বান্দরবানের বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি প্রসন্ন কান্তি তঞ্চঙ্গ্যা (৭১) মৃত্যুতে শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পার্বত্য উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা এবং তাঁর পরিবার। এবং একইভাবে তাঁর নিজ ফেইসবুক আইডি থেকে শোক ও সৎগতি কামনা করেছেন সার্কেল চীফ ব্যারিস্টার রাজা দেবাশীষ রায়। শোক জানিয়েছেন বান্দরবান জেলা পরিষদ ও।
বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ভোর ৬ টায় চট্টগ্রামের ইমপেরিয়াল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। এ বিষয়টি তাঁর মেজ ছেলে এমিল তঞ্চঙ্গ্যা নিশ্চিত করেছেন। তিনি ১৯৫০ সালে, রবিবার, ১৬ ই নভেম্বর বিলাইছড়ি উপজেলায় জন্মগ্রহণ করে। যৌবনের প্রথম অরুণ প্রভায় স্বপ্ন দেখেছিলেন রাজনৈতিক আন্দোলন সংগ্রমের মাধ্যমে জুম্ম জাতির স্বাধিকার, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তির। সে ব্রতে তরুণ বয়সে কলেজ জীবনে যোগ দিয়েছিলেন শান্তিবাহিনীতে। পরবর্তিতে পার্বত্য রাজনীতির পরিবর্তিত বিশেষ প্রেক্ষাপটে গেরিলা জীবন ইস্তফা দিয়ে যোগ দিয়েছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামি লীগে।
১৯৮৯ সালে বান্দরবান পার্বত্য জেলা স্থানীয় সরকার পরিষদে তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায় থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সদস্য নির্বাচিত হন প্রসন্ন কান্তি তঞ্চঙ্গ্যা। এরপর ১৯৯১ সালে জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এবং ১৯৯৮ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।বান্দরবানের রাজনীতি ও সমাজ জীবনে তার অবদান ছিল অনন্য। তিনি ছিলেন সবার কাছে অভিভাবকের মতো— আন্তরিক, সহজ-সরল ও স্নেহময়।
১৯৯৬ সালের ১৯ মার্চ নিজ বাড়ির সামনে সন্ত্রাসীদের গুলিতে তিনি আহত হন এবং তখন থেকে হুইলচেয়ারে চলাফেরা করতেন। পরবর্তীতে ২০১৪ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বান্দরবান-৩০০ আসনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিলেও পরবর্তীতে সক্রিয় রাজনীতি থেকে দূরে সরে যান। তবে তিনি বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় কার্যক্রমে যুক্ত ছিলেন।
প্রসন্ন কান্তি তঞ্চঙ্গ্যা তিন ছেলের জনক। বড় ছেলে মিকন তঞ্চঙ্গ্যা উপসচিব বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়ায় বাংলাদেশের দূতাবাসে কর্মরত। মেজ ছেলে ব্যবসায়ী এবং ছোট ছেলে একজন বৌদ্ধ ভিক্ষু।তাঁর বড় ছেলে দেশে ফেরার পর রেইচা সাতকমল পাড়ার শ্মশানে তার দাহক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। প্রসন্ন কান্তি তঞ্চঙ্গ্যার মৃত্যুতে বান্দরবানের রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তার প্রস্থান পুরো জেলার জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
এতে আরও শ্রদ্ধা, শোক, সৎগতি ও সমবেদনা জানিয়েছেন বাংলাদেশ তঞ্চঙ্গ কল্যাণ সংস্থা কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি সহ তঞ্চঙ্গ্যা কল্যাণ সংস্থার বান্দর বান সদর, রোয়াংছড়ি, আলীকদম, নাক্ষ্যংছড়ি,কক্সবাজার, রাজস্বলী, দেবতাছড়ি- রস্যাবিলি,রাঙ্গামাটি সদর,বিলাইছড়ি, ফারুয়া অঞ্চল,রেইচা উচ্চ বিদয়ালয়, মিজোরাম তঞ্চঙ্গ্যা ছাত্র ইউনিয়নসহ অন্যান্য সামাজিক,সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতা ও নেতৃবৃন্দ।