শুক্রবার , ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২ | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. জাতীয়
  2. রাঙামাটি
  3. খাগড়াছড়ি
  4. বান্দরবান
  5. পর্যটন
  6. এক্সক্লুসিভ
  7. রাজনীতি
  8. অর্থনীতি
  9. এনজিও
  10. উন্নয়ন খবর
  11. আইন ও অপরাধ
  12. ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী
  13. চাকরির খবর-দরপত্র বিজ্ঞপ্তি
  14. অন্যান্য
  15. কৃষি ও প্রকৃতি
  16. প্রযুক্তি বিশ্ব
  17. ক্রীড়া ও সংস্কৃতি
  18. শিক্ষাঙ্গন
  19. লাইফ স্টাইল
  20. সাহিত্য
  21. খোলা জানালা

নিজস্বতা সংকটে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করেছে রাঙামাটি জেলা পরিষদ

প্রতিবেদক
হিমেল চাকমা, রাঙামাটি
সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২২ ৮:২১ পূর্বাহ্ণ

রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ কমিটিতে জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করতে নির্দেশনা আসার পর লিখিত পরীক্ষা স্থগিত করেছে জেলা পরিষদ। এ পরীক্ষা গত ২৩ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবার কথা ছিল।

পরীক্ষার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হলেও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের একটি চিঠির কারণে স্থগিত করা হয় পরীক্ষাটি। এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে নানান কৌতুহল জন্ম নেয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানো হয় একের পর এক গুজব।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রাঙামাটি জেলা পরিষদ আইন ১৯৮৯ এর ১৯ নং আইনের ৬৯ নং ধারা অনুযায়ী পরিষদের কাছে হস্তান্তরিত বিভাগের ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী নিয়োগের জন্য ২০০০ সালে ৮ নং প্রবিধান মালা প্রনয়ন হয়।
প্রবিধান আলোকে রাঙামাটি জেলা পরিষদ গত ২৯ মে জেলার ১০ উপজেলায় ৪৬২টি প্রাথমিক শিক্ষকের পদে দরখাস্ত আহবান করে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। আবেদন গ্রহণ শেষে গত ২৩ সেপ্টেম্বর লিখিত পরীক্ষার দিন ধার্য করে।

এ বিধিমালায় ৭ নম্বর ধারা মতে নিয়োগ ও বাছাই কমিটিতে চেয়ারম্যান সভাপতি, সংশ্লিষ্ট বিভাগের বিষয় ভিত্তিক কমিটির আহবায়ক সদস্য,  সদস্য হবেন পরিষদের দুইজন সদস্য (একজন উপজাতি এবং একজন অউপজাতি এরা চেয়ারম্যান কর্তৃক নিযুক্ত হবেন), মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা সদস্য, হস্তান্তরিত বিভাগের প্রধান সদস্য সচিব। এ ধারার ৩ নং উপধারায় উল্লেখ আছে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রয়োজন মনে করলে এক বা একাধিক বিশেষজ্ঞ সদস্য অর্ন্তভুক্ত করতে পারবে। তবে এ সংখ্যা ৩ এর অধিক হবে না।

এর আলোকে জেলা পরিষদ পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও পার্বত্য মন্ত্রনালয়ের প্রতিনিধি নিয়োগ করে।

পরিষদের চেয়ারম্যান প্রতিনিধি চেয়ে পার্বত্য মন্ত্রনালয়ে চিঠি পাঠালে গত ১৯ সেপ্টেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের উপ সচিব সজল কান্তি বনিক চেয়ারম্যানকে নিয়োগ ও বাছাই কমিটিতে জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি অর্ন্তভুক্ত করার নির্দেশ দিয়ে একটি চিঠি দেন। এ চিঠি পাওয়ার পরই জেলা পরিষদ পরীক্ষা স্থগিত করে।

চিঠিতে বলা হয়, সম্প্রতি বান্দরবান জেলা পরিষদ প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার বাছাই ও নিয়োগ কমিটিতে জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি অর্ন্তভুক্ত করে নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে। এতে কোন অসুবিধা হয়নি। এক্ষেত্রে রাঙামাটি জেলা পরিষদের নিয়োগ প্রবিধানমালার আওতায় নিয়োগ কমিটিও একই রকম হওয়া বাঞ্ছনীয়। এ অবস্থায় রাঙামাটি জেলা পরিষদের শিক্ষক নিয়োগের বাছাই ও নিয়োগ কমিটিতে জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করে নিয়োগ কার্যক্রম সম্পাদনের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হল।

জেলা পরিষদ সূত্র জানায়, এ চিঠি পেয়ে জেলা পরিষদের সবাই ক্ষুব্ধ হন। পরিষদের একাধিক সূত্র জানায় জেলা প্রশাসকের পদ মর্যাদায় পরিষদের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা রয়েছেন। তাছাড়া পরীক্ষায় পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের প্রতিনিধি আছেন। এ অবস্থায় জেলা প্রশাসকের একজন প্রতিনিধি দেওয়া মানে পরিষদের নিজস্বতার উপর হস্তক্ষেপের সামিল। এটি জেলা পরিষদ মানতে পারছে না। সূত্রটি বলছে, মন্ত্রনালয়ের একটি চিঠিতে যদি পরিষদের নিজস্বতা হারায় তাহলে পরবর্তীতে জেলা পরিষদের নিজস্বতা বলতে কিছুই থাকবে না।

জেলা পরিষদের এক সদস্য বলেন, এটা জেলা প্রশাসকের দোষ নয়। এটা আমলাতান্ত্রিক জটিলতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। আমরা খবর নিয়ে জেনেছি পার্বত্য মন্ত্রী এ চিঠি সম্পর্কে অবগত নয়।
তিনি বলেন, জেলায় জেলা প্রশাসন সহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে কর্মকর্তা কর্মচারী নিয়োগের সময় তো জেলা পরিষদের সদস্য রাখা না রাখা নিয়ে কথা হয় না। কিন্তু জেলা পরিষদের বেলায় জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি রাখতে হবে কেন? এটা যদি করা হয় তাহলে জেলা প্রশাসনসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের নিয়োগের সময়ও জেলা পরিষদের প্রতিনিধি রাখা দরকার। শুধু পরিষদের নিয়োগের বেলায় এটি করা মানে জেলা পরিষদকে সন্দেহের চোখে দেখা।
রাঙামাটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরী বলেন, মুলত পার্বত্য মন্ত্রনালয়ের চিঠি পাওয়ার পর লিখিত পরীক্ষা স্থগিত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে পরিষদ। পরিষদের কর্মচারী চাকুরী নিয়োগ প্রবিধানমালা ২০০০ এর আলোকে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করেছিল জেলা পরিষদ। এ অবস্থায় মন্ত্রনালয় থেকে ডিসির প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করতে চিঠি দেওয়া হয়। এটি প্রবিধানমালার বাইরে। নিয়োগ কমিটিতে ডিসির পদ মর্যাদায় পরিষদের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা আছেন। এ ছাড়াও পার্বত্য মন্ত্রনালয়ের প্রতিনিধি থাকছেন। এমন অবস্থায় জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধির প্রয়োজন থাকার কথা নয়।
জেলা পরিষদ তাদের আইনের বাইরে প্রবিধানের বাইরে কাজ করতে গেলে ভবিষ্যতে পরিষদ পরিচালনায় সমস্যায় তৈরি হতে পারে। এ বিষয়টি নিয়ে আমরা পার্বত্য মন্ত্রীর সাথে আলোচনা করব। আলোচনা করে পরবর্তী পরীক্ষা দিন তারিখ ঠিক করা হবে।

এ বিষয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী

বীর বাহাদুর উশৈ সিং বলেন, মন্ত্রনালয় থেকে জেলা পরিষদের চিঠি দেওয়া হয়েছে আমার জানা নেই। এবং এই চিঠির কারণে যে রাঙামাটি জেলা পরিষদ প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা স্থগিত করেছে তাও জানা নেই।
নিয়োগ কমিটিতে জেলা পরিষদ জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি নেবে কি নেবা না সেটা নির্ভর করবে জেলা পরিষদের উপর।
এ নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে নানান কথা উঠে। জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি থাকলে হয়ত এ কথা উঠবে না তাও হতে পারে। চিঠির বিষয়টি নিয়ে আমি আমার মন্ত্রনালয়ের সচিবের সাথে কথা বলব।

সর্বশেষ - আইন ও অপরাধ

%d bloggers like this: