বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের সহযোগিতায় ও পার্বত্য ভিক্ষু পরিষদের আয়োজনে বান্দরবানে তিনদিন ব্যাপী ২য় তম পার্বত্য চট্টগ্রামে বুদ্ধ ভিক্ষু সম্মেলন শুরু হয়েছে।
এই উপলক্ষে শুক্রবার (১৭) সকালে বান্দরবান কেন্দ্রীয় রাজগুরু বৌদ্ধ বিহার থেকে ধর্মীয় মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হয়।
শোভাযাত্রাটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ইনস্টিটিউ এসে শেষ হয়।
এসময় বিভিন্ন বিহার থেকে আগত পার্বত্য চট্টগ্রামে শতাধিক বৌদ্ধ ভিক্ষু অংশ নেন। পরে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় ভিক্ষু সম্মেলন। হল রুমে এক আলোচনা সভা আয়োজন করেন।
সভায় বুদ্ধ কল্যাণ ট্রাস্টে বান্দরবান ট্রাস্ট হ্লা থোয়াই হ্রী সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি বক্তব্যে বীর বাহাদুর বলেন, একসময় ধর্মীয় কাজ করতে গিয়ে দায়ক-দায়িকারা অনেক সময় দ্বিধা-দ্বন্দ্বের লিপ্ত হতে হয়। বর্তমানে তিন পার্বত্য জেলা ভিক্ষু সংঘে যে মৈত্রী ও সুসম্পর্ক গড়ে উঠেছে। এতে করে বুদ্ধ ধর্মের অনুসারীরা বেশ আনন্দের উৎসাহ মধ্য দিয়ে নিজেদের ধর্মকে সম্মান জানাতে পারছে।
ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীরা নিজের মাতৃভাষা প্রসঙ্গে টেনে তিনি বলেন, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীরা তাদের নিজস্ব ভাষা বলতে পারলেও বেশিরভাগ লিখতে পড়তে জানে না। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব মায়ের ভাষা শিখার জন্য প্রচলন করেছেন। মারমা, চাকমা ত্রিপুরাসহ তাদের অক্ষর জ্ঞান সম্পর্কে ধারণা পেতে নিজস্ব ভাষা বই বর্তমান সরকার ছাপিয়ে দিয়েছেন। যার যার মাতৃভাষা শিক্ষা শুরু হয়েছে, তবে কিছুটা শিক্ষক সংকট আছে। সেটি কাটিয়ে উঠতে বেশিদিন লাগবে না বলে যোগ করেন মন্ত্রী।
ধর্মের ট্রাস্ট গঠন প্রসঙ্গ টেনে সম্পর্কে তিনি বলেন, বর্তমান সরকার বুদ্ধ, খ্রিস্টান, হিন্দু সমাজের জন্য তাঁদের রীতি নীতিকে আরো এগিয়ে নিতে পারে সেজন্য কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করে দিয়েছে। যার ফলে যার যার ধর্মকে সুন্দরভাবে পালন করতে পারছি।
তিনি ধর্মের নৈতিক শিক্ষা প্রসঙ্গে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা বুদ্ধ ধর্মালম্বীরা অনেকে বিহার যেতে চাই না। তাছাড়া অনেকেই আছেন, তাদের মা-বাবা ছেলেমেয়েদের বিহার নিয়ে যেতে বিব্রতকর ভোগে। এই থেকে তাদের ছেলেমেয়েরা একসময় বড় হয়ে ধর্মের নৈতিক শিক্ষা সম্পর্কের একেবারে ধারণা থাকবে না। তাই সকল বুদ্ধ ধর্মাবলম্বী মা-বাবাদের প্রতি ধর্মের বাণী সম্পর্কে অবগত করার জন্য তার ছেলেমেয়েদের বিহারে নিয়ে যাওয়া অনুরোধ করেন।
এসময় পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা সহ বিভিন্ন বৌদ্ধ বিহার থেকে আগত শ্রমণ ও দায়ক- দায়িকারা উপস্থিত ছিলেন।