশে বিদ্যমান ভূমি আইন অনুসারে ভূমি ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম পরিচালনা করা; বাংলাদেশ সরকারের আদেশ অনুযায়ী জেলা প্রশাসক কর্তৃক বন্দোবস্তীকৃত অথবা কবুলিয়তপ্রাপ্ত মালিকানা থেকে কাউকে উচ্ছেদ করা যাবে না।