আমার কাছে মনে হলো আল্লাহ আমার কাছে ফেরেশতা পাঠিয়ে দিছে। আমি গরিব মানুষ আইসবার(আইসক্রিম) বিক্রি করে কোনরকম জীবন পরিচালনা করছি। আমার একজন ছেলে সে মানুষের কাজ কাম করে। দীর্ঘদিন যাবত চোখে কিছু দেখতেছিলাম। তাই চিকিৎসা সহায়তার জন্য লংগদু সেনা জোন(মাইনী আর্মি ক্যাম্পে) দরখাস্ত করি। হঠাৎ গত পরশু আমাকে জোন থেকে আর্মি কল দিয়ে বলে আপনার চোখের অপারেশন করা হবে চলে আসেন। তখন আমি বিশ্বাস করতে পারছিলাম। আল্লাহ আমাকে এতো বড় সম্পদ ফিরিয়ে দিবে।
আমি খুশিতে জোনের গেইটে গেলে সেনাবাহিনী আমাকে ইবনেসিনা (রাবেতা) হাসপাতাল নিয়ে যায়। সেখানে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে আমার একটি চোখ অপারেশন করে লেন্স লাগিয়ে দিয়েছে সেনাবাহিনী। যা আমার পক্ষে কখনই করা সম্ভব হতোনা। আমি এখন দুনিয়ার আলো বাতাশ দেখতে পাচ্ছি আলহামদুলিল্লাহ। আমার ভাষা নাই আমি কি ভাবে সেনাবাহিনীর জোন কমান্ডার স্যারের প্রতি আর সেনাবাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবো।
তিনি আরো বলেন, অনেকেই বলে পাহাড়ে সেনাবাহিনী কেন? কি করে সেনাবাহিনী? নানান প্রশ্নের জবাবের মুখে রাখা হয় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে। ছোট থেকেই ৮০-৮৯ সনে আমরা যখন পার্বত্য অঞ্চলে আসি তখন হতে শুরু এপর্যন্ত সেনাবাহিনীর যে পরিমাণ সহযোগিতা পাহাড়ী বাঙ্গালীদের করেছে তা অতুলনীয়। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর স্নেহ ভালোবাসায়, মায়া-মমতায় এ পাহাড়ের সকল সম্প্রদায়ের মানুষ মায়ের চাদরে থেকে দৈনন্দিন জীবন পরিচালনা করে যাচ্ছি আমরা।
কথা গুলো বলছিলেন, রাঙ্গামাটির লংগদু উপজেলার কালাপাকুজ্জা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড ইসলামপুর এলাকার আব্দুল হালিম। এখন তিনি দুনিয়ার আলো বাতাশ দেখে মুগ্ধ।
আব্দুল হালিমের স্ত্রী ফিরোজা বেগম বলেন, আমিও অসুস্থ মানুষ। আমার পরিবারে আমার স্বামী একমাত্র উপার্জনকারী। দৈনন্দিন আইসক্রিম বিক্রি করে পরিবারের ভরণপোষণ আদায় করেন। দীর্ঘদিন যাবত চোখের সমস্যার কারণে প্রায় সংসারের বাতি নিবে নিবে অবস্থা। এতোদিন পরে আল্লাহ আমাদের দিকে ফিরে তাকাইছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী লংগদু জোনের প্রতি আমাদের পরিবার কৃতজ্ঞ থাকবে সারাজীবন। আল্লাহ আর্মি ক্যাম্পের বড় স্যার সহ সকল আর্মিদের বিপদ থেকে বাঁচিয়ে রাখুন।
লংগদু জোনের জোন অধিনায়ক লে.কর্নেল হিমেল মিয়া পিএসসি বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সর্বদা দেশের মানুষের জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে কাজ করে যাচ্ছেন। তারই ধারাবাহিকতায় মানব কল্যাণে সেনাবাহিনী সর্বদা সকল সম্প্রদায়ের মানুষের পাশে আছেন।