মঙ্গলবার , ১৭ মে ২০২২ | ১৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. জাতীয়
  2. রাঙামাটি
  3. খাগড়াছড়ি
  4. বান্দরবান
  5. পর্যটন
  6. এক্সক্লুসিভ
  7. রাজনীতি
  8. অর্থনীতি
  9. এনজিও
  10. উন্নয়ন খবর
  11. আইন ও অপরাধ
  12. ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী
  13. চাকরির খবর-দরপত্র বিজ্ঞপ্তি
  14. অন্যান্য
  15. কৃষি ও প্রকৃতি
  16. প্রযুক্তি বিশ্ব
  17. ক্রীড়া ও সংস্কৃতি
  18. শিক্ষাঙ্গন
  19. লাইফ স্টাইল
  20. সাহিত্য
  21. খোলা জানালা

২৬ বছর পর সভাপতি পদ নিয়ে লড়াই হচ্ছে / রাঙামাটি আ’লীগের সম্মেলন: রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তাপ

প্রতিবেদক
সুশীল প্রসাদ চাকমা, রাঙামাটি
মে ১৭, ২০২২ ৯:৩০ অপরাহ্ণ

দীর্ঘ প্রায় ১০ বছর পর আগামী ২৪ মে অনুষ্ঠিত হবে রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন। এর সর্বশেষ ২০১২ সালে ৮ ডিসেম্বর সম্মেলন হয়েছিল। এরপর মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় পরবর্তী সম্মেলন হওয়ার কথা ২০১৯ সালের ২৫ নভেম্বর। কিন্তু নির্ধারিত দিন কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত থাকতে না পারায় তা স্থগিত রয়ে যায়।

এদিকে জেলা আওয়ামী লীগের আসন্ন সম্মেলন ঘিরে স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ছে।

দলটির বাইরেও নানা মহলের উঁকিঝুকি লক্ষ্য করা যাচ্ছে এ সম্মেলন নিয়ে। এবার সম্মেলনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক- দুটি পদেই সরাসরি ভোট হবে। দুটি পদেই লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি। উভয় পদে লড়ছেন ২ জন করে ৪ শক্তিশালী প্রার্থী। এর আগের সম্মেলনগুলোতে শুধু সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচন হয়েছে। ১৯৯৬ সালের সম্মেলনের পর থেকে বিনাপ্রতিদ্বন্ধিতায় এককভাবে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন দীপংকর তালুকদার। বর্তমানে যিনি রাঙামাটির সংসদ সদস্য ও খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি। তবে ১৯৯৬ সালের সম্মেলনে তীব্র প্রতিদ্বন্ধিতার মধ্য দিয়ে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। সেই থেকে দীর্ঘ ২৬ বছর পর আবার লড়াই হচ্ছে সভাপতি পদ নিয়ে। পদটির জন্য এবারও লড়বেন দীপংকর।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এবার সম্মেলনের মাধ্যমে রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে পরিবর্তন আনতে চান নেতাকর্মীদের অধিকাংশই। তারা ভাঙতে চান একক নেতৃত্বের আধিপত্য। তাই তাদের এখন লক্ষ্য আসন্ন সম্মেলন। সভাপতি পদে বেছে নেওয়া হয়েছে শক্তিশালী প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সহ-সভাপতি ও পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমাকে। তিনি চ্যালেঞ্জ করে লড়বেন দীর্ঘ ২৬ বছর ধরে সভাপতি পদে আঁকড়ে থাকা দীপংকর তালুকদার এমপির সঙ্গে। জিততে ইতোমধ্যে মাঠে নেমেছেন প্রার্থীরা।

এ প্রসঙ্গে নিখিল বলেন,

দলের নেতাকর্মী ও কাউন্সিলরদের প্রস্তাবের প্রতি সম্মান রেখে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে প্রার্থী হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যা ইতোমধ্যে প্রকাশ্য ঘোষণা দিয়েছি। চূড়ান্ত ফলাফল নির্ধারণের ক্ষমতা দলীয় কাউন্সিলরদের। যা প্রকাশ পাবে আসন্ন সম্মেলনে। জয় নিয়ে আমি দৃঢ় আশাবাদী। কারণ আমার প্রতি নেতাকর্মীদের অগাধ বিশ্বাস ও সহানুভূতি রয়েছে। আর তাদের সবার প্রতি আমার মনে জড়িয়ে আছে গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।

সূত্র জানায়, সম্পাদক পদে বর্তমান দায়িত্বসীন মো. মুছা মাতব্বর এবং সাবেক সম্পাদক মো. কামাল উদ্দিন প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। দু’জনেই নিজেদের প্রার্থিতার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। জেলা আওয়ামী লীগের এবার সম্মেলনে কাউন্সিলর হয়েছেন ২৪৬ জন। তারাই নির্ধারণ করবেন জেলা আওয়ামী লীগের সামনের নেতৃত্ব। যার সম্ভাবনার আভাস ক্রমেই স্পষ্ট হয়ে উঠছে।

দলীয় নেতাকর্মী অনেকের মতে, ১৯৯৬ সালের সম্মেলনের পর থেকে একমাত্র প্রার্থী হয়ে দীপংকর তালুকদার এমপি বিনাপ্রতিদ্বন্ধিতায় সভাপতি নির্বাচিত হওয়ায় এ যাবৎ দলের ভেতর বিস্তার ঘটেছে একক নেতৃত্বের একচ্ছত্র প্রভাব ও আধিপত্য। রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদসহ হস্তান্তরিত সরকারি বিভিন্ন দপ্তর ও প্রতিষ্ঠানের টেন্ডারের কাজ ভাগাভাগি, চাকরিতে নিয়োগ, খাদ্যশস্য বরাদ্দের বিপরীতে আপদকালীন প্রকল্পসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন সীমিত সংখ্যক মুষ্টিমেয় লোকজন। অথচ বরাবরই সবক্ষেত্রে বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন দলের প্রকৃত ত্যাগী, যোগ্য ও পরীক্ষিত নেতাকর্মীরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের একাধিক নেতাকর্মী বলেন,

প্রতিবারই দলীয় কোনো রকম আলোচনা ও সিদ্ধান্ত ছাড়াই একক সিদ্ধান্তেই নিজের পছন্দের লোক জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্য নিয়োগ দিয়ে আসছেন একই ক্ষমতাধর ব্যক্তি। কেউ কেউ এসব পদে দফায় দফায় মেয়াদে নিয়োগ পেয়ে আসছেন। রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরী এর আগে পরপর দু’দফা মেয়াদে সদস্য নিয়োগ পান। তৃতীয় মেয়াদে পেয়েছেন চেয়ারম্যান।
তার আগে বৃষ কেতু চাকমাকে এক মেয়াদে সদস্য এবং পরবর্তী মেয়াদে চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মুছা মাতব্বর পরপর দু’দফা মেয়াদে জেলা পরিষদের সদস্য নিয়োগ পান। বরকলের সবির কুমার চাকমা ও বিলাইছড়ির রেমলিয়ানা পাংখোয়া পরপর দু’দফায় জেলা পরিষদের সদস্যপদ পেয়েছেন। একাধিক মেয়াদে সদস্যপদ লাভ করেছেন কাপ্তাইয়ের অংসুই ছাইন চৌধুরীও।

এভাবে তেলের মাথায় তেল পেয়ে বিস্তর সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন দলের মুষ্টিমেয় কয়েকজন। তারা জেলা পরিষদসহ হস্তান্তরিত সরকারি বিভিন্ন দপ্তর, প্রতিষ্ঠান ও বিভাগের ঠিকাদারি কাজ ও আপদকালীন কর্মসূচির খাদ্যশস্য ভাগাভাগি, মোটা অংকের ঘুসের বিনিময়ে চাকরিতে নিয়োগ, আত্মীয়করণসহ বেপরোয়াভাবে অনিয়ম, দুর্নীতিতে জড়িত।

জেলা পরিষদকে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করা হয়েছে। ফলে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হতে চলেছে। বর্তমানে তারা অঢেল অর্থসম্পদের মালিক বনে গেছেন। রাঙামাটি শহরে একাধিক বাড়ি করেছেন। জেলা পরিষদের একজন সাবেক চেয়ারম্যান শুধু রাঙামাটি শহরে কয়েকটি বাড়ি করেছেন এবং তার নিকটাত্মীয় ৪৪ জনকে সরকারি চাকরিতে নিয়োগ দিয়েছেন। জেলা পরিষদের ঠিকাদারি কাজ ভাগাভাগি করে দেন জেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক মো. মুছা মাতব্বর। মোটা অংকের ঘুসের বিনিময়ে চাকরিও দেন তিনি। বর্তমানে তার অঢেল বিত্ত-বৈভবের পাহাড়। এসব বিষয় সুষ্ঠু তদন্তে স্পষ্ট হয়ে যাবে।

অথচ চরম বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন দলের সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতাকর্মীরা। ফলে বঞ্চিতদের মনে দিন দিন ক্ষোভ বেড়েই চলেছে। যে কারণে এবার সম্মেলনে অধিকাংশই কাউন্সিলর গণতান্ত্রিকভাবে সরাসরি ভোটে জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে পরিবর্তন আনার পক্ষে মত দিচ্ছেন। যার জবাব গোপন ব্যালটেই দেওয়া হবে।

দীর্ঘ আড়াই বছর স্থগিত থাকার পর শেষ পর্যন্ত আগামী ২৪ মে অনুষ্ঠিত হচ্ছে রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন। এতে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সাধারণ সম্পাদক রেল, যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের প্রধান অতিথি থাকবেন।

গত ২১ মার্চ অনুষ্ঠিত জেলা আওয়ামী লীগের তৃণমুল বর্ধিত সভায় উপস্থিত প্রধান অতিথি দলটির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ এমপি এ সম্মেলনের সময়সূচি ঘোষণা করেন। এ সময় হানিফ ছাড়াও দলটির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা ও উপ-প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম আমিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মুছা মাতব্বর বলেন, সম্মেলন হওয়ার কথা ২০১৯ সালের ২৫ নভেম্বর। কিন্তু এর সব প্রস্তুতির একেবারে শেষ পর্যায়ে কেন্দ্রীয় নেতারা আসতে না পারায় তা স্থগিত করা হয়। পরে দেশে বৈশ্বিক প্রাণঘাতী করোনা মহামারি বিস্তারে মাঠে ময়দানে যাবতীয় কর্মসূচি বন্ধ থাকায় এতদিন সম্মেলন অনুষ্ঠানের সম্ভব হয়নি।

বর্তমানে পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক পর্যায়ে। তাই কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী এবারের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সম্মেলন সফল করতে আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি চলছে জোরেশোরে। সম্মেলনে সভাপতি ও সম্পাদক পদে সরাসরি ভোট হবে। সভাপতি ও সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন দুইজন করে চারজন।

জেলা আওয়ামী লীগ এর দেওয়া তথ্যমতে ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকার কথা  আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপির। উদ্ধোধক হিসাবে উপস্থিত থাকার কথা আওয়ামীলীগের প্রেসেডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপির।, বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকার কথা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহাবুব উল-আলম হানিফ  ও ড. হাসান মাহমুদ এমপির।

এ সংক্রান্ত আরো খবর

প্রার্থীতা প্রত্যাহার করবে না নিখিল; ২৬ বছর পর ভোট করতে হবে দীপংকরকে

সর্বশেষ - আইন ও অপরাধ

আপনার জন্য নির্বাচিত
%d bloggers like this: