কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী ইউনিয়নের চিংড়ি জোন খ্যাত ফুলছড়ি মৌজায় প্রতি বছর হাজারো একর জমিতে সাদা সোনা খ্যাত বাগদা চিংড়ি চাষ হয়। এতে শতকোটি টাকা আয় হলেও চাষিদের নিরাপত্তা প্রদানের জন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা এ যাবত গ্রহণ করা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। ফের চিংড়ি ঘেরে চলছে পরিকল্পিত ডাকাতির ঘটনা।
সোমবার (৩ নভেম্বর) রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে উপজেলার খুটাখালী-ফুলছড়ি মৌজার ২টি চিংড়ি ঘেরে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এতে মাছ,জাল ও মোবাইলসহ প্রায় লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে সংঘবদ্ধ ডাকাতদল। ডাকাতের ছুড়া গুলিতে আহত হয়েছেন ৩ জন। তারা হলেন- সাইফুল, নাছির ও আবদুল্লাহ। তারা স্থানীয় জাফর সাহেবের চিংড়ি ঘেরের কর্মচারী বলে জানা গেছে। অপরদিকে শেয়ারহোল্ডার আবু তাহের ভয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় ডাকাতদল তার কাছ থেকে ২ টি মোবাইল ছিনিয়ে নিয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে ডাকাতির মাত্র আধঘন্টার মধ্যে কিভাবে র্যাব-পুলিশ ঘের এলাকা পরিদর্শন করেছে। তবে, এসময় ডাকাতরা পালিয়ে গেছে। ডাকাতির শিকার চিংড়ি ঘের সমুহের মধ্যে রয়েছে ফুলছড়ি মৌজার জাফর সাহেবের ঘোনা ও বড় নাইফেরঘোনা।
বিএনপি নেতা চিংড়ি ঘের মালিক এম জাফর আহমদ জানান, প্রতিদিনের ন্যায় আমার কর্মচারীরা ঘের পাহারা দিচ্ছিলেন। রাত যখন গভীর হয় তখন ২০/২৫ জনের অস্ত্রধারী ডাকাতদল ঘেরের বাসায় হানা দিয়ে মাছ, জাল ও মোবাইল লুট করে তার প্রায় লাখ টাকা ক্ষয়ক্ষতি করা হয়েছে বলে তিনি দাবী করেন। এসময় ডাকাতের ছুড়া গুলিতে ৩ কর্মচারি আহত হয়েছে। এমনকি ঘেরের শেয়ারহোল্ডার আবু তাহেরের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে ২টি মোবাইল।
তিনি আরো বলেন, ডাকাতির আধ ঘন্টা পর কিভাবে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলেন বুঝা মুসকিল। তাহলে কি এটি পরিকল্পিত ডাকাতি? এ ঘটনায় তিনি থানায় দারস্থ হবেন বলে জানান।
অপরদিকে বড় নাইফেরঘোনার নাজিম উদ্দীন মিন্টু বলেন, এ সময় তিনি চিংড়ি ঘেরে ছিলেন। হঠাৎ ডাকাতদের বেপরোয়া গুলিতে তিনি লোকজন নিয়ে নিরাপদে সরে যান। এনময় ডাকাতরা জাল বাসায় লুটপাট চালিয়ে লক্ষাধিক টাকা ক্ষয়ক্ষতি করেছেন বলে জানান।
স্থানীয় চাষিদের অভিযোগ, চিহ্নিত ডাকাত দলের তান্ডব ও নির্যাতনে চিংড়ি ঘেরে বিনিয়োগকৃত পুঁজি আহরণ করতে না পেরে বেশির ভাগ চাষি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন।
ফুলছড়ি মৌজায় প্রায় হাজার একর চিংড়ি ঘের ও লবণ মাঠ রয়েছে। এসব ঘেরে ইজারাদার, মালিক- চাষী মিলে প্রায় হাজার শ্রমিক কর্মচারী চিংড়ি ও লবণ চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। চলতি মৌসুমে ঘের এলাকায় ডাকাতদের হানা এটি প্রথম। বন্ধ রয়েছে ডাকাত সর্দারদের হাতে তাদের চাহিদা মতো মাসোহারা। তাহলে এটি পরিকল্পিত ডাকাতি নাকি চিংড়ি ঘের বিরোধের জের। এমনটা মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
খুটাখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আবদুর রহমান বলেন, ডাকাতরা চিংড়ি ঘেরে ডাকাতি ও লুটপাট করছে শুনেছি। এসব ডাকাত বাহিনীর ব্যাপারে উপজেলা পরিষদে আইন-শৃঙ্খলা বৈঠকে গ্রেফতারের জন্য বলা আছে।
চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ তৌহিদুল আনোয়ার বলেন, আমি শুনেছি ওইসব এলাকায় ডাকাতরা চিংড়ি ঘেরে তান্ডব ও লুটপাট চালায়। এসব ডাকাতদের গ্রেফতার ও অস্ত্র উদ্ধারে দ্রুত অভিযান চালানো হবে।


















