প্রকৃতির রানী রাঙামাটি। প্রকৃতির সৌন্দর্যের ভরপুর এই জেলা।পাহাড়- পর্বত,কাপ্তাই লেক, নদ- নদী,খাল- বিল, জলাশয়,পশু- পক্ষী,কীট-পতঙ্গ, নানারকম গাছ- গাছালি সহ অসংখ্য জীববৈচিত্র্য রয়েছে এই জেলায় ।যেমনি রয়েছে নানা আদিবাসীর বসবাস,তেমনি রয়েছে তাদের ভিন্নতাও।খাবার- দাবার,- পোশাক -পরিচ্ছদ,রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন ভাষা।সবাই বাংলাদেশী হলেও রয়েছে এদের ভিন্নতা। রয়েছে তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি। এখানে রয়েছে বড় বড় সুউচ্চ পর্বতের মতো পাহাড়। ঐ পাহাড় থেকে জন্ম নিয়েছে অনেক নাম না জানা কতো হাজারো ছোট বড় অসংখ্য ঝর্ণা।যা সবুজ পাহাড় ও হ্রদের অপরুপ মেলবন্ধন।
জেলার দশ উপজেলার মধ্যে প্রাকৃতিক ভাবে সৃষ্ট অনেক বড় বড় ঝর্ণা আবিষ্কার করেছে প্রকৃতি প্রেমীরা। তাদের মধ্যে অন্যতম ঝর্ণা হলো বিলাইছড়ি উপজেলার ধূপপানি ঝর্ণা, গাছকাটা ছড়া ঝর্ণা, নকাটাছড়া ঝর্ণা,মুপ্পোছড়া ঝর্ণা,স্বর্গপুর ঝর্ণা,সবচেয়ে সুন্দর ও মনোমুগ্ধকর ঝর্ণা রয়েছে বিলাইছড়ি উপজেলায় ।এছাড়াও রয়েছে বরকলের শুভলং ঝর্ণা,কাপ্তাইয়ে শীলছড়ি ঝর্ণা বেশ উল্লেখযোগ্য। প্রবল বর্ষণে নব যৌবন ফিরে পেয়েছে এসব ঝর্ণা।এখানে পাহাড় বুকছিঁড়ে জেগে উঠেছে এই ঝর্ণাগুলো। দেখার এখনি উপযুক্ত সময়।
পর্যটকরা বেশ আকর্ষণীয় ঝর্ণা দেখতে হলে আসতে হবে বিলাইছড়ি উপজেলায়। এখানে বর্তমানে শত শত পর্যটকের মূখর হয়ে উঠেছে।।অধিক বৃষ্টিপাতে টইটম্বুর কাপ্তাই হ্রদের পানি।অধিক বৃষ্টিপাতে নব যৌবন ফিরে পেয়েছে এই ঝর্ণাগুলো।পর্যটক বরণের প্রস্তুত উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় প্রশাসন।তাই এই সময়ে একবার হলেও ঘুরে আসুন এই ঝর্ণাগুলোতে। প্রিয়জন কিংবা সঙ্গী,সাথী নিয়ে।
কিভাবে যাবেন:- ঢাকা থেকে যারা আসবেন, ঢাকার কলাবাগান কিংবা সায়েদাবাদ নতুবা ফকিরাপুল, যাত্রাবাড়ী বাস স্টেশন থেকে সরাসরি হানিফ, শ্যামলী,এস আলম, ঈগল এবং ডলফিন কোচে রাঙ্গামাটি সদর নতুবা কাপ্তাই উপজেলায় পৌঁছাতে হবে।
যাতায়াতের সুবিধা:- রাঙ্গামাটি টু বিলাইছড়িতে আসা – যাওয়ার জন্য মিনি নৌকা বোট বা ট্যুরিস্ট বোট সার্ভিস রয়েছে। ধারণ ক্ষমতা ০৮-১০ জনের।খুবই দ্রুত গতি। যোগাযোগ নাম্বার :-০১৫৫২৭৪৩২৪৭, ০১৬৩৫৬৩৪১৭৭,০১৬৩৪১০৫৮৯৬, ০১৫৫৭৪৬৯৭৩৫,০১৮৬৫৫৯৪৬৫৭, ০১৫৮০৭৯৮৬৫০ নাম্বারে।যার প্যাকেজমূল্যে ৭৫০০ /= টাকা। এছাড়াও সকাল ৭:৩০ মিনিটে এবং বিকাল ২:০০ টায় রাঙ্গামাটি তবলছড়ি লঞ্চঘাট এবং কাপ্তাই হয়ে লোকাল বোটে আসা যাবে। যার ভাড়া সর্বোচ্চ ১০০ টাকায় উপজেলা সদরে পৌঁছা যাবে। তবে রাঙ্গামাটি না হয়ে কাপ্তাই হয়ে আসলে হ্রদের উপভোগ থেকে বঞ্চিত হবেন।
থাকা এবং খাবারের সু-ব্যবস্থা:-উপজেলা প্রশাসনের তত্বাবধানে রয়েছে “নীলাদ্রি রিসোর্ট। এখানে প্রত্যেক রিসোর্টগুলো ঝর্ণার নামে নামকরণ করা হয়েছে। রিসোর্টে রাত্রিযাপন সর্ব্বচ্চ ৩৫০০/= টাকা পর্যন্ত।এছাড়াও রয়েছে রেস্ট হাউজ, স্মৃতিময় বোর্ডিং,নিরিবিলি বোর্ডিং এবং স্বপ্নবিলাস সহ অন্যান্য বোর্ডিং। খাবার ও পরিবেশনের জন্য রয়েছে, সেতু,হায়দার, ভাতঘর এবং নিখিল রেস্তোঁরেন্ট। এছাড়াও রয়েছে পাহাড়িদের ব্যম্বু চিকেন সহ নানা মুখরোচক খাবার।
নিরাপত্তা:- ভ্রমণের জন্য সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয় নিরাপত্তা। এখানে নিরাপত্তার জন্য রয়েছে উপজেলা প্রশাসন এবং স্থানীয় প্রশাসন। রয়েছে গাইডারও। নিরাপত্তার জন্য গ্রামে কমিটি রয়েছে। ঐ কমিটি আপনাকে সহযোগিতা দিবে। কুকি চিন সন্ত্রাসীদের ভয়:- ঝর্ণাগুলো রয়েছে উপজেলা সদরের আশেপাশে।এখানে কোনো দিন কুকি-চিন আসে নাই, আসতেও পারবেন না।
যাওয়া পথে:- রাইংখ্যং নদী বাকে যাওয়ার পথে দেখা মিলবে সু-উচ্চ পাহার্ড়,গাঙচিল, হাতি, বন্য শুকর, বানর, মায়াবী হরিণ, বন মোরগ, কাঠবিড়ালি, কাঠ ঠোকরা, ঘুঘু,উড়ন্ত কাঠবিড়ালি সহ অসংখ্য পশু- পক্ষী ও তাদের কলতান।তবে জোঁক থেকে সাবধান। তাই চলো জীবনে একবার হলেও এই ঝর্ণার দেশে ঘুরে আসি।