খাগড়াছড়ি জেলার মহালছড়ি উপজেলার মুবাছড়ি ইউনিয়নের হেডম্যান পাড়া মৈত্রীপুর বৌদ্ধ বিহারে শনিবার (১১ অক্টোবর) ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয়েছে ৮ম শুভ দানোত্তম কঠিন চীবর দান উৎসব–২০২৫।
দিনব্যাপী নানা ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের পাশাপাশি স্থানীয় রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
সকালের শুরুতে বিহারে বুদ্ধ পতাকা উত্তোলন মাধ্যমে শুরু হয় অনুষ্ঠানের। পরবর্তীতে ত্রিরত্ন বন্দনা, ভিক্ষু বন্দনা, ত্রিশরণ প্রার্থনা, পঞ্চশীল গ্রহণ, বুদ্ধপূজা, সিবলী পূজা, উপগুপ্ত পূজা, পিণ্ড দান, হাজার প্রদীপ দান, অষ্টপরিষ্কার দান, সংঘদান ও বুদ্ধমূর্তি দান করা হয়।
অনুষ্ঠানে মংসাউ মারমার সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ মারমা ঐক্য পরিষদের সভাপতি ম্রসাথোয়াই মারমা। বিশেষ অতিথি ছিলেন মহালছড়ি উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোঃ আনোয়ার হোসেন সহ মহালছড়ি উপজেলা বিএনপি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিএনপি নেতৃবৃন্দ বলেন, এমন মিলনমেলার মাধ্যমে পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি আরও দৃঢ় হয়। মহালছড়ি সবসময়ই শান্তি ও সহাবস্থানের প্রতীক।তাই আজ খাগড়াছড়ির জননেতা ওয়াদুদ ভূইয়ার পক্ষ থেকে এখানে এসেছি সকলের সাথে আনন্দ উৎযাপন করতে।
এছাড়াও উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, আমরা বিশ্বাস করি ধর্মীয় উৎসবগুলো মানুষে মানুষে ভালোবাসা, সহনশীলতা ও পারস্পরিক সম্মানের বন্ধনকে শক্তিশালী করে। বিএনপি সব ধর্মের প্রতি সমান শ্রদ্ধাশীল।
বিভিন্ন বিহার থেকে আগত ভিক্ষুসংঘ ধর্মদেশনায় বলেন, ভগবান বুদ্ধের সময়ে প্রধান উপাসিকা বিশাখা কর্তৃক গৌতম বুদ্ধকে প্রথম কঠিন চীবর দান করা হয়েছিল। আষাঢ়ী পূর্ণিমা থেকে আশ্বিনী পূর্ণিমা পর্যন্ত তিন মাসব্যাপী ধ্যানসাধনা শেষে আশ্বিনী পূর্ণিমা পরবর্তী এক মাসব্যাপী এই শুভ দানোত্তম কঠিন চীবর দান পালিত হয়।
দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে হাজারো নারী-পুরুষ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী অংশগ্রহণ করেন। শান্তি, মৈত্রী ও কল্যাণ কামনায় এই উৎসবটি মহালছড়িতে ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের এক উজ্জ্বল উদাহরণ হিসেবে প্রতিফলিত হয়।