রাঙামাটির জুরাছড়ি উপজেলার মৈদং ইউনিয়নের দুর্গম পাহাড়ি গ্রামগুলোতে ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। ইউনিয়নের আমতলা গ্রামে ৮ বছরের এক শিশুর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
এ গ্রামে বিভিন্ন বয়েসের আরো ৬০-৭০ জন আক্রান্তের খবর পাওয়া গেছে। খোঁজ নিয়ে জান গেছে, জুরাছড়ি উপজেলার হতে ২৭ কিলোমিটার প্রায় দূরে মৈদং ইউনিয়নের আমতলা গ্রাম। উপজেলা হতে পাহাড়ি পথে সেখানে পৌঁছাতে ৬-৭ ঘন্টা সময় লেগে যায়। এ গামে ৪৫ পরিবার বসবাস করে।
আমতলা বাদলহাটছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক মঙ্গল চাকমা বলেন, গেল কয়েক দিন দফায় দফায় বৃষ্টি পর এই ডায়রিয়া দেখা দিয়েছে।
তিনি আরো বলেন, পাড়ায় কান্তি চাকমার মেয়ে ২য় শ্রেণীর ছাত্রী রাঙাবি চাকমা ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। এলাকার স্থানীয় কার্বারী ও ওয়ার্ড সদস্য রহিনী কুমার চাকমা বলেন, পাড়ায় প্রতিটি ঘরে এক বা একাধিক ডায়রিয়াই আক্রান্ত রয়েছে। শুধু ডায়েরি নয়, এর পাশাপাশি জ্বরের প্রকোপও বাড়ছে।
যোগাযোগ ব্যবস্থা অনুন্নত হওয়ার কারণে উপজেলায় রোগীদের আনা সম্ভব হচ্ছে না।
জুরাছড়ি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ভর্তি দুই বছরের শিশু অমর শান্তি চাকমার মা সঞ্জারিকা চাকমা বলেন, তার ছেলে বুধবার সকাল থেকে ৮-৯ বার পায়খানা হওয়ার পর দুর্বল হয়ে পরে। এ সময় ব্র্যাকের দুই কর্মীর আর্থিক সহযোগিতা ও পরামর্শে রাত ১১ টায় বাড়ী থেকে রওনা করি। ভোর ৪ টায় পৌঁছাই। এখন একুঁ ভালো আছে ছেলেটা। আক্রান্ত পাড়ার ভুবন জয় সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীর ছাত্র স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বেডে দুর্বল হয়ে পরে আছে। তিনি বলেন, বাড়ীতে গিয়ে সেও আক্রান্ত হয়েছে।
মৈদং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাধনা নন্দ চাকমা বলেন, ডায়রিয়ায় আক্রান্তের খবর পেয়েছি। সার্বিক বিষয়ে খোঁজখবর রাখছি।
স্বাস্থ্য বিভাগের একটি টিম দ্রুত পর্যাপ্ত ঔষধসহ পাড়াবাসীদের পাশে দাঁড়ানো দরকার বলে জানিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ অনন্যা চাকমা। তিনি বলেন, মৈদং ইউনিয়নসহ কিছু কিছু পাড়া থেকে ৮ জন ডায়রিয়া রোগী এসেছে। ইতোমধ্যে সেখানে একটি মেডিকেল টিম পাঠানো হয়েছে। শনিবার একটি দক্ষ ডাক্তারের নেতৃত্বে মেডিকেল টিম যাচ্ছে। তারা সেখানে ডায়েরি পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান করবে।