উঁচু নিচু ছোট বড় অসংখ্য পাহাড়ের সমাবেশে ভরপুর পাহাড়ি জনপদ।
এই পাহাড়ের নানা দুর্গমতা আর ভৌগোলিকগত প্রতিকূলতার মাঝেও পাহাড়ের বাস্তবায়িত হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয় প্রকল্পের ঘরগুলো।
ইতিমধ্যে অনেক ঘর ও ভুমিহীন পরিবার বুঝে পেয়েছেন। ঘর বাকিরা বুঝে পাওয়ার অপেক্ষায়।
প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয় প্রকল্পের মধ্যে থেকে ১ম ২য় ৩য় পর্যায়ের অংশ থেকে ঘর বুঝে পেয়েছেন ১৪৭৭ টি ভুমি ও ঘর হীন পরিবার। এ ঘরগুলো নির্মাণে বড় প্রতিকুলতা ছিল পাহাড়ের ভৌগলিকগত দুর্গমতার সমস্যা। দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলে যোগাযোগ অসুবিধা জন্য পরিবহন খরচ বেশি হওয়ায় কিছুটা বেগ পেতে হলেও ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে ৪র্থ ধাপে ঘর নির্মাণ কাজ। যা
আগামীকাল ২২ মার্চ প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সিং এর মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের মধ্যে দিয়ে উপকারভোগী পরিবারে কাছে হস্তান্তর করবেন।
কাউখালি উপজেলার শামুকছড়ি ইউনিয়নের অন্ধ রেমা মারমা বলেন, আগে আমাদের ঘর ভাঙা ছিল বৃষ্টি হলে পরতো আমাদের খুব হতো। এখন প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ঘর পেয়ে আমাদের খুব উপকার হয়েছে। আমরা খুব খুশি হয়েছি, আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসির মঙ্গল কামনা করি।
একই উপজেলার কলমপতি ইউনিয়নের অং সিং মারমা বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমার পরিবারকে ঘর করে দিয়েছে এতে আমরা খুব খুশি হয়েছি। শেখ হাসিনাকে অনেক ধন্যবাদ। নতুন পাকা ঘর পেয়ে আমরা এখন অনেক সুখে আছি।
পাহাড়ের ঘরগুলো সফলভাবে বাস্তবায়ন করতে নিরলস কাজ করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা।
কাউখালি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সামশু দৌহা চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে ঘর পেয়ে উপকারীরা খুব খুশি। তারা সবাই প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছে। তবে পার্বত্য অঞ্চলে যোগাযোগ অসুবিধা জন্য পরিবহন খরচটা বেশি হয়। এই খরচটা আমরা জনপ্রতিনিধিরা মিলে বহন করে থাকি। যদি আগামীতে পার্বত্য অঞ্চলের কথা বিবেচনা করে আগামীতে এই বরাদ্দ ক্ষেত্রে নতুন কিছু যেন পরিবহন ক্ষেত্রে সংযোগ করা যায় এটা অনুরোধ রাখছি।
কাউখালি নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দা সাদিয়া নূরীয়া বলেন, পার্বত্য অঞ্চলে কাজ করা আর সমতলে কাজ করা অনেক পার্থক্য রয়েছে। যার কারণে আমরা সব ঘরগুলোকে একসাথে করতে পারি না। আর দুর্গম পাহাড়ি এলাকাকেও বাদ দিতে পারি না। কারণ সেখানে অনেক দুস্থ পরিবার জরাজীর্ণ ঘর থাকে যার কারনে তাদেরকে আওতায় আনতে গিয়ে আমাদের পরিবহন ও পানির সমস্যা পেতে হয়েছে। তারপরও আমরা সে বাধা গুলোর অতিক্রম করে প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে সকল বাধাগুলো অতিক্রম করে সমাধান করে, তদারকি করে ঘরগুলো উপকারভোগীদের মাঝে পৌঁছে দিতে পেরে তাদের স্বপ্নের ভাগিদার হতে আমরাও আনন্দিত।
জেলা প্রশাসনের সূত্রে জানা যায়, রাঙামাটি দশ উপজেলায় ১ম থেকে ৪র্থ পর্যায়ে ১ হাজার ৯১৬ টি ঘর তৈরি করা হয়েছে। এতে ব্যয় করা হয়েছে চল্লিশ কোটি সাতান্ন লক্ষ বিরাশি হাজার পাঁচশত টাকা। ইতিমধ্যে ১ম, ২য় ও ৩য় পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রীর ঘর উপহার পেয়েছে ১ হাজার ৪৭৭ পরিবার। এবারে ৪র্থ পর্যায়ে রাঙামাটি সদর উপজেলায় ৮৪ টি, বাঘাইছড়ি উপজেলায় ৮০ টি, লংগদু উপজেলায় (৩য় পর্যায়ের ৪০ টি সহ) ৮৩ টি, নানিয়াচর উপজেলায় ২৭ টি, বরকল উপজেলায় ৪০ টি, রাজস্থলী উপজেলায় ১৪ টি, জুরাছড়ি উপজেলায় ৭০ টি এবং কাউখালী উপজেলায় ৪১ টি সহ সর্বোমোট ৪৩৯ টি গৃহের নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ করা হয়েছে।
আগামী ২২ মার্চ রাঙামাটি জিমনেসিয়াম প্রাঙ্গনে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে গৃহ প্রদান কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন করে উপকারভোগী পরিবারকে হস্তান্তর করা হবে।
রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, ভৌগোলিক ভাবে দুর্গম হওয়ায় এখানে সমতলের মত সব গুলো ঘর এক সাথে করার সুযোগ নেই। যার কারণে আমাদের এখানে জায়গার সংখ্যাও বেশি হওয়ায় কাজ করাটাও অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। কিন্তু এই চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করে আমরা প্রায় কাজ করে যাচ্ছি এবং ভবিষ্যতে আমাদের এই কার্যক্রম অব্যহত থাকবে।