রাঙামাটি সদর উপজেলাধীন ত্রাণ মন্ত্রনালয় কর্তৃক তিমুর সড়ক জীবতলী হেডম্যান পাড়া নতুন ব্রিজ নির্মাণে বাঁধা প্রদান করে বিট অফিসার ইনচার্জ রেঞ্জ কর্মকর্তা মোঃ আবু সুফিয়ান। এমন কি ব্রিজ নির্মাণ না করতে মুঠোফোনে গালিগালাজসহ হুমকি ধমকি ও দেন রেঞ্জ কর্মকর্তা মোঃ আবু সুফিয়ান। শুক্রবার সন্ধ্যায় স্থানীয় সংবাদকর্মীদের কাছে রেঞ্জ কর্মকর্তা মোঃ আবু সুফিয়ানের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করেন ১০৫ নং জীবতলী মৌজার হেডম্যান হিটলার ও ব্রিজ নির্মাণ শ্রমিকেরা।
স্থানীয় কার্ব্বারী(গ্রাম প্রধান), তরুণ চাকমা বলেন, যেখানে ব্রিজ নির্মাণ হচ্ছে সেটা হলো মৌজার জায়গা। কিন্তু বন বিভাগ বলছে তাদের জায়গা। তাই বন বিভাগের মানুষ এসে ব্রিজ নির্মাণে বাঁধা প্রদান করছে। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ব্যাপার।এর আগেও এই সড়কে ৩টি ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে তখন বন বিভাগ কোথায় ছিল? এখানে প্রায় ৩-৪শ’লোকের বসবাস তা হলে আমরা হাটাচলা করবো কি ভাবে? আমার জানামতে এ মৌজায় বন বিভাগের কোন জায়গা নাই।
জীবতলী ইউনিয়ন পরিষদ ১,২ ও ৩ নং ওয়ার্ডের মহিলা মেম্বার শান্তনা চাকমা বলেন, এটা হলো পুরাতন কাউন্সিল রাস্তা। এ রাস্তায় আরো তিনটি ব্রিজ হয়েছে এখন উপজেলা পরিষদ একটি নতুন ব্রিজ নির্মাণ করতে যাচ্ছে। এখানে ৩-৪শ’ পরিবার যাতায়াত করছে তাই ব্রিজটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বন বিভাগ গায়ে পড়ে ব্রিজ নির্মাণে বাঁধা দিচ্ছে। ব্রিজটি হলে জনগণের অনেক উপকার হবে।
স্থানীয় বাটিরাম চাকমা বলেন, যে রাস্তায় ব্রিজ নির্মাণ হচ্ছে সে রাস্তাটি অনেক পুরাতন। এর আগেও তিনটি ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে। নতুন ব্রিজটি হলে এলাকার অনেক উপকার হবে। উপজেলা সদর নতুন ব্রিজ নির্মাণ করতেছে আর বন বিভাগ ব্রিজ নির্মাণে বাঁধা দিচ্ছে। বন বিভাগ গায়ের জোরে রাস্তা ও ব্রিজ করতে দিচ্ছে না। এভাবে হলে আমরা জনগণ যাবো কোথায়?
ঠিকাকাদার প্রতিষ্ঠানের লোক মোঃ আবু বক্কর বলেন, ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রালয় থেকে সদর উপজেলা ব্রিজের নির্মাণ কাজ করছে। বন বিভাগ বলছে এটি সংরক্ষিত বন অঞ্চলের জায়গা। এর আগেও এ সড়কে ২-৩টি ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে। তাহলে তখন তারা কোথায় ছিল। আমরা জনস্বার্থে উন্নয়নমূলক কাজ করছি কেন কাজ বন্ধ রাখবো। ব্রিজ নির্মাণের মাঝামাঝি এসে বন বিভাগ কাজ বন্ধ রাখার কথা বলে। রেঞ্জ কর্মকর্তা আবু সুফিয়ান ব্রিজ নির্মাণ বন্ধ রাখতে বিভিন্ন ধরনের কথা বলে। একবার বলে জেলা প্রশাসক ও বন বিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানাবেন। আবার বলে মামলা করবে।
জীবতলী মৌজার হেডম্যান হিটলার বলেন, তিমুর জীবতলী হেডম্যান পাড়া এলাকায় বন বিভাগের কোন জায়গা নাই। যেখানে নতুন ব্রিজ নির্মাণ হচ্ছে সেখানেও তাদের কোন জায়গা জমি নাই। বন বিভাগ যে জায়গা দাবি করে সেটি সম্পূর্ণ মৌজার মধ্যে পড়েছে। এখানে সংরক্ষিত বন অঞ্চলের কোন জমি জামা নাই। রাঙামাটি যুগ্ন জেলা ও দায়রা জজ আজিজুল হক ২০১৬ সালের ১১ নভেম্বর রাঙামাটি উপজেলাধীন কামিলাছড়ির মৌজা ও ১০৫ নং জীবতলী মৌজার সীমানা ও বন বিভাগের সংরক্ষিত বনের সীমানা (বন বিভাগের ১৯৪৬ সনের গেজেট নির্দেশনা মোতাবেক) পরিচিহিৃত করে স্থায়ী সীমানা পিলার স্থাপনে বিবাদী পক্ষ সহযোগিতা না করায় অন্যায় ,অবৈধ ও বে-আইনী অকার্যকর ঘোষণা করার আদেশ প্রদান হল এবং একই সাথে বনবিভাগ ও সকল বিবাদীগণকে ২টি মৌজার সীমানা বিরোধ নিস্পত্তি করণে নির্দেশ দেওয়া হল। জেলা প্রশাসনের রায়েও বন বিভাগ হেরে গেছে। ভূমি মন্ত্রনালয়ের জরিপে দেখা গেছে, ১০৫নং জীবতলী মৌজায় বন বিভাগের কোন জমি নাই। তার পরে বন বিভাগ তথা রেঞ্জ কর্মকর্তা আবু সুফিয়ান আমাদের পিছে লেগে আছে। সে আমাকে হুমকি ধমকি দিচ্ছে এবং ব্রিজ নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখতে বলেছেন।
এব্যাপারে বন বিভাগের পক্ষে রেঞ্জ কর্মকর্তা আবু সুফিয়ান মুঠোফোনে বলেন, এ জায়গা নিয়ে মামলা চলছে। এটা বন বিভাগের জায়গা। আমরা আইনগত ভাবে লড়াই করবো। আপনারা সাংবাদিক আপনাদের লেখা আপনারা লেখেন। বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে তেমন কোন আগ্রহ নেই রেঞ্জ কর্মকর্তা আবু সুফিয়ানের।