জুরাছড়ি উপজেলায় মাদক মামলায় তিন ব্যক্তিকে মাছের পোনা অবমুক্ত করণ, গাছ লাগানোসহ সদাচরণের জন্য সহায়ক ব্যতিক্রমী শাস্তির রায় দিয়েছেন রাঙামাটি চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট।
প্রবেশনের অতিরিক্ত শর্ত অনুযায়ী মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) সকালে সমাজ সেবা কার্যালয়ে প্রবেশন কর্মকর্তা ও উপজেলা চেয়ারম্যান সুরেশ কুমার চাকমার উপস্থিতিতে তিন ব্যক্তি কার্প জাতীয় মাছের পোনা কাপ্তাই হ্রদে অবমুক্ত করা হয়।
পরে বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ফলজ গাছের চারা লাগানো হয়।
এ সময় জুরাছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান ইমন চাকমা, সমাজ সেবা বিভাগের হিসাব সহকারি কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক প্রীতি ময় চাকমা উপস্থিত ছিলেন।
অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর মিহির বরন চাকমা জানান, ২০২১ সালে ৯ ফেব্রুয়ারি আসামিদের মদ সেবনরত অবস্থায় পুলিশ গ্রেফতার করে। এ বিষয়ে জুরাছড়ি থানায় রাষ্ট্রীয় বাদী হয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
সাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে আদালত অপরাধের শাস্তি কারাবাসের পরিবর্তে প্রবেশন অফিসারের তত্ত্বাবধানের জন্য পাঁচটি শর্তে প্রবেশন মঞ্জুর করেন।
পাঁচটি শর্তের মধ্যে রয়েছে প্রবেশনকালীন সময় দোষী সাব্যস্ত আসামিরা কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত হবেন না বা একই ধরনের অপরাধ আর করবেন না।
পরিবেশের প্রতি দায়িত্বশীল হিসেবে আসামি সোনা ধন চাকমা ও বাত্যা চাকমা ২ কেজি করে ৪ কেজি কার্প জাতীয় মাছের পোনা এবং আরতি চাকমা ৫ কেজি কার্প জাতীয় মাছের পোনা উপজেলা চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে কাপ্তাই হ্রদে অবমুক্ত করা। এছাড়া সোনা ধন চাকমা ও বাত্যা চাকমা ২০টি করে চল্লিশটি বনজ ও ফলজ চারা এবং আরতি চাকমা ৫০টি বনজ ও ফলজ চারা ৩১ আগস্টের মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উপজেলা চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে রোপনের শর্ত আরোপন করা হয়।
কোনো শর্ত ভঙ্গ করলে বা তাদের আচরণ সন্তোষজনক না হলে প্রবেশন আদেশ বাতিল করা হবে এবং সোনা ধন চাকমা ও বাত্যা চাকমার অপরাধের জন্য নির্ধারিত দণ্ডাদেশ ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা অনাদায়ে তিন মাস বিনাশ্রম কারাদন্ড। অপর আসামী আরতি চাকমা তিন বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও দশ হাজার টাকা অনাদায়ে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড ভোগ করতে হবে বলে আদেশ দেন আদালত।
এ বিষয়ে আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সৌরভ দেওয়ান ও জুয়েল দেওয়ান জানান, এ রায়ে তারা সন্তষ্ট। এর মাধ্যমে আসামিরা নিজেদের শুধরে নিবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তারা।