সাফ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়ন জয়ী দলের সদস্য পাহাড়ের ৫ কন্যা ঋতুপর্না চাকমা, রূপনা চাকমা, আনুচিং মারমা, আনাই মারমা ও মনিকা চাকমাকে সংবর্ধনা দেবে রাঙামাটি জেলা পরিষদ। পাশাপাশি এ ফুটবলারদের পথ প্রদর্শক শিক্ষক বীরসেন চাকমা এবং মেয়েদের কোচ শান্তি মনি চাকমাকেও সংবর্ধনা দেবে জেলা পরিষদ।
রাঙামাটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন জেলা পরিষদ ও জেলা ক্রীড়া সংস্থা যৌথভাবে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান আয়োজন করবে।
রাঙামাটি জেলা পরিষদের সদস্য প্রবর্তক চাকমা বলেন, ৫ কন্যার মধ্যে দুজন রাঙামাটির বাসিন্দা। বাকী তিনজন খাগড়াছড়ি জেলার বাসিন্দা হলেও এদের ফুটবল হাতেখড়ি রাঙামাটিতে। এরা প্রত্যকে ঘাগড়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে পড়াশুনা ও খেলাধুলা করে এ পর্যন্ত গেছেন। তাই আমরা কাউকে এ সংবর্ধনা থেকে বাদ দিচ্ছি না। সবাই আমাদের মেয়ে।
তিনি বলেন, আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর বিকালে ফুটবলারদের ঘাগড়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে খোলা জীপে মোটর ও গাড়ি শোভাযাত্রা করে রাঙামাটিতে আনা হবে।
তাদের রাঙামাটি শহরের দোয়েল চত্বর ঘুরে চিং হ্লা মং মারী স্টেডিয়ামে সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়েছে। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ফুটবলারদের ক্রেস্ট প্রদানের পাশাপাশি প্রত্যককে ২ লাখ টাকা উপহার দেওয়া হবে। অন্যদিকে বীরসেন চাকমা ও শান্তি মনি চাকমাকে ক্রেস্ট প্রদানের পাশাপাশি প্রত্যককে নগদ অর্থ উপহার দেওয়া হবে।
রাঙামাটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরী বলেন, আমাদের মেয়েরা সাফ জয়ে মাধ্যমে আমাদের নাম উজ্জল করেছে। আমরা তাদের সম্মানিত করতে চাই। আগামীতে পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে যেন আরো এ ধরণের প্রতিভাবান খেলোয়াড় গড়ে উঠে সেজন্য জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে যা যা করণীয় তা অব্যাহত রাখা হবে।
প্রসংগত সম্প্রতি নেপালে শেষ হওয়া সাফ মহিলা ফুটবল চ্যাম্পিয়নশীপে শিরোপাজয়ী বাংলাদেশ দলের মধ্য সেরা গোল রক্ষক রূপনার বাড়ি রাঙামাটির নানিয়াচর উপজেলার ঘিলাছড়ি ইউনিয়নের বুইয়ো আদাম গ্রামে, ঋতুপর্নার বাড়ি কাউখালী উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের মগাছড়িতে। মিডফিল্ডার মনিকা চাকমার বাড়ি খাগড়াছড়ি জেলার দুগর্ম লক্ষীছড়ির সুমন্ত পাড়াতে। অন্য দই বোন আনুচিং ও আনাই মারমার বাড়ি খাগড়াছড়ির সাতভাইয়া পাড়ায়।
২০১১ সালে প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যায়ের জাতীয় পর্যায়ে বঙ্গমাতা ফুটবল প্রতিযোগীতায় অংশ নিতে তৎকালীন মগাছড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বীরসেন চাকমা এসব প্রতিভাবান ক্ষুদের ফুটবলারদে ঘাগড়ায় এনে ফুটবল অনুশীলন ক্যাম্প করেন। এ ক্যাম্পে মেয়েদের ফুটবল খেলা শেখান ঘাগড়ার শান্তি মনি চাকমা।এ ক্যাম্পের সকল সদস্যদের ঘাগড়াসহ পুরো উপজেলার মানুষ যে যেভাবে পারেন সহযোগীতার হাত বাড়ান।
মগাছড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মনিকাদের দলটি ২০১১ সালে বঙ্গমাতার জাতীয় পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হয়। এ থেকে শুরু হওয়া ফুটবল দলটি এখনো ফুটবল প্রশিক্ষণ চালিয়ে যাচ্ছে। ঘাগড়া বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের হোস্টেলে রেখে এদের বিনামূল্যে পড়াশুনার ব্যবস্থা করেছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। হোস্টেলে থাকা ফুটবলারদের রাঙামাটি জেলা প্রশাসন খাবার সাপোর্ট দেওয়ার পাশাপাশি খেলাধুলার সামগ্রী দিয়ে যাচ্ছে। প্রশাসনের পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড, রাঙামাটি জেলা পরিষদ, সেনাবাহিনী সহযোগীতা করে যাচ্ছে। এ দল থেকে ভবিষ্যতে আরো খেলোয়াড় জাতীয় পর্যায়ে ডাক পড়তে পারে বিশ্বাস কোচ শান্তি মনি চাকমার।