রাঙামাটি পার্বত্য জেলায় বিশ্ব মানবতার মুক্তির দিশারী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সিরাত প্রতিযোগিতার পুরুস্কার ও সনদ বিতরণী সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিযোগিতায় দুইটি ক্যাটাগরিতে তিনজন করে ছয়জন বিজয়ীদের হাতে অতিথিবৃন্দ ক্রেস্ট, সনদপত্র ও মূল্যবান বই তুলে দেন।
বুধবার (৭ মে) সকাল ১২টায় রাঙ্গামাটি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মিলনায়তনে সীরাত প্রতিযোগিতার সনদ ও পুরুস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে ইফা’র উপপরিচালক মুহাম্মদ ইকবাল বাহার চৌধুরীর সভাপতিত্বে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, রাঙ্গামাটি আল-আমিন ইসলামিয়া ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা নুরুল আলম ছিদ্দিকি, রাঙ্গামাটি প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ার আল হক।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাঙ্গামাটি আল-আমিন ইসলামিয়া ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা নুরুল আলম ছিদ্দিকি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন দিক নির্দেশনামূলক ও উৎসাহপূর্ণ বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি ভবিষ্যতে এই ধরনের আয়োজন আরো বৃদ্ধি ও অধিক অংশগ্রহণমূলক করার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন।
বিশেষ অতিথি বক্তব্যে রাঙ্গামাটি প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ার আল হক বলেন, বর্তমানে বিশ্বের প্রধান সমস্যা হচ্ছে নেতৃত্বের সমস্যা। বিশ্বে এখন টাকা কড়ির সমস্যা নেই, বিজ্ঞানের সমস্যা নেই, মানুষের শিক্ষা দীক্ষার অভাব নেই কিন্তু নেতৃত্বের বড় অভাব। আর সঠিক নেতৃত্ব দিতে পারছে না এমন মানুষেরা; যারা রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আদর্শ অনুসরণ করতে পারেনি। উনার অনুসরণ ধারণ করে যদি নেতৃত্ব দিতে পারতো তাহলে বিশ্বে আজ যুদ্ধ, কাটাকাটি, মারামারি দেখতে হতো না। হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর কথাগুলি এতই আকর্ষণীয় ছিল। তিনি মানুষকে এমন ভাবে বুঝাতে পারতেন, তৎকালীন যে সময়টিতে উনাকে আল্লাহ পাক পাঠিয়েছিলেন। তখন আরবে মানুষের কাছে দুইটা জিনিস ছিল। একটি হলো ক্ষমতা আর অন্যটি হলো শক্তি। তারা সারাক্ষণ তলোয়ার কোমরে নিয়ে ঘুরতো। সেই সময়ে সৈনিকের কোন কমিউনিটি ছিল না। সবাই নিজেই একেক জন সৈনিক। কারো সাথে কারো কথার অমিল হলেই তলোয়ার দিয়ে আঘাত শুরু করত। এইরকম রাগান্বিত সমাজের মানুষগুলোকে হযরত মুহাম্মদ (সা.) তিনি তার কথার দ্বারা শান্ত করেছিলেন।
এসময় ইফা’র উপপরিচালক মুহাম্মদ ইকবাল বাহার চৌধুরীর বিজয়ীদের অভিনন্দন ও যারা বিজয়ী হতে পারেননি তাদের অনুপ্রেরণা দিয়ে বলেন, প্রতিযোগিতাটি মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর জীবন ও শিক্ষা সম্পর্কিত জ্ঞান বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের ইসলামিক মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ করতে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। আজকে সারা বাংলাদেশে একই প্রশ্নের জেলা পর্যায়ের সিরাত প্রতিযোগিতা-২০২৫। বাংলাদেশের ৬৪ জেলার ইসলামিক ফাউন্ডেশন জেলা কার্যালয় থেকে আমরা দুইটি ক্যাটাগরিতে তিনজন করে ছয়জন বিজয়ীদের নাম বিভাগীয় পর্যায়ের জন্য প্রেরণ করবো। বিভাগীয় পর্যায়ে তোমাদের অংশ গ্রহণ করতে হবে।
তিনি বলেন, যারা বিজয়ী হয়েছেন তাদেরকে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে আমরা ক্রেস্ট, সনদ ও মূল্যবান কিছু বই পুরস্কার হিসেবে দিচ্ছি। বিভাগীয় পর্যায়ে বিজয়ীরা ক্রেস্ট, সনদ ও মূল্যবান বইসহ সাথে ২০ হাজার টাকা পুরুষ্কার পাবেন। এজন্য পড়া-লেখার কোন বিকল্প নাই। আমাদের পাঠ্যপুস্তকের বাহিরেও যে অনেক জ্ঞানের ভান্ডার রয়েছে যা আমাদের জানা দরকার, শিখা দরকার। যারা এই প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করেছো এবং যারা বিজয়ী। সবার সুযোগ আছে বিভাগীয় পর্যায়ে অংশ গ্রহণ করার। বিভাগীয় পর্যায়ে কেউ উত্তির্ন হয়। তাহলে জাতীয় পর্যায়ে অংশ গ্রহণ করার সুযোগ রয়েছে। সেজন্য ভালোভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে।
আলোচনা সভায় কৃষি ও বন আবাসিক মসজিদের ইমাম মাওলানা আশহাদুল ইসলামের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ফিল্ড সুপারভাইজার মো. পেয়ার আহমদ, শিক্ষক সমিতির সভাপতি মাওলানা মো. শামসুল আলম, ভেদভেদী রিসোর্স সেন্টারের সাধারণ কেয়ারটেকার মাওলানা মিরাজ উদ্দিন, সদর উপজেলা কার্যালয়ের মডেল কেয়ারটেকার মো. মাহবুব আলম, মডেল কেয়ারটেকার মো. আলমগীর হোসেন প্রমুখ।


















