বান্দরবানসহ পার্বত্য এ অঞ্চলে চলমান সংঘাত নিরসনে বান্দরবানে গঠিত সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির সরাসরি বৈঠক শুরু হয়েছে।
রোববার (৫ নভেম্বর) সকাল ১১টায় দিকে বান্দরবানের রুমা উপজেলা সদর থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে বম অধ্যুষিত এলাকা মুনলাইপাড়া কমিউনিটি সেন্টারে এই বৈঠক শুরু হয়। প্রায় দীর্ঘক্ষণ দুই পক্ষের মধ্যে আলাপ আলোচনা চলে।
বৈঠকে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির চেয়ারম্যান নেতৃত্বের ৫সদস্য ও কেএনএফ পক্ষ থেকে ৫সদস্যরা অংশ নেন।
এছাড়াও বৈঠকে নিরাপত্তা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে সংক্ষিপ্ত ব্রিফিং করেন শান্তির প্রতিষ্ঠা কমিটির সভাপতি ও বান্দরবান জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা।
এ সময় তিনি বলেন, মোটামুটি দুই পক্ষ সুন্দর আর আন্তরিকভাবে আলোচনা করতে পেরেছি। তবে সংলাপ ফলপ্রসূ হয়েছে। দুই পক্ষের সংলাপের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত হয়েছে, পরবর্তী ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝির দিকে ২য় বৈঠক হবে। দুই পক্ষের আন্তরিকতার মধ্য দিয়ে সংলাপটি সমাপ্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, যতটুকু পারি এলাকায় শান্তি ফিরে আনার কাজ করতেছি। তারাও (কেএনএফ) সহমত পোষণ করেছেন।
বৈঠকে কেএনএফ-এর দাবি-দাওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকারের সাথে আলাপ আর পর্যালোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপে যাবো। তবে আগামীতে এখানকার পরিস্থিতি আরো উন্নত হবে। সংলাপে দুই পক্ষ একমত হয়েছে, এটাকে স্থীর রাখার জন্য।
এর আগে কেএনএফ শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির সাথে একাধিক বার ভিডিও কনফারেন্সে বৈঠক হলেও এই প্রথম তারা সরাসরি দুই পক্ষে বৈঠকে অংশগ্রহণ করেছে। তাছাড়া বেশ কয়েকদিন আগে সরাসরি বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও সেটি হয়ে উঠেনি।
এদিকে সরাসরি বৈঠককে ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় ওই এলাকায়। সেনাবাহিনী-বিজিবি-পুলিশ-গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা সেখানে চারিদিকে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বছরের আগস্ট থেকে কেএনএফ পাহাড়ে তৎপরতা শুরু করে। এদের সাথে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষে এ পর্যন্ত সেনাবাহিনীর ৫ সদস্যসহ ২২ জন নিহত হয়। কেএনফের ১৭ সদস্যকে আটক করা হয়।
এছাড়াও এই সশস্ত্র সংগঠনটির সাথে নতুন গজিয়ে ওঠ জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিদ্দাল শারক্বিয়ার সম্পৃক্ততার অভিযোগ রয়েছে। জঙ্গিদের টাকার বিনিময়ে কেএনএফ প্রশিক্ষণ দিতো বলেও অভিযোগ ছিল। এরপর বান্দরবানে চলমান এই সংঘাত নিরসনে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লাকে আহ্বায়ক করে সম্প্রতি শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটি এখন কেএনএফের সঙ্গে প্রথমবারে মত স্বশরীরে আলোচনা চালাচ্ছে।