রাজস্হলীর সাংবাদিক চাউচিং মারমা‘র মৃত্যুতে
কবি ও সাংবাদিক হাফিজ রশিদ খান নিজের ফেসবুক পেজে আজ সন্ধ্যায় দেয়া পোস্ট হুবহু তুলে ধরা হলোঃ
‘সাংবাদিকবন্ধু চাউচিং মারমার জন্যে শোকস্তোত্র’
বড় বেদনার সঙ্গে জানলাম, আমাদের দীর্ঘদিনের সাংবাদিকবন্ধু রাঙামাটির রাজস্থলীর চাউচিং মারমা গতরাতে (২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২) হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন।
এ যে কত বিষাদময় ঘটনা, বলে বা লিখে প্রকাশ করা সম্ভব নয় । তার অতীব সরল, বন্ধুবৎসল আচরণ আমাকে যেন ঘিরে আছে প্রতিদিনের আলো-হাওয়ার মতো। তার অন্তর্ময় ডাকে গিয়েছিলাম ওদের গাইন্দ্যা পাড়ার বাড়িতে।
পোস্টটি পড়তে নিচের লিংকে ক্লিক করুন-
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=964566034181410&id=100018840669591
গাইন্দ্যা : এই মারমা শব্দটার অর্থ হলুদ বুনোফুল, এ কথা জানিয়ে চাউচিং-এর সেই বিস্তারিত হাসি মনের ভেতরে খুব গেঁথে আছে। তার বাড়ির সামনের জায়গাটা ‘উঠোন’ নামে পরিচিত হলেও সেখানে ছিল বৃক্ষছায়ার আল্পনা।
তারই এক কোণে আমি, চাউ, কবি হাবিব আহসান, গল্পকার সৈয়দ মনজুর মোরশেদ বসে ওর পাহাড়িয়া গল্পে বুঁদ হয়েছিলাম। আরেকবার কবি সরকার আমিন, কবি জয়দুল হোসেন, সমুজ্জ্বল সুবাতাস-এর অন্যতম সম্পাদক প্রয়াত চৌধুরী বাবুল বড়ুয়াসহ জুমের মরশুমে ওদের পুরোনো বাড়িতে, পাহাড়ের চুড়োয় রাত কাটিয়েছিলাম। সে এক ‘গভীর নিশীথিনী’ ছিল।
জোসনাঝরা, দুনিয়ায় বিরলতম ওই রাত হারিয়ে গেল চাউচিং-এর সঙ্গে! কিন্তু আমি জানি, চাউ-এর উজ্জ্বল আত্মা জেগে রবে আমার মনের মণিকোঠায় ভালোবাসার শুভ্র পুণ্ডরীক হয়ে।
সে সময়ে ওকে নিয়ে লেখা একটি কবিতার ক’টি পঙক্তি মনে পড়ছে :
‘পূর্ণিমা রাতে অনেক কথা গন্ধভরা রাজস্থলীর পাহাড়চুড়ো
আগের চেয়ে যদিও তুই
হয়ে গেছিস একটু বুড়ো
মাটির ভাঁজে-ভাঁজে ক্ষয়
দূরাগত পর্যটকের ভয়
শহরখাঁচা রেখে এলাম কাছে
লোকে বলে বৃষ্টিদিনে চারপাশে তোর ধ্বংসলীলা নাচে
ধস-কবলে পড়ে শেষে পরান যাবে নাকি
অথচ তোর সবুজপোশাক পরবো বলে স্বপ্ন নিয়ে থাকি…
(আংশিক, পৃ. ১১০, ‘নির্বাচিত কবিতা : আদিবাসীপর্ব’)
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২ চট্টগ্রাম।