রাঙামাটিতে জমি বিরোধ ঘিরে একটি পরিবারে দ্বন্ধ চরম আকার ধারণ করেছে। শ্বশুরের নামে রেকর্ডীয় জায়গা জবরদখলে নিয়ে জমির একাধিক অংশ বিভিন্ন জনের কাছে বিক্রির অভিযোগ করেছেন শহরের রিজার্ভবাজারের চেঙ্গীমুখ এলাকার মো. সাজিদ ও তার বাবা মো. নাছির। তাদের একই পরিবারের মো. আমির উদ্দিন ও তার স্ত্রী নুর আয়শা বেগমের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করেন। সোমবার দুপুরে নিজ বাড়ির আঙিনায় সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে জানমালের নিরাপত্তাসহ বিষয়টির সুষ্ঠু সুরাহা চেয়ে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ দাবি জানান মো. সাজিদ ও তার বাবা মো. নাছির। এ ঘটনায় থানায় ও আদালতে একাধিক মামলা হয়েছে বলেও জানান মো. সাজিদ।
অন্যদিকে পারিবারিক জমির বিরোধ ঘিরে ওই এলাকার একই পরিবারের পরস্পরবিরোধী দুইপক্ষের দ্বন্ধ চরম আকারে রূপ নিয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা। তাদের আশঙ্কা যে কোনো মুহূর্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়াতে পারে পরিবারটি উভয়পক্ষ।
সংবাদ সম্মেলনে সাজিদ ও তার বাবা বলেন, তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি জবরদখলে রেখে অবৈধভাবে বেচা-বিক্রি করে চলেছেন প্রতিপক্ষ নুর আয়শা বেগম ও তার স্বামী আমির উদ্দিন। সাজিদ বলেন, নুর আয়শা আমার খালা। আমরা একই পরিবারের হলেও বাস্তুভিটার সব জমি-জমার রেকর্ডপত্র আমার নানা মৃত মজলিস মিয়ার নামে। নানা মারা গেছেন অনেক বছর আগে। পরে ২০১৭ সালে আমার মা আয়েশা বেগম শিরিন মারা যান। তখন আমি ছোট ছিলাম। মা রাঙামাটি পৌরসভার কমিশনার ছিলেন। কিন্তু মা মারা যাওয়ার পর খালা ও তার স্বামী আমার মায়ের পৈত্রিক সম্পত্তির সিংহভাগ জবরদখলে নিয়ে অবৈধভাবে বেচাবিক্রি করে সম্পূর্ণ আত্মসাত করে চলেছেন।
সাজিদ বলেন, সেখানে আমাদের পরিবারের নানার নামে রাঙামাটি বাজারফান্ডের আওতাধীন আবাসিক প্লট নং-২২৮(এ) মূলে ১৯২৭ বর্গফুট রেকর্ডীয় এবং ১২০০ বর্গফুট স্থিত আছে। কিন্তু এসব জায়গার সিংহভাগ জবরদখলে নিয়েছেন প্রতিপক্ষীয়, যদিও উভয়ের মধ্যে সমানভাবে বন্টনের অধিকার রয়েছে। ইতোমধ্যে একাধিক ব্যক্তির কাছে আমাদের কথা তোয়াক্কা না করে জোরপূর্বক একাধিক অংশ জমি বিক্রি করে আত্মসাত করেছেন প্রতিপক্ষীয় খালা ও খালু। তাছাড়া মামার অংশ বায়নানামা মূলে আমাদের কাছে বিক্রি করেছিলেন। আমরা এর ন্যায্যদাবি করতে গেলে আমাদের ওপর নানা ধরনের অত্যাচার, নির্যাতন, হামলা চালানো হয়। প্রাণনামের হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন তারা। বর্তমানে আমি এবং আমার বাবা প্রাণনাশের হুমকিতে রয়েছি। প্রশাসনের কাছে আমরা জানমালের নিরাপত্তা দাবি করছি।
অপরপক্ষে অভিযুক্ত মো. আমির উদ্দিন বলেন, আমি আমার স্ত্রীর জায়গা বিক্রি করেছি। তারা (সাজিদ ও তার বাবা) তাদের জায়গায় আছে। কিন্তু আমার স্ত্রীর জায়গা দখলে নিতে আমাদেরকে নানাভাবে হয়রানি করছেন তারা।
সেখানে জায়গা ক্রয় করা মো. ফারুক বলেন, আমি অনেক টাকায় জায়গা কিনে সেখানে ঘর নির্মাণ করতে গিয়ে বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। জায়গা নিয়ে তাদের মধ্যে ঝামেলা। কিন্তু এখন নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে আমাকে।