বুধবার , ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ১৯শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. জাতীয়
  2. রাঙামাটি
  3. খাগড়াছড়ি
  4. বান্দরবান
  5. পর্যটন
  6. এক্সক্লুসিভ
  7. রাজনীতি
  8. অর্থনীতি
  9. এনজিও
  10. উন্নয়ন খবর
  11. আইন ও অপরাধ
  12. ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী
  13. চাকরির খবর-দরপত্র বিজ্ঞপ্তি
  14. অন্যান্য
  15. কৃষি ও প্রকৃতি
  16. প্রযুক্তি বিশ্ব
  17. ক্রীড়া ও সংস্কৃতি
  18. শিক্ষাঙ্গন
  19. লাইফ স্টাইল
  20. সাহিত্য
  21. খোলা জানালা

বান্দরবানে পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে পাকা ধানের সুবাস

প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক, বান্দরবান
সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২৩ ৪:১৫ অপরাহ্ণ

পার্বত্য জেলা বান্দরবানের সবুজ পাহাড়ে ভাঁজে ভাঁজে শোভা পাচ্ছে এখন পাকা ধানের সুবাস। এই বছরের প্রাকৃতিক বিপর্যয় কারণে কিছু এলাকায় পাহাড় ধসে জুমের ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। তবে যারা জুমের আগাম অর্থাৎ এপ্রিল মাসে চারা রোপন করেছেন তাদের আশানুরূপ ফলন হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষিবিভাগ।
জুমিয়ারা সূত্রে জানা যায়, আদিকাল থেকে পাহাড়ের ঢালে সনাতন পদ্ধতিতে চাষাবাদ করে থাকেন পাহাড়ী অঞ্চলের বসবাসরত জনগোষ্ঠীরা। যার নাম জুম। এই জুম চাষ করে থাকেন জুমচাষীরা (জুমিয়ারা)। একই জমিতে ধানের চারা রোপণের পাশাপাশি লাগানো হয় ভুট্টা, ধানিয়া মরিচ, বেগুন, পাহাড়ি আলু, কাঁকরোল, মারফা, ঢেঁড়শ, কুমড়া, টকপাতা, ফুলসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাহাড়ি সবজির চারা। বিশেষ করে পাহাড়ে পদদেশে বসবাসকারী অধিকাংশ পাহাড়ীরা হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে জুমের উৎপাদিত ফসল দিয়ে বছর জুড়ে খাদ্য ও অর্থের যোগান হয় তাদের।

জুমিয়ারা জানান, জুমচাষীরা বিভিন্ন পাহাড়ে ঘুরে জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণ করে, মার্চের দিকে জঙ্গল পোড়ানো আর এপ্রিলে বীজ বপন শেষে সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর-এ ফসল ঘরে তোলার পালা। সেই উৎপাদিত ফসল উঠাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে জুমিয়ারা।

সরেজমিনে দেখা যায়, বান্দরবানের পাহাড়ী পথে আঁকাবাঁকা সড়কের দু’পাশে ধারণ করছে সবুজ পাহাড় জুড়ে জুমের সোনালি রঙ। জুম পাহাড়ে চূড়ায় বিশ্রাম ও উৎপাদিত ফসল রাখার জন্য তৈরি করা হয়েছে অস্থায়ী আবাসস্থল (জুমঘর)৷ সেখানে ধান কাটা শেষে জুমঘরেই তা মাড়াই করছে তারা। এভাবে প্রতিদিন ভোর থেকে দলবেঁধে মাথায় থুরুং (বেতের তৈরি ঝুড়ি) নিয়ে ধান কেটে ব্যস্ত সময় পার করছেন জুমিয়ারা।
চিম্বুক সড়কে যামিনী পাড়া জুম চাষি মেনপুং ম্রো বলেন, জুমের এবার প্রায় ৩ একর জায়গা জুড়ে ধান পাশাপাশি বিভিন্ন রকমারি ফসল লাগানো হয়েছে। এখন জুম পাহাড়ে ধানগুলো পেকে তা কাটতে শুরু করেছি। তবে শেষের দিকে মাত্রা অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে জুমের কিছু ধান মাটিতে চাপা পড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। তা নিয়ে কিছুটা দুশ্চিন্তায় ভুগতেছি।

একই এলাকার জুম চাষি কেমপ্রে ম্রো বলেন, বৈরী আবহাওয়া কারণে কিছু ধান মাটিতে হেলে গেছে, তা তুলতে কিছুটা কষ্ট হচ্ছে। তবে উপযুক্ত সময়ে চারা রোপন করায়, আমার জমিতে ফসলে তেমন ক্ষতি হয়নি। ভোর হলেই রোদ বৃষ্টি উপেক্ষা করে নারী-পুরুষ মিলে দলবেঁধে ধান কাটতে জুম পাহাড়ে নেমে পড়ছি।
বান্দরবান কৃষি বিভাগ তথ্য মতে, ২০২২-২৩ অর্থ বছরে ৮ হাজার ৩ শত ৭৮ হেক্টর জমিতে জুমের ধান আবাদ হয়েছিল। যার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২০ হাজার ২ শত মেট্রিকটন। এবারে চলতি ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে ৭ হাজার ৯ শত ৩৩ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। যার লক্ষ্যমাত্রা ১৯ হাজার ৮৭ মেট্রিকটন ধরা হয়েছে। যা গত বছরে তুলনায় এবার ২ মেট্রিকটন ফলন কম হয়েছে। তাছাড়া জেলায় ভারী বৃষ্টিরপাতের কারনে কিছু কিছু স্থানে জুম পাহাড় ধসে গেছে। এতে ফলন কিছুটা কম হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষি বিভাগ।
বান্দরবান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ-পরিচালক এম এম শাহ্ নেয়াজ বলেন, এপ্রিল মাসে শুরু দিকে জুমিয়ারা যেসব জুমে বীজ বপন করতে পেরেছে, সেসব স্থানে ধান ভালো হয়েছে। পরে যারা বীজ বপন করেছে, সেসব জুমের ধান কিছুটা বিলম্ব হতে পারে। তাছাড়া চলতি মৌসুমে ভারী বর্ষনে কারণে কয়েকটি এলাকা জুমের ধান ভেঙ্গে গেছে, নয়তো বা নষ্ট হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, প্রতিটি পাহাড়ে এখন জুমের ধান কাটার শুরু হয়েছে। প্রায় ৮০ শতাংশ স্থানীয় জাতের আবাদ করা ধানগুলো অনেক স্থানে কর্তন শুরু করেছে।

সর্বশেষ - আইন ও অপরাধ

error: Content is protected !!
%d bloggers like this: