তাঁরা ভিন্ন রাজনীতি করেন। ভিন্ন মতের কথা বলেন। এক সাথে দেখা যায় না এদের সহজে। কিন্তু তাঁরা ঢাবিয়ান। এদের মধ্যে আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যাতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় (সন্তু)লারমা, রাঙামাটি সংসদ দীপংকর তালুকদার, সাবেক যুগ্ম জজ বর্তমান বিএনপি কেন্দ্রীয় ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক এড দীপেন দেওয়ান।
সব ভুলে আজ ঢাবিয়ান পরিচয়ে তাঁরা এক মঞ্চে বসলেন। শুনলেন একে অপরের বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মৃতিচারণের কথা। সন্তু লারমা দীপংকর তালুকদার ছাড়াও বিভিন্ন কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করা সাবেক বর্তমান শিক্ষক, বিভিন্ন সরকারী বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে গুরুত্ব পদে কর্মরত পাহাড়ি ঢাবিয়ান যোগ দেন এ তারকার মিলন মেলায়।
উল্লেখযোগ্য তারকাদের মধ্যে ছিলেন গৌতম দেওয়ান, মংসানু চৌধুরী, বাঞ্চিতা চাকমা, বৌধিসত্ব দেওয়ান, ড. সুধীন কুমার চাকমা, পরিমল চাকমা, আরতি চাকমা, এড জ্ঞানেন্দু বিকাশ চাকমা, সুপ্রদীপ চাকমা, প্রসেনজিত চাকমা, কীর্তি নিশান চাকমা, অশোক কুমার চাকমা সহ আরো অনেকে।
শুক্রবার রাঙামাটির বার্গী লেক ভেলীতে অনুষ্ঠিত ১ম পাহাড়ি ঢাবিয়ান পুনর্মিলনীতে পাহাড়ি তারকদের সম্মিলন ঘটে।
অনুষ্ঠানে কোন রাজনৈতিক বক্তব্য ছিল না। ছিল আনন্দ আয়োজন। পুনর্মিলনীতে যোগ দেন দেশের গুরুত্বপুর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করা সাবেক ও বর্তমান ২ শতাধিক পাহাড়ি ঢাবিয়ান।
পুনর্মিলনীর দিনে দিন ব্যাপী অনুষ্ঠানের মধ্যে ছিল আলোচনা, স্মৃতিচারণ, নাচ, গান, খেলাধুলা। পাহাড়ের বিশিষ্টজনদের বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে স্মৃতিচারণে শুনতে সবাই ছিলেন শ্রোতা।
খাগড়াছড়ি সরকারী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ড. সুধীন কুমার চাকমা বলেন, জীবনে এ ধরণের একটি মিলন মেলার দেখার অপেক্ষায় এতদিন ছিলেন। এ মিলন মেলা আমাকে ধন্য করেছে। এ বয়সে এসে এ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারাটা সত্যিই সৌভাগ্যর।
পাহাড়ি নারীদের মধ্য সর্ব প্রথম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ও স্নাতোকত্তর সম্পন্ন করা আরতি চাকমা বলেন, এ বয়সে এসে এ তারকার মিলন দেখে নিজেকে ধন্য মনে করছি। এটি আগামী প্রজন্মের অনুপ্রেরণা হবে।
স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে দীপংকর তালুকদার এমপি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ করার সময় একদিন মারামারিতে লিপ্ত হই। পাল্টা হামলার ভয়ে আতংকে থাকতাম। তখন আমার পাহাড়ি ঢাবিয়ানরা আমার পাশে ছিল। এরা ছিল বলে আমার মনোবল বাড়ে। পরে দেখি আমাকে সবাই সমীহ করে চলে।
খাগড়াছড়ি রাঙামাটি, বান্দরবান থেকে পুর্নমিলনীতে যোগ দেন ঢাবিয়ানরা। অনুষ্ঠানে সন্তু লারমা, এড জ্ঞানেন্দু বিকাশ চাকমাসহ সিনিয়র ঢাবিয়ানদের ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠান শুরুতে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্যে দিয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এরপর কবুতর উড়িয়ে পুনর্মিলনীর শুভ সুচনা করা হয়।