রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার ব্যবসার প্রানকেন্দ্র কাপ্তাই ইউনিয়নের জেটিঘাট এলাকা। বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রায়ারী) বেলা ১২ টায় জেটিঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, কাপ্তাই লেকের নৌ পথ দিয়ে দূর্গম বিভিন্ন পাহাড়ী অঞ্চল বিশেষ করে কাপ্তাই ও বিলাইছড়ি উপজেলা হতে আসছে সারি সারি ফুল ঝাড়ু। নৌকা থেকে এসব ফুল ঝাড়ু গুলো সারি সারি করে উঠানো হচ্ছে জেটিঘাটে অপেক্ষাকৃত ট্রাকে। পাহাড়ের উৎপাদিত এসব ফুলের ঝাড়ুর কদর রয়েছে সারা দেশ জুড়ে। এসব ফুলের ঝাড়ু দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন ঘাঁটির প্রায় ৩০ জন শ্রমিক।
কথা হয় স্থানীয় শ্রমিক হারুন এবং হাশেম এর সাথে । তারাঁ জানান, আমরা দীর্ঘ ১০ বছর ধরে একাজের সাথে জড়িত। প্রতিবছরই তাঁরা এই মৌসুমে ফুলের ঝাড়ু পরিবহনে কাজ করে আসছেন। দৈনিক ৫শত টাকা মজুরিতে পাইকার ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে ফুলের ঝাড়ু ট্রাকে উঠানোর কাজে সহযোগিতা করেন তাঁরা সহ আরোও ৩০ জন শ্রমিক। প্রতিদিনই এই নৌ পথে ফুলঝাড়ু জেটিঘাটে আসলেও সপ্তাহের শনিবার সাপ্তাহিক হাটে বেশী ব্যস্ত থাকতে হয় তাদের। এদিন ভোর থেকে শুরু করে রাত পর্যন্ত ঝাড়ু সরবারহ কাজে ব্যস্ত সময় পাড় করেন তারা।
ফুল ঝাড়ু বিক্রয় করতে কাপ্তাই জেটিঘাটে আসা কাপ্তাইয়ের হরিনছড়ার বাসিন্দা থুইসাপ্র মারমা, অনন্ত তনচংগ্যা ও বিলাইছড়ি উপজেলার ফারুয়া ইউনিয়ন এর বিপিন তনচংগ্যা সহ বেশ কয়েকজন বিক্রেতা জানান, পাহাড়ে প্রাকৃতিকভাবে ফোটা এই ফুলের ১০ থেকে ১৫টি দিয়ে আঁটি বেঁধে ঝাড়ু বানানো হয়। সেই ঝাড়ু স্থানীয় বাজারে বিক্রি হয় ১০ থেকে ১৫ টাকায়। বেশ কয়েকবছর ধরে তারা এই ফুল ঝাড়ু বিক্রয় করে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করে আসছেন।
চট্টগ্রাম শহরের বিবির হাট হতে আসা ব্যবসায়ী রেজাউল করিম নামে এক পাইকারী ফুল ঝাড়ু ক্রেতা জানান, পাহাড়ের ফুল ঝাড়ুর কদরের কথা শুনে তিনিও আজ বেশ কয়েক বছর ধরে কাপ্তাই জেটিঘাট থেকে ঝাড়ু ক্রয় করে আসছেন। প্রতি ট্রাকে প্রায় ৩ হাজার বান্ডেল ফুল ঝাড়ু পরিবহন করা যায়। এছাড়া প্রতি বান্ডেল ১ থেকে ২ হাজার টাকা ক্রয় করে থাকেন। পাশাপাশি সেগুলো শহরে নিয়ে খুচরা বাজারে বিক্রয় করে প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক টাকা আয় হয় তার।
কাপ্তাই জেটিঘাটের ট্রাক চালক কোরবান, ইলিয়াছ, রহমান আলী সহ বেশ কয়েকজন জানান, , কাপ্তাইয়ের সাথে সরাসরি শহরে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হওয়াতে অনেকটা কম পরিশ্রম ও স্বল্প মূল্যে এসব ফুল ঝাড়ু গন্তব্যে পৌঁছানো সম্ভব হয়। পাশাপাশি কাপ্তাই সড়কে নিরাপত্তা পরিস্থিতির উন্নতির ফলে অনেক ঝামেলা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। তবে বেশ কয়েকজন চালক জানান, জ্বালানী তেলের মূল্য বৃদ্ধিতে বর্তমানে পরিবহন ব্যয় অনেকটা বেড়ে গেছে। যার ফলে বর্তমানে অতিরিক্ত ব্যয় বহন করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।