সকাল থেকে প্রাণচঞ্চল পুরো বিদ্যালয়। সবার চোখ-মুখ উৎসবমুখর। জমানো হয়েছে বনজ, ফলদ ও ভেষজের বিভিন্ন প্রজাতির চারা। প্রধান শিক্ষক সাজাইপ্রু মারমার নির্দেশ শুনতেই কালামাইশ্যা মুখ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আঙ্গিনায় এসব প্রজাতির শতাধিক চারা রোপন করেন তারা। রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার রাইখালী ইউনিয়নে অবস্থিত এই বিদ্যালয়টিতেই শুধু এমন কর্মসূচি নয়, এই ইউনিয়ন এর ২৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সপ্তাহব্যাপি চলছে একই কর্মসূচি।
‘সবুজে সাজাই শিক্ষাঙ্গণ’- এই প্রতিপাদ্য যেন বাস্তবে ধরা দিয়েছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মনে। কাপ্তাই উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আশীষ কুমার আচার্য্যের নির্দেশনায় এবং উদ্যোগে উৎসবমূখর পরিবেশে বৃক্ষরোপন করেন তারা।
বৃহস্পতিবার সকালে ডংনালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণের এই উৎসব ছিল মনে রাখার মত। চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র অংসাপ্রু মারমা গাছ রোপন করে বন্ধুদের সাথে চিৎকার করে হাসছিল। বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক নাসরিন আক্তার বলেন, কর্মসূচি শুরুর আগেই বৃক্ষরোপন সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। তাই এমন উচ্ছ্বাস দেখা যায়।
এদিকে একই চিত্র তিনছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক বিলকিস আক্তার বলেন, গাছ আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বন্ধু। তারা অক্সিজেন না দিলে যেমন সমাজের ভারসাম্য টিকত না, তেমনি বেশি বেশি গাছ লাগানোর কারণেই আমাদের অস্তিত্ব এখনও টিকে আছে।
রাইখালী রিফিউজি পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তপন কান্তি দে এবং কাপ্তাই উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি রতন কান্তি দাশ এই বৃক্ষরোপণ কর্মসূচীর প্রশংসা করে বলেন, দিনে দিনে গাছ কমে পড়ায় জলবায়ুর পরিবর্তন হচ্ছে। তাই সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আশেপাশে খালি জায়গায় গাছ লাগানো উচিত।
কাপ্তাই উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আশীষ কুমার আচার্য্য বলেন, রাইখালী ইউনিয়নের নারানগিরি ক্লাসটারের সর্বমোট ২৩টি বিদ্যালয়ে সপ্তাহব্যাপি চলছে এই কর্মসূচি। সতষ্ফূর্তভাবে অংশ নেয়ায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ পরিচালনা কমিটির সবাইকে জানাই ধন্যবাদ। পরিবেশের ভারসাম্য ঠিক রাখতে সবার উচিত বেশি বেশি গাছ লাগানো।