ওমর ফারুক সুমন, বাঘাইছড়ি।
রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চলছে শিক্ষার্থীদের কোভিট -১৯ টিকা দান কর্মসূচী। উপজেলার আট ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার মিলে মাধ্যমিক, নিম্ন মাধ্যমিক, দুইটি দাখিল মাদ্রাসা এবং দুইটি কলেজসহ মোট ৩১ টি প্রতিষ্ঠানের ৮ হাজার ছাত্র ছাত্রীদের টিকার আওতায় আনার লক্ষে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নুরমোহাম্মদ জানান গত ১৬ জানুয়ারী সকাল থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছাত্র ছাত্রীদের টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়।
২৩ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত প্রথম ডোজ টিকার আওতায় এসেছে ৭৬৬৪ জন শিক্ষার্থী। দ্বিতীয় ডোজ টিকা পেয়েছে ৫১৪৮ জন শিক্ষার্থী। এছাড়া বয়স ১২ বছর পূর্ণ না হওয়ায় ৩১ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আরো প্রায় ১ হাজার শিক্ষার্থীকে টিকার আওতায় আনা সম্ভব হচ্ছে না।
বুধবার সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখাযায় উপজেলার আমতলী ও দূর্গম সাজেক ইউনিয়নের কয়েকশত শিক্ষার্থী কড়া রোদে দীর্ঘলাইনে দাড়িয়ে যথারিত যুদ্ধ করে টিকা নিচ্ছে।
এছাড়াও দীর্ঘ পাহাড়ি সড়কে চাঁদের গাড়ী (জীপ) এ করে বাদর ঝুলার মত করে ৮ থেকে ১০ টি গাড়ীতে করে টিকাকেন্দ্রে আসছে ছাত্র ছাত্রীরা । একেকটি গাড়ীতে ২০ জনের আসন থাকলেও ৩০ থেকে ৩৫ জন ছাত্র ছাত্রী গাদাগাদি করে ও ছাদ ও পেছনে ঝুলে বসছে।
এতে পাহাড়ি সড়কে দূর্গটনার ঝুঁকির সাথে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিও রয়েছে। দূরদূরান্ত থেকে টিকা নিতে আসা এসব ছাত্র ছাত্রীদের লাইনে দাড়িয়ে টিকা নিতে সাহায্য করছে উপজেলা রেডক্রিসেন্টের সদস্যরা।
কাচালং মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও রেডক্রিসেন্ট সদস্য আহসান উল্লাহ (তাহসিন) জানায় টিকা নিতে আসা শিক্ষার্থীদের অনেকই লাইনে দাড়িয়ে থেকে অস্থির হয়ে রেডক্রিসেন্ট সদস্যদের সাথে খারাপ আচরন করে তার পরও রেডক্রিসেন্টের সকল সদস্য নিরলস ভাবে টিকা নিতে আসা শিক্ষার্থীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছে।
টিকা কেন্দ্রের দায়িত্ব প্রাপ্ত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার(হোমিওপ্যাথিক) ডাঃ রনি আলম জানান একসাথে এতো শিক্ষার্থীদের চাপ সামলাতে তারা হিমশিম খাচ্ছে তার পরেও সুন্দর পরিবেশে সকল শিক্ষার্থী যাহাতে টিকা নিতে পারে সেইদিকে কড়া নজরদারি রয়েছে।
উপজেলা আওয়ামিলীগের সাধারণ সম্পাদক গিয়াসউদ্দিন মামুন বলেন স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে ১৪৪ কিলোমিটার দূরে রাঙ্গামাটি জেলা সদরে গিয়ে টিকা নিতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছিলো তাই শিক্ষক ও অভিভাবক মহল কিছুটা হতাশ হয়েছিলো।
পরে রাঙামাটির সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার ও জেলাপরিষদ চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরী মারমাসহ উপজেলা আওয়ামিলীগের উদ্যোগে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মিলনায়তনে প্রায় দুই লক্ষ টাকা ব্যায়ে এসি ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি বসিয়ে টিকা সংরক্ষণের উপযোগী করে টিকা কার্যক্রম শুরু করে ১৬ জানুয়ারী ।
এছাড়া রেডক্রিসেন্ট সদস্য ও অন্যান্য সকলের দুপুরের খাবারের ব্যাবস্থা করেছে উপজেলা আওয়ামিলীগ।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন বয়স জনিত কারণে প্রায় ১ হাজার শিক্ষার্থী টিকা নিতে পারছে না তাছাড়া দূর্গম অঞ্চলের ছাত্রছাত্রীদের টিকা নিতে কিছুটা কষ্ট পোহাতে হচ্ছে এটা সত্যি তারপরও উপজেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের আন্তরিকতার কোন ঘাটতি নেই।