৩০ জুলাই থেকে শুরু হওয়া টানা ৪ দিনের অতি বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বাঘাইছড়ির নিম্নাঞ্চল প্লাবিত। এই নিয়ে চলতি মৌসুমে ৩য় বার এর মত রাঙামাটিস্থ বাঘাইছড়ি উপজেলায় বন্যার দেখা দিয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে খোলা হয়েছে ৫৫টি আশ্রয়কেন্দ্র। এছাড়া সাজেকের বাঘাইহাট- মাচালং সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় সাজেকের সঙ্গে সারাদেশের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এতে সাজেকে আটকা পড়েছে ৩০০ শতাদিক পর্যটক। অপরদিকে খাগড়াছড়ি -দীঘিনালা সড়কের কবাখালি নামক স্থানটি পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ৩ আগষ্ট শনিবার সকাল থেকে বাঘাইছড়ির সাথে সারাদেশের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, টানা ৪ দিনের ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে শুক্রবার রাত থেকে কাচালং নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে থাকে। এবং শনিবার সকাল থেকে উপজেলার রূপকারি, বারবিন্দু ঘাট, মাস্টার পাড়া, পুরাতন মারিশ্যা, পশ্চিম মুসলিম ব্লক, লাইল্যা ঘোনা ও উলুছড়ি সহ অনেক গ্রাম প্লাবিত হতে শুরু করেছে। এতে জনজীবনে নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ।
এর আগে এবছর ঘূর্ণিঝড় রিমেল ও মৌসুমী প্রভাবে সৃষ্ট মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে বাঘাইছড়ি উপজেলার নিম্নাঞ্চলগুলো ২ ধাপে প্লাবিত হয়। এতে ভোগান্তির শিকার হন হাজার হাজার মানুষ। প্রথম ধাপে গত ২৮ মে পাহাড়ি ঢলে ৮টির অধিক গ্রাম প্লাবিত হয়। এবং দ্বিতীয় ধাপে গত ২৯ জুলাই থেকে শুরু হওয়া সাপ্তাহব্যাপী টানা বর্ষণে বাঘাইছড়ি উপজেলা পরিষদসহ ওই এলাকার নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়। যেখানে উপজেলার প্রায় আড়াই হাজার পরিবার বন্যায় কবলিত হয়।
স্থানীয়রা জানান, আবহাওয়া পরিস্থিতি উন্নত না হলে যেভাবে পাহাড়ি ঢলের পানি আসতে শুরু করছে তাতে গোটা বাঘাইছড়ি উপজেলা তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এখনই মানুষের অশান্তির সীমা নেই। জন দুর্ভোগে পড়েছে অসংখ্য মানুষ। গরু ছাগল হাস মুরগি, বৃদ্ধা ও রোগিদের নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে তারা।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, দুর্যোগ মোকাবেলায় রাঙামাটি জেলায় ২৬৭টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। তার মধ্যে বাঘাইছড়ি উপজেলাতে ৫৫টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। তবে আশ্রয় কেন্দ্র গুলোতে এখনো কোন লোক উঠেনি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিরিন আক্তার বলেন, টানা বৃষ্টিপাতের ফলে বাঘাইছড়ির নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হতে শুরু করেছে ইতিমধ্যে উপজেলার সকল আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে নিন্মাঞ্চলের লোকদের আশ্রয়কেন্দ্রে নিরাপদে অবস্থানের জন্য আহবান করা হয়েছে এবং বন্যার্তদের সহযোগিতায় উপজেলা প্রশাসনের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, গতকাল কিছু পর্যটক সাজেক গিয়েছিল, হঠাৎ পানি বেড়ে সড়কের কিছু অংশ তলিয়ে যাওয়ায় তাঁরা ফিরতে পারেনি এবং সাজেক অবস্হান করছে।