পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি বলেছেন, আমরা সকল সংস্কৃতির মধ্যে ঐক্যের বন্ধন গড়ে তুলতে চাই।
গতকাল রাতে রাজধানীর বেইলি রোডে শেখ হাসিনা পার্বত্য চট্টগ্রাম ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রের মাল্টিপারপাস হল রুমে পার্বত্য মেলা-২০২৪ এর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মশিউর রহমান এনডিসির সভাপতিত্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান সুপ্রদীপ চাকমা, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরী বক্তব্য রাখেন। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আমিনুল ইসলাম অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন। এসময় অন্যান্যের মধ্যে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুই প্রু চৌধুরী অপু, যুগ্মসচিব মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, যুগ্মসচিব মো. হুজুর আলী, যুগ্মসচিব সজল কান্তি বনিক, পার্বত্য চট্টগ্রাম হতে আগত অতিথিবৃন্দ, বিভিন্ন সংস্থা থেকে আগত অতিথিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি আরও বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের বিভিন্ন সম্প্রদায় আছেন যারা সংস্কৃতিমনস্ক সৃজনশীল কাজের প্রতি অনুরাগী। এই মেলার মাধ্যমে পার্বত্য অঞ্চলের মানুষের সংস্কৃতি, কৃষ্টি, ইতিহাস, ঐতিহ্য, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার চিত্র ফুটে ওঠেছে। তিন পার্বত্য জেলায় উৎপাদিত কৃষি পণ্য সামগ্রী, হস্তশিল্প, ঐতিহ্যবাহী কোমর তাতেঁ বোনা পণ্য, বিভিন্ন মৌসুমী ফল, ঐতিহ্যবাহী পার্বত্য খাবার যা মেলার আকর্ষণকে অধিকতর বাড়িয়ে তুলেছে। পার্বত্য অঞ্চলের মানুষের উৎপাদিত পণ্যসামগ্রীর প্রচার ও বিপণনের মাধ্যমে তাদের অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতার চিত্র ফুটে ওঠেছে।
প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা আরও বলেন, এ মেলাকে কেন্দ্র করে পার্বত্য অঞ্চলে ক্ষুদ্র শিল্পের বিকাশ ঘটেছে। পার্বত্য অঞ্চলের সাথে সমতলের যোগাযোগের ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে, দৃষ্টিভঙ্গির ইতিবাচক পরিবর্তন হয়েছে। সকল সংস্কৃতির মাঝে যদি আমরা ঐক্যের বন্ধন সৃষ্টি করতে পারি তাহলে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলা সম্ভব হবে।
প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা বলেন, আওয়ামীলীগ সরকার দেশের মানুষের কথা ভাবে, দেশের শান্তির কথা ভাবে বলেই পার্বত্য অঞ্চলে দীর্ঘদিনের সাম্প্রদায়িক সংঘাত বন্ধ হয়েছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি সম্প্রীতি ও উন্নয়নের যে ধারা শুরু হয়েছে তা অব্যাহত থাকবে। আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশে পরিণত করার লক্ষ্যে যার যার অবস্থান থেকে উন্নয়ন কাজে অংশ নিলেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত শক্তিশালী হবে আর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা সত্যিকারভাবে বাস্তবায়ন হবে।
সভাপতির বক্তব্যে পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মশিউর রহমান বলেন, পার্বত্য এলাকার মানুষের জীবন-সংস্কৃতি, পোশাক-পরিচ্ছদ, ইতিহাস-ঐতিহ্য বিষয়ক তথ্য সমতলের মানুষের মাঝে পরিচয় করিয়ে দেয়ার উদ্দেশে এই মেলার আয়োজন করা হয়েছে। পাশাপাশি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকার যে ঐতিহ্যবাহী সমৃদ্ধ সংস্কৃতি রয়েছে তা সমতল মানুষের কাছে তুলে ধরাই ছিল আমাদের ক্ষুদ্র এ প্রচেষ্টা। তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামকে সাথে নিয়েই প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত উন্নত বাংলাদেশ তথা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে আমরা সক্ষম হবো। তিনি বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট সরকার ও স্মার্ট সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।
উল্লেখ্য, এবারের পার্বত্য মেলায় এবার ৯৭টি স্টল অংশ নেয়। চারদিনব্যাপী এ মেলায় প্রচুর দর্শনার্থী ও ক্রেতাদের সমাগম ঘটেছে। রাজধানীতে পাহাড়ি পণ্যসামগ্রী পেয়ে সমতলের ক্রেতারা বেজায় খুশি। কেনাকাটার ধুম আর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ঝনঝনানিতে আজ শেষ হলো পার্বত্য মেলার এবারের আসর।