পবিত্র মাহে রমজানে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখতে, কোন ধরণের কার্ড ছাড়াই সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য ক্রয়ের বিশেষ সুবিধা চালু করেছে রাঙামাটি জেলা প্রশাসন। গতকাল ৫ই মার্চ থেকে শহরের মধ্যে ১৫টি স্থানে এনআইডি দিয়ে সাধারণ মানুষ পাচ্ছেন সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য ক্রয়ের সুবিধা। ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে করে বিক্রি করা হচ্ছে চিনি, তেল, মশুর ডাল ও ছোলাসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য। ৫ মার্চ থেকে শুরু হওয়া এই কার্যক্রম চলবে আগামী ২২ মার্চ পর্যন্ত। প্রতিটি র্নিদিষ্ট স্থান থেকে প্রথম ৪শ’জন ভোক্তা টিসিবি কার্ড ছাড়াই ক্রয় করতে পারছেন পণ্যসামগ্রী। আজ (৬ মার্চ) এই কর্মসূচির আওতায় পণ্য বিতরণ করা হয়েছে রাঙামাটি সরকারি কলেজ মাঠ, শাহ স্কুল মাঠ, মিলন বিহার, রাঙামাটি পাবলিক কলেজ মাঠ ও ভেদভেদী সওজ কারখানায়।

৪শত উপকারভোগীর বিপরীতে লাইনে দাঁড়িয়ে আছে হাজারের অধিক গ্রাহক।
পবিত্র রমজান উপলক্ষ্যে চালু হওয়া ‘টিসিবির ট্রাকসেল’ শিরোনামের এই বিশেষ কর্মসূচি ৫ মার্চ বুধবার থেকে ২২ মার্চ পর্যন্ত শুক্র-শনিবার ব্যতিত প্রতিদিন চালু থাকবে। এসব পণ্যসামগ্রী বিক্রয় হচ্ছে প্যাকেজ আকারে। প্রতিটি প্যাকেজের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৫০ টাকা। প্রায় অর্ধেক দামে পাওয়া যাচ্ছে প্রতিটি পণ্য সামগ্রী। ১২০ টাকার চিনি বিক্রয় হচ্ছে ৭০ টাকায়, ২লিটার সোয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে ২০০ টাকায়, ১২০ টাকার মশুর ডাল ৬০ টাকা, ১১০ টাকার ছোলা ৬০ টাকায়। আগামী রবিবার (৮ মার্চ) এই কর্মসূচির আওতায় পণ্য বিতরণ করা হবে শহরের জিমনেসিয়াম মাঠ, মারী স্টেডিয়াম, নিউ মার্কেট, বনরূপার ফরেস্ট কলোনী, পৌরসভা মাঠ এলাকায়।
তবে প্রতিদিন শুধুমাত্র ৫টি পয়েন্টে পণ্য বিতরণ করায় ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে গরিব অসহায় সাধারণ মানুষদের। তারা বলছেন শহরের জনসংখ্যার তুলনায় ৫টি পয়েন্ট ও ৪শত মানুষ খুবই নগন্য। তাই জনসাধারণের দূর্ভোগ ও কষ্ট লাগবে পন্য বিতরণের স্থান একই সাথে পণ্য বিতরণের সংখ্যা বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন সবাই। আজ বৃহস্পতিবার রাঙামাটি সরকারি কলেজ মাঠে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ৪শ’জনকে টিসিবি’র পণ্য দেওয়ার কথা থাকলেও গ্রাহকের সমাগম হয়েছে প্রায় দেড় হাজার। এতে অনেকেই টিসিবি’র পণ্য না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে চলে যান। অনেকেই অভিযোগ করেছেন নিজ নিজ ওয়ার্ডে যেন পণ্য দেওয়া হয়। তাহলে গ্রাহকদের হয়রানি হতে হবে না। আর এক ওয়ার্ডর লোকজন অন্য ওয়ার্ডে যাওয়ার সুযোগ পাবে না।

দীর্ঘ ২ ঘন্টার অধিক লাইনে দাঁড়িয়ে পণ্য না পাওয়ায় ক্লান্ত শরীরে কেউ দাঁড়িয়ে কেউবা বসে আছেন স্তব্ধ হয়ে।
শহরের চম্পক নগর এলাকা থেকে টিসিবির পণ্য নিতে আসা হাসমতিন্নেছা বেগম বলেন, গরিবের জন্য টিসিবির মাল (পণ্য) দিতেছেন কিন্তু আমরা রোদের মধ্যে রোজা থাইকা লাইনে দাঁড়াইছি। এখন সামনে আসতে আসতে আর পাইনা। গতকালকে আর আজকে মিলে ২ বার দিলো কিন্তু একবারও পাইলাম না। গাড়ি ভাড়া লস, সময় লস, রোজা থাইকা রোদের মধ্যে ২ ঘন্টা দাঁড়াইয়া ছিলাম। যদি আরও বেশী সংখ্যক মানুষরে দিতো, তাইলে আমাদের সবার উপকার হইতো।
কলেজ গেইট এলাকার ৯ নাম্বার ওয়ার্ডের বাসিন্দা নুরুল ইসলাম বলেন, যদি ওয়ার্ড ভিত্তিক ভাবে এই সকল পণ্য দেওয়া হতো তাহলে সবাই পেতো। এক ওয়ার্ডের মানুষ অন্য ওয়ার্ডে যেয়ে লাইন ধরতো না। এখন এক জায়গার মানুষ অন্য জায়গায় গিয়ে টিসিবি থেকে এই পণ্যসামগ্রী নিচ্ছে। ফলে কেউ পাচ্ছে কেউ পাচ্ছে না। দেখা যাচ্ছে যে গতকালকে নিয়েছে সে আজকেও নিচ্ছে। আর যে আগেও পায়নি সে আজকেও পায়নি। তাই টিসিবির পণ্য বিতরণের পয়েন্ট ৫টি থেকে আরও বাড়ানো দরকার সেই সাথে যাতে আরও বেশী মানুষ এই সেবাগুলো পায় সে দিকেও নজর দেওয়া দরকার।