মঙ্গলবার , ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ | ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. জাতীয়
  2. রাঙামাটি
  3. খাগড়াছড়ি
  4. বান্দরবান
  5. পর্যটন
  6. এক্সক্লুসিভ
  7. রাজনীতি
  8. অর্থনীতি
  9. এনজিও
  10. উন্নয়ন খবর
  11. আইন ও অপরাধ
  12. ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী
  13. চাকরির খবর-দরপত্র বিজ্ঞপ্তি
  14. অন্যান্য
  15. কৃষি ও প্রকৃতি
  16. প্রযুক্তি বিশ্ব
  17. ক্রীড়া ও সংস্কৃতি
  18. শিক্ষাঙ্গন
  19. লাইফ স্টাইল
  20. সাহিত্য
  21. খোলা জানালা

কাপ্তাইয়ের জয়িতা নারী মাসাংফ্রু খিয়াং: প্রতিকূলতাই তার সাফল্যের প্রেরণা

প্রতিবেদক
ঝুলন দত্ত, কাপ্তাই, রাঙামাটি 
ডিসেম্বর ১০, ২০২৪ ৬:২৪ অপরাহ্ণ

রাঙামাটির কাপ্তাইয়ের সফল জননী হিসাবে জয়িতা নারীর সম্মাননা পেলেন কাপ্তাই উপজেলার ১ নং চন্দ্রঘোনা ইউনিয়ন এর ৯ নং ওয়ার্ডের মিশন এলাকার বাসিন্দা মাসাংফ্রু খিয়াং।

আর্ন্তজাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে কাপ্তাই উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উদ্যোগে সোমবার (৯ ডিসেম্বর) উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষ কিন্নরী তে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভা ও জয়িতা নারী সম্মাননা অনুষ্ঠানে তাঁকে সফল জননী হিসাবে জয়িতা নারীর সম্মাননা তুলে দেন কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিসান বিন মাজেদ। সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের মাধ্যমে কীভাবে অসম্ভবকেও সম্ভব করা যায় মাসাংফ্রু খিয়াং তাদের একজন।

এসময় সম্মাননা শেষে এই প্রতিবেদকের সাথে কথা হয় সফল জয়িতা নারী মাসাংফ্রু খিয়াং এর সাথে। তিনি তাঁর জীবনের চড়াই উৎরাই এর কাহিনী শুনালেন এই প্রতিবেদককে।

মাসাংফ্রু খিয়াং বলেন, ১৯৫৭ সালের ১১ সেপ্টেম্বর আমি রাঙামাটি জেলার কাপ্তাই উপজেলার রাইখালী ইউনিয়ন এর বড়খোলা পাড়ায় জন্মগ্রহণ করি। জন্মের কয়েক বছরের মধ্যেই আমার বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ ঘটে। এরপর আমার আশ্রয় হয় দাদির বাড়িতে। সেখানেই আমি বেড়ে ওঠি। কিন্তু শৈশবের এই সময়টি আমার জন্য সহজ ছিল না। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে, আমার দাদি আমাকে নিয়ে গভীর উদ্বেগের মধ্যে পড়েন। পরিবার ও প্রতিবেশীদের পরামর্শ ছিল—নাতনিকে হয় দূরে কোথাও পাঠিয়ে দাও, না হয় বিয়ে দিয়ে দাও।

ঠিক এই সময়ে বাদল খিয়াং নামে ২২ বছরের এক যুবক আমাকে বিয়ে করতে সম্মত হন। তখন আমার বয়স মাত্র ১৪। বাদল খিয়াং তখন রাঙ্গুনিয়া উপজেলার কোদালা চা বাগানে টুকটাক চা শ্রমিকদের হিসাব সহকারী হিসাবে স্বল্প বেতনে চাকরি করতো। বাদলের মা চা বাগানে ধাত্রী হিসাবে কাজ করতেন। তবে তিনি এই বিয়েকে সহজভাবে মেনে নিতে পারেননি। অভাবের সংসারে দুইজনের খাবার জোগাতেই কষ্ট হচ্ছিল, তার উপর নতুন একজন, যিনি বাড়ি থেকে রান্না বা হাতের কাজ কিছুই শিখে আসেননি। সংসার চালানোর দায়িত্ব শুরুতেই এসে পড়ে আমার কাঁধে। পরে বাদল খিয়াং কাপ্তাই উপজেলার চন্দ্রঘোনা খ্রিস্টিয়ান হাসপাতালে ক্যাশিয়ার হিসেবে চাকরি নেন, মাত্র ৩৫৬ টাকা বেতনে। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, বেতনের টাকা স্ত্রীর হাতে তুলে দেবেন, কিন্তু সংসার চালানো পুরোপুরি আমার দায়িত্ব। এই নতুন চ্যালেঞ্চ আমি হাসিমুখে গ্রহণ করি। শুরু করি গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি পালন। গরুর দুধ ও হাঁস-মুরগির ডিম বিক্রি করেই সংসার চালাতে থাকি। এই সামান্য আয়ের মাধ্যমেই আমি চন্দ্রঘোনা মিশন এলাকায় নিজের জায়গা কিনি , দুই ছেলের মেডিকেল পড়াশোনার খরচ এবং মেয়ের বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনার ব্যয় নির্বাহ করি। ছেলেমেয়েদের অভাব কখনো বুঝতে দিই নাই।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জয়িতা নারীর সম্মাননা পাওয়া মাসাংফ্রু খিয়াং এর ছোট ছেলে চন্দ্রঘোনা খ্রীস্টিয়ান হাসপাতালের পরিচালক ডা: প্রবীর খিয়াং। এসময় তিনি বলেন, আমার মমতাময়ী মা পারিপার্শ্বিক কারনে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করলেও তিনি ছেলে মেয়েদের পড়াশোনার দায়িত্ব নিজের হাতে তুলে নেন। আমার বড় ভাই ডা: সুবীর খিয়াং চট্টগ্রাম মেডিক্যালে ভর্তি হলে তখন তিনি তাঁর পাশে ছিলেন এবং আমি যখন সিলেট মেডিক্যালে ভর্তি হই তখন মা আমার পাশে ছিলেন। এমনকি আমার বোন ফ্লোরেন্স তিসা খিয়াং এর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির দায়িত্বও তিনিই পালন করেন। দীর্ঘ সংগ্রামের শেষে, যখন তিনি নাতি-নাতনিদের সাথে থাকার জন্য চট্টগ্রামে চলে আসেন, সেদিন তার শেষ গরুটি বিক্রি করতে হয়। চোখের জলে তিনি বিদায় দেন সেই গরুটিকে, যা আমাদের আর্থিক উপার্জনের শেষ ভরসা ছিল।

কাপ্তাই উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রিনি চাকমা বলেন, মিসেস মাসাংফ্রু খিয়াং একজন সংগ্রামী নারীর চিত্র। শত প্রতিকুলতার মাঝেও তিনি তাঁর ৩ টি সন্তানকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তাঁর বড় ছেলে ডা: সুবীর খিয়াং চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজে ১৯৯২ সালে এমবিবিএস এ সুযোগ পান। পাস করার পর প্রথমে তিনি ডেভেলপমেন্ট সাইডে বিভিন্ন দেশি বিদেশি সংস্থায় কর্মরত ছিলেন, সর্বশেষ হিড বাংলাদেশ অপারেশন ডাইরেক্টর হিসেবে কর্মরত ছিলেন এবং এই বছর সে চাকুরি ছেড়ে হেলথি লাইফ ইন্টারন্যাশনাল এ অ্যাডভাইসার হিসেবে যোগদান করেন । তাঁর মেজ ছেলে ডা: প্রবীর খিয়াং ১৯৯৩ সালে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস সুযোগ পান। এমবিবিএস পাস করার পর তিনি ২০০৭ সালে ডিপ্লোমা ইন কমিউনিটি অপথ্যালমলজি সি ই আই টি সি, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস্ করেন। এরপর তিনি ২০০২ সালে চন্দ্রঘোনা খ্রিস্টিয়ান হাসপাতালে মেডিক্যাল অফিসার হিসাবে যোগদান করেন, পরবর্তীতে ডেপুটি ডাইরেক্টর, ভারপ্রাপ্ত ডিরেক্টর এবং ২০১৯ সাল থেকে একই হাসপাতালের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

রিনি চাকমা আরোও জানান, তাঁর ছোট মেয়ে ফ্লোরেন্স তিসা খিয়াং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংলিশে অনার্স ও প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স সম্পন্ন করে বর্তমানে স্বামীর সাথে ইংল্যান্ডে বসবাস করছেন।

মিসেস মাসাংফ্রু খিয়াং তার জীবন দিয়ে প্রমাণ করেছেন, সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের মাধ্যমে কীভাবে অসম্ভবকেও সম্ভব করা যায়। তিনি শুধুই একজন মা বা স্ত্রী নন; তিনি এক শক্তিমান নারীর প্রতীক, যিনি তার সন্তানদের জন্য প্রতিটি কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছেন সাহস ও মমতা দিয়ে।

সর্বশেষ - আইন ও অপরাধ

আপনার জন্য নির্বাচিত

বাঙ্গালহালিয়াতে সড়ক দূর্ঘটনায় এক শিক্ষার্থী নিহত: আহত ৫

চিৎমরম ইসলামীয়া স: প্রা: বিদ‍্যালয়ে এসএমসি সভাপতি হলেন রফিক

কাপ্তাই সেনা জোনের উদ্যোগে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান

রামগড়ে অজ্ঞাত বৃদ্ধের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

কাপ্তাইয়ের চন্দ্রঘোনায় ৮২২ জন পেলেন টিসিবির পণ্য

বাঘাইছড়িতে কাদেরীয়া মুনিরিয়া মাদ্রাসায় অভিভাবক সমাবেশ অনুষ্ঠিত

তেলসহ নিত্যপণ্যর দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে রাঙামাটিতে বিএনপির বিক্ষোভ

রাঙামাটি জেলা ছাত্রলীগের নব কমিটির মতবিনিময় ও পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত

কাপ্তাইয়ের উন্নয়ন বোর্ডের বিভিন্ন প্রকল্প উদ্বোধন করলেন পার্বত্য মন্ত্রী

কাপ্তাইয়ে জোন কমান্ডার’স স্কলারশিপে অংশ নিল ৫৪৮ শিক্ষার্থী

%d bloggers like this: