খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলায় মসজিদ ভিত্তিক মক্তব ও কোরআন শিক্ষা কেন্দ্রে বরাদ্দপূর্বক শিক্ষক নিয়োগে চরম অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ তিনজন পরীক্ষার্থী চাকরি না পেলেও, পরদিন একজনকে ডেকে এনে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
গত ২৯ জানুয়ারি মাওলানা হেলাল উদ্দিন, হাফেজ ইউনুস ও মাওলানা মোহাম্মদ আবুল হাসনাত নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেন। পরীক্ষায় মাওলানা হেলাল উদ্দিন প্রথম স্থান অর্জন করলেও তাকে নিয়োগ না দিয়ে ৩০ জানুয়ারি মোঃ সোলাইমান নামে একজনকে ডেকে এনে পরীক্ষার উত্তরপত্র তৈরি করিয়ে চাকরি দেওয়া হয়।
পরিক্ষার্থী মাওলানা হেলাল উদ্দিন জানান, আমরা তিনজনই পরিক্ষা দিয়েছি। আমি প্রথম হয়েছি আমাকে নিয়োগ না দিয়ে। একদিন পর আরেকজন কে ডেকে নিয়ে চাকরি দিয়েছে।
অভিযোগ নিয়ে গত ১০ মার্চ (রবিবার) ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রাণালয়ের অধীনে ইসলামিক মিশনের দীঘিনালা উপকেন্দ্রর প্রোগ্রাম অফিসার মোঃ আসাদুল ইসলামের সাথে কথা হয়। ২৯ জানুয়ারি মক্তব নিয়োগে অসদুপায়ের অভিযোগ নিয়ে কথা বলতে গেলে তিনি বিচলিত হয়ে উঠেন। পরে মাসোয়ারা ও একজনকে চাকরি দিবেন মর্মে নিজের ঘটনা দামাচাপা দিতে হাত জোর করে। যাহা প্রতিনিধির কাছে ভিডিওচিত্রে প্রমাণ রয়েছে।
সরেজমিনে, একে একে ৩ জন পরিক্ষার্থীর প্রতিটি উত্তরপত্র যাচাই-বাছাই করা হলে দেখা যায়, যারা পরিক্ষা দিয়েছে তাদের নাম্বার কম দেওয়া হয়েছে। আরবিতে প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হলেও নাম্বার দেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে জানতেন চাইলে তিনি জানান, উত্তরপত্রে আরবিতে হাদিস লেখায় আমি পড়তে পারি নাই তাই নাম্বার দেওয়া হয়নি। আর নাম্বার দিতে হবে এমন কোন কথা নেই। আমার মন মতো যাকে ইচ্ছে চাকরি দিবো। এখানে সাংবাদিকের কোন কাজ নেই।
এ নিয়ে গত (১৭ মার্চ) দীঘিনালা উপজেলা ইসলামিক ফাউণ্ডেশনের সুপারভাইজার বরাবর লিখত অভিযোগ দায়ের করেছে মাওলানা হেলাল উদ্দিন। লিখিত অভিযোগে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অসাদুপায় অবলম্বন করায় এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানানো হয়েছে।
প্রোগ্রাম অফিসার মোঃ আসাদুল ইসলামের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়। ২০১৬ সালের আগষ্ট মাসে দীঘিনালা ইসলামিক মিশনের দীঘিনালা উপকেন্দ্রের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। দীর্ঘদিন একই অফিসে চাকরি করায় তার স্বজনপ্রীতি ও নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও মক্তব শিক্ষকদের চাকরির স্থায়িত্ব বাড়াতে নানা সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেন এই কর্মকর্তা। শিক্ষকদের থেকে মধু, দুধ, কলাসহ নানা সুবিধা গ্রহণ করেন প্রতিনিয়ত।
অভিযোগের বিষয়টির উপর অভিযোগপত্রের সত্যতা নিশ্চিত করে, দীঘিনালা ইসলামিক ফাউণ্ডেশনের ফিল্ড সুপারভাইজার মুহাঃ আব্দুল হালিম, বলেন গত ১৭ মার্চ একজন পরিক্ষার্থীর একটি অভিযোগ পেয়েছি আমরা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিবো।