তিন পার্বত্য জেলার একমাত্র উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। রাঙামাটি শহর থেকে একটু দূরে সদর উপজেলার ঝগড়াবিল নামক এলাকায় অবস্থিত এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি। বিগত ২০১৪ সালে অনেক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি ওখানে প্রতিষ্ঠালাভ করে। ২০১৫ সালে একটি একাডেমিক ভবন নির্মাণের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম চালু করা হয়। হাটি হাটি পা পা করে আজ পূর্ণাঙ্গ রুপে একটি পরিপূর্ণ বিশ্ব বিদ্যালয়ে রুপান্তরিত করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালটি প্রতিষ্ঠাকালে চরম বিরোধিতা করেছিল এই এলাকার উপজাতি সম্প্রদায়রা ও অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা। কিন্তু এখনো থেমে নেই তাদের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ।
তারই ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) দিবাগত রাত পৌনে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে অবৈধ অস্ত্রধারীরা ৭-৮ জন সন্ত্রাসী প্রবেশ করে। ঠিকাদারের কাছে চাঁদার দাবিতে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পসে ভারী অস্ত্র নিয়ে হানা দেয়। রাবিপ্রবির সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে স্পষ্ট করে সন্ত্রাসীদের কাঁদে সজ্জিত আধুনিক অস্ত্র দেখা।
এই খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়দের মধ্যে আতংক বিরাজ করছে। ওই এলাকায় নেওয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। তবে স্থানীয়দের দাবি প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আশপাশে জরুরি ভিত্তিতে একটি সেনাবাহিনীর ক্যাম্প স্থাপন করার দাবি তুলেছেন তারা।
জানাগেছে, সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা চাঁদার দাবিতে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে শ্রমিকদের কাজ বন্ধ রাখতে নিষেধ করে এবং প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করে। এ সময় সন্ত্রাসীরা শ্রমিকদের কাছ থেকে ১৫টি দামী মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সন্ত্রাসীদের এমন কর্মকান্ডে কোতোয়ালি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এদিকে এবিষয়ে কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছেন পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি)র নেতৃবৃন্দরা। তারা বলেন, রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সশস্ত্র অবস্থায় ঢুকে নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখতে শ্রমিকদের প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার মাধ্যমে পার্বত্য অঞ্চলের শান্তি ও সম্প্রীতি নষ্ট করার দৃষ্টান্ত দেখালো পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা।
এই সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হাতে পার্বত্য অঞ্চলে কেউ নিরাপদ নয়, পাহাড়ের শান্তি-সম্প্রীতি ও আস্থা-বিশ্বাস ঠিক রাখতে হলে সকল জাতিগোষ্ঠীকে এগিয়ে আসতে হবে, সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের কোন জাতিগোষ্ঠী যাতে প্রশ্রয় না দেয় সেজন্য সকলের সজাগ থাকতে হবে। সেই সাথে রাবিপ্রবিতে সশস্ত্র মহড়া দেওয়া প্রত্যেকটি পাহাড়ি সন্ত্রাসীকে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছে পিসিসিপি রাঙামাটি জেলা শাখা।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড.মোঃ আতিয়ার রহমান বলেন, এব্যাপারে কোতোয়ালি থানার আমি একটি অভিযোগ দায়ের করেছি। এধরনের কার্যকলা অপ্রত্যাশিত বলে আমি মনে করি। একটি বিশ্বদ্যালয়ে এভাবে এসে অস্ত্র শস্ত্র নিয়ে হানা দেওয়া অত্যন্ত বিপদজনক ও নেক্কার জনক। আমি এঘটনায় সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করি। সাথে সাথে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা চাই।