ঝুলন দত্ত, কাপ্তাই প্রতিনিধি।
কাপ্তাই উপজেলার ৪ নং কাপ্তাই ইউনিয়ন এর দূর্গম হরিণছড়া পাংখোয়া পাড়ার মেয়ে লিলি পাংখোয়া। কাপ্তাই উপজেলার জেটিঘাট হতে প্রায় ১৫ কিঃ মিঃ নৌপথে পাড়ি দিয়ে হরিনছড়া আমতলী পাড়া পাড় হয়ে আরোও ৩ কিঃ মিঃ উচুঁ নীচুঁ পাহাড় পাড় হয়ে পাংখোয়া পাড়ায় পৌঁছাতে হয়।
সমুদ্রপৃষ্ঠ হতে ১১ শত ফুট উপরে এই পাড়ায় নেই কোন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়। শুধুমাত্র নিচের পাড়ায় আছে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ৫ম শ্রেণী পাস করে তাই বাধ্য হয়ে মাধ্যমিক শ্রেণীতে ভর্তির জন্য এই পাড়ার শিক্ষার্থীদেরকে কাপ্তাই উপজেলা সদর কিংবা চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, বান্দরবান জেলা শহরে গিয়ে ভর্তি হতে হয়। তাদের একজন লিলি পাংখোয়া।
এবছর প্রকাশিত এসএসসি পরীক্ষায় সেই কাপ্তাই উপজেলার কেপিএম স্কুল হতে গোল্ডেন জিপিএ – ৫ অর্জন করেছে।
তার পিতা-লালময়লিয়ান পাংখোয়। ছোটখাটো আম এবং ফলজাতীয় বাগান করে ৩ মেয়ের পড়ালেখা খরচ চালান তিনি। ৩ মেয়ে মধ্যে লিলি সবার বড়। তাঁর আর এক বোন জাস্টিন পাংখোয়া, কর্ণফুলী পেপার মিলস হাইস্কুলে ২০২২ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী আর সবার ছোট এলিজাবেথ পাংখোয়া, সে চন্দ্রঘোনা রাইজিং সান স্কুল এণ্ড কলেজে ৫ম শ্রেণীতে পড়ে। বলতে গেলে একটি দরিদ্র পরিবারের জন্ম তাদের।
সম্প্রতি বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের তদারকি এবং উঠান বৈঠককে অংশ নিতে কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনতাসির জাহান যান সেই পাংখোয়া পাড়ায়।
সেইসময় তিনি লিলি পাংখোয়ার সাফল্যের কথা শুনেন এবং তাঁকে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষায় পড়তে সহায়তায় আশ্বাস দেন।
তারই প্রেক্ষিতে রবিবার সকালে কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনতাসির জাহান তাঁর দপ্তরে লিলি পাংখোয়াকে ডেকে নিয়ে এসে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।
ইউএনও মুনতাসির জাহান জানান, আমি কথা দিয়েছিলাম যে কোনো সময় যে কোনো সহযোগিতায় তাঁর পাশে থাকবো। ঢাকার ওয়াইডাব্লিউসিএ উচ্চ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে সে। সকালে আসছে আমার কাছে সমস্যা নিয়ে। বই কেনার জন্য উপজেলা প্রশাসন থেকে তাকে সহায়তা করেছি এবং ভবিষ্যতেও তাঁকে সহায়তা করবো।
লিলি পাংখোয়া জানান, আমার ইচ্ছা আমি যত সমস্যা থাকুক উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ হতে পিছপা হবো না। তাই আজ কাপ্তাইয়ের ইউএনও স্যারের দপ্তরে আসলাম। স্যার সহযোগিতা করেছে। তাঁর প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা জানাই।