ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৪ অক্টোবর ২০২৫ (শুক্রবার),বিকেল ৪টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি রাজু চত্বরে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশ থেকে মাইকেল চাকমাকে গ্রেফতার করে তার সাজা কার্যকর করা, ইউপিডিএফসহ পাহাড়ে সক্রিয় সকল সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে অবিলম্বে নিষিদ্ধ করে ও রাঙ্গামাটির কাপ্তাইয়ে প্রতিবন্ধি মারমা নারীকে মারমা যুবক কর্তৃক কয়েক মাস ধরে গণ ধর্ষনের ফলে অন্ত:সত্ত্বা করায় ধর্ষকদের বিচার নিশ্চিত করা,রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার আমতলিতে গত সোমবার রাতে স্থানীয় সাধারণ বাঙালি পরিবারের ঘর ভাঙচুর ও কয়েক রাউন্ড গুলি নিক্ষেপ করে ভয় প্রদর্শন কারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে বিচারের দাবি জানানো হয়।
পিসিসিপি কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিঃ সহ-সভাপতি আল আমিন এর সভাপতিত্বে, পিসিসিপি ঢাকা মহানগর শাখার সিনিঃ সহ-সভাপতি মোঃমিজান উদ্দিন এর সঞ্চালনায়, প্রধান অতিথির বক্তব্যে,পিসিসিপির কেন্দ্রীয় সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন কায়েশ সমাবেশে বলেন, পার্বত্য অঞ্চলে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ইস্যুতে নাটক মঞ্চস্থ করে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টিকারীদের অন্যতম মাস্টারমাইন্ড সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন ইউপিডিএফ এর সন্ত্রাসী মাইকেল চাকমা। তার বিরুদ্ধে খুন, গুম, মাদক ও বে-আইনি অস্ত্রের ব্যবসার মতো অপরাধের প্রমাণ থাকলেও সে তার সহিংস কার্যক্রম বহাল তবিয়তে বজায় রেখেছে। শুধু তাই নয়, সম্প্রতি মাইকেল চাকমার অপরাধ প্রমাণে দেশের চলমান আইনের ধারা অনুযায়ী তাকে ০৮ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করার পরেও সে প্রশাসনের নাকের ডগায় অবস্থান নিয়ে তার কর্মসূচি চলমান রেখেছে। আমরা ছাত্র পরিষদের পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অনতিবিলম্বে মাইকেল চাকমার মতো দুর্ধর্ষ খুনিকে গ্রেফতার করে তার রায় কার্যকর করার জোর দাবি জানাচ্ছি।

প্রধান বক্তার বক্তব্যে, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও ঢাকা মহানগরের সভাপতি অভিযোগ করে বলেন,পার্বত্য চট্টগ্রামের অরাজকতা অন্যায়,চাঁদাবাজি,হত্যা,গুম সহ সকল অপরাধ প্রসাশনের নাকের ডগায় হচ্ছে কিন্তু তারা কী করছে?আজ মাইকেল চাকমার বিরুদ্ধে এতবড় অপরাধ প্রমাণ হওয়ার পরেও পুলিশ তাকে গ্রেফতার করছে না কেন? আমরা জানতে চাই কাদের মদদে অথবা কাদের ছত্রছায়ায় মাইকেল চাকমার মত শীর্ষ সন্ত্রাসী এখনো বাহিরে ঘোরাঘুরি করছে। আপনারা ভূলে যাবেন না আপনারা হাজার হাজার শহীদদের রক্তের উপর দাড়িয়ে আজকের রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন। সুতরাং যত বড়ই ছত্রছায়ায় থাকুক না কেন মাইকেলের মত অপরাধীদের ধরে বিচার নিশ্চিত করুন।
রাঙামাটির কাপ্তাই এর মারমা প্রতিবন্ধী নারীকে কয়েক মাস ধরে মারমা যুবক কতৃক গণধর্ষণ করে তাকে ৫ মাসের গর্ভবতী করা হয়। আর তার প্রথাগত বিচার করা হয় ৫হাজার টাকা আর একটি শুকর জরিমানা। এটা কী মানবাধিকারকর্মীরা দেখেন না? এখানে কী প্রশাসনের কোনো দায়বদ্ধতা নাই? একটি স্বাধীন গণতান্ত্রিক দেশে কিভাবে এ অ-বিচার হয়? দেশের ধর্ষন নিয়ে এত আন্দোলন এত কিছু হওয়ার পরেও আজ কেনো আমাদের উপজাতি বোনেরা দেশের আইন অনুযায়ী ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে?
তাই আমি বলবো স্বার্থপরের মত নিজেদের গুটিয়ে না রেখে পাহাড়ের অবিচার নির্যাতন নীপিড়ন এর প্রতি দেশের সকল সুশীল সমাজ সুদৃষ্টি দিন। পাহাড়েও বাংলাদেশের আইন নিশ্চিত করুন।পাহাড়ের সকল সন্ত্রসী সংগঠনগুলোকে নিষিদ্ধ করে আইনের আওতায় এনে বিচারের ব্যবস্থা করুন।এবং পাহাড়ের সকল গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের প্রতি সুবিচার করে সমান ভাবে সকল ক্ষেত্রে সরকারি সুবিধা দেওয়ার ব্যবস্থা করুন।
বক্তারা আরও বলেন,আমরা কখনই ধর্ষকের পক্ষে নই সে যে-ই হোক না কেন। আমরা দেশের আইন ও বিচারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল তাই পার্বত্য চট্টগ্রামেও দেশের অন্যান্য জেলার মত বিচারিক কার্য্যের মাধ্যমে কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।প্রথার নামে অন্যায় ও অ-বিচার আমরা সমর্থন করি না।ইউপিডিএফ কে নিষিদ্ধ করে ইউপিডিএফ এর হোতা মাইকেল চাকমাকে গ্রেফতার করে তার সাজা নিশ্চিত করতে হবে।
পিসিসিপির নেতারা সরকারের নীরবতার কড়া সমালোচনা করে বলেন,পাহাড়ে যদি প্রশাসনের এতই সক্রিয় অবস্থান থাকে তাহলে বাঘাইছড়ি উপজেলার আমতলিতে কিভাবে বাঙালির ঘরবাড়ি ভাঙচুর এবং ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে উপজাতি সন্ত্রাসীরা?জবাব দিন?সুতরাং আমরা বলবো যত দ্রুত সম্ভব পাহাড়ে যৌথ বাহীনির অভিযান পরিচালনা করুন অথবা প্রশাসনকে শক্তিশালি করতে সকলের সমন্বয়ে একটি শক্তিশালি বাহীনি গঠর করুন।না হয় পরে প্রস্তাতে হবে।কারণ পাহাড়ে শুধু নিরীহ মানুষের উপর নয় প্রশাসনের গাড়িতে হামলা,প্রশাসনের লোকদের হত্যার ঘটনাও রয়েছে।অংসখ্য সৈনিক ও অফিসারদের জীবন দিতে হয়েছে। পাহাড়ে এ জাতীয় সহিংস কর্মকাণ্ড নির্মূল করতে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি এবং সেনাবাহিনীর প্রতি আহ্বান জানান জেএসএস, ইউপিডিএফসহ সব সশস্ত্র গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে চিরুনি অভিযান চালাতে।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন প্রধান অতিথি হিসেবে পিসিসিপির কেন্দ্রীয় সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন কায়েশ, প্রধান বক্তা হিসেবে, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক,মোঃ রাসেল মাহমুদ, বিশেষ অতিথি হিসেবে,পিসিসিপির কেন্দ্রিয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন,সম্প্রীতি ঐক্য জোটের সমন্বয়ক,থোয়াই চিং মং চাক, ঢাকা মহানগরের দপ্তর সম্পাদক নজরুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক মেহেদী হাসান জাকির,অর্থ সম্পাদক মুহিব্বুল্লাহ্ পারভেজসহ আরও অনেকে।


















