রাঙামাটির জুরাছড়ি উপজেলার সদর ইউনিয়নের বালুখালী গ্রামের লক্ষী চন্দ্র চাকমা (৬০)। শারিরিক প্রতিবন্ধী সংসারে স্ত্রী আর এক সন্তান। সে সন্তান অনার্সে পড়াশুনা করছে। কাপ্তাই হ্রদের মাছ শিকার তার পেশা। শিকার করে পাওয়া মাছ বিক্রি করে সংসার চলে লক্ষী চন্দ্রের। লক্ষীর নেই জমি। নেই টেকসই কোন ঘর। কুড়ে ঘরে আকাশে বৃষ্টির মেঘ উঠলে আতংক বাড়ে। কারণ ঘরের শনের ছাউনী ছুয়ে পানি পড়ে ঘরের ভিতরে।
লক্ষী চন্দ্রের এ দুশ্চিন্তা দুর করেছে প্রধানমন্ত্রীর একটি ঘর। সম্প্রতি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বুঝে পেয়েছেন পাকা ঘর। পেয়েছেন ঘরের জমির দলিলও।
লক্ষী চন্দ্র বলেন, আমি ভাবতাম কুড়ে ঘরে আমার জীবন চলে যাবে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী দেওয়া ঘর আমার কষ্টের সেই ভাবনা দুর করেছে। আমি এখন সুখে আছি। বাড়ি নিয়ে আমার আর কোন দু:চিন্তা নেই। বৃষ্টির পানি এখন আর ঘরের ভিতরে পড়ে না। দিনের শত কষ্ট শেষে রাতে শান্তিতে ঘুমাতে পারি।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায় প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপে রাঙামাটিতে ১৫১৭ টি ঘর পেয়েছে ভুমিও ঘরহীন পরিবার। জেলায় মোট ২৯০৭টি ভুমিহীন পরিবারের তালিকা করেছে জেলা প্রশাসন। এদের মধ্যে থেকে জুরাছড়ি উপজেলায় ১০টি পরিবার ঘর পেয়েছে।
জুরাছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান সুরেশ কুমার চাকমা বলেন, উপজেলার সাথে জেলা শহরের যোগাযোগ ব্যবস্থা দুর্গম হওয়ায় উপজেলায় সব ইউনিয়নে ভুমিহীন পরিবার থাকা সত্বেও প্রধানমন্ত্রীর ঘর আমরা নিতে পারছি না। কারণ ঘরের জন্য সরকারী যে বরাদ্ধ এ বরাদ্ধ দিয়ে জুরাছড়িতে ঘর নির্মাণ করা সম্ভব নয়। তাই আমরা অনুরোধ করব পরবর্তী ধাপে প্রকল্প তৈরির সময় যেন পাহাড়ি এলাকার প্রতি বিশেষ বিবেচনা করে বরাদ্ধ বাড়ানো হয়। প্রথম ধাপে আমরা শুধু জুরাছড়ি সদর ইউনিয়ের জন্য বাড়ি নিতে পেরছি। বাকী দুমদুম্যা, মৈদং ইউনিয়নের জন্য ঘর নিতে পারিনি।
রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমান বলেন, দুর্গমতা আর বরাদ্ধ কম হওয়ার কারণে জেলার বাঘাইছড়ির সাজেক, জুরাছড়ির মৈদং, দুমদুম্যা, বরকলের বড় হরিণা সহ কয়েকটি ইউনিয়নে আমরা ঘর নিতে পারিনি। পরবর্তী ধাপে প্রকল্প তৈরির সময় রাঙামাটিকে যেন বিশেষ অঞ্চল হিসেবে বিবেচনায় বরাদ্ধ বাড়ানো হয় সেজন্য সুপারিশ করেছি।