রাঙামাটির আসামবস্তি কাপ্তাই সড়কের বড়াদামের মোরঘোনা এলাকায় নির্মানাধীন একটি সেতুর এক পাশ ধসে এক শ্রমিক নিহত হয়েছে।
এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরো ১৬ জন। বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
শ্রমিকরা জানান প্রায় ২০/২২ জন শ্রমিক সকাল থেকে সেতুর ঢালাইয়ের কাজ করছিল। ঢালাই চলাকালে এক পর্যায়ে মিক্সার মেশিনসহ সেতুর স্লেব ধসে পড়ে যায়। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায় ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। সেখানে ঢালাই নেতৃত্বে থাকা মাঝি রফিকের মৃত্যু হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ঢালাই শ্রমিক মো. সুমন (২৯), মো সোলায়মান (৩০) বলেন, সকাল ৮ টা থেকে তারা ঢালাইয়ের কাজ শুরু করে। ১শ বস্তা সিমেন্ট ঢালাই দেওয়ার পর এক পর্যায়ে সেতুর স্লেবের ফ্রেমটি মিক্সার মেশিনসহ ধসে পড়ে। মেশিনের নিচে চাপা পড়ে মাঝি মো রফিক ও অপর একজন শ্রমিক। তাদের উদ্ধার করে তাকে অটোরিকশায় জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।
রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক কর্মকর্তা শওকত আকবর খান বলেন মোট ১৬ জন শ্রমিক হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসে। এরা সবাই কম বেশী আহত হয়েছে। এদের মধ্যে থেকে রফিক নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। বাকী আরেকজেনর অবস্থা বেশ আশংকাজনক। বাকীরা একটু তার চেয়ে ভাল।
এ ঘটনায় স্থানীয়রা নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানকে দোষারোপ করছেন। কারণ এত বড় সেতু ঢালাইয়ের সেল্টারিং কাজে ব্যবহার করা হচ্ছিল স্থান কাঠের খুটি। ফলে অল্প ঝাকুনিতে সেল্টারিং ধসে পড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
তবে অভিযোগ মানতে নারাজ নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান এসএস ট্রেডার্সের সত্বাধিকারী মো জসিম। তিনি বলেন, শ্রমিকদের অসাবধানতা বশত এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। মিক্সার মেশিনটি সেল্টারিংয়ের উপর তুলে না চালালে এ দুর্ঘটনা হত না। মেশিনটির কম্পনের কারণে স্লেবের ফ্রেম ফিলার ক্যাপ থেকে সরে গিয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় নিহত রফিকের দাফনের খরচ আমি বহন করছি। তাকে ফ্রিজার এম্বুলেন্সে করে সিলেটের ধর্মপাশায় পাঠানোর ব্যবস্থা করেছি। এছাড়া আহত সবার চিকিৎসার খরচ আমি বহন করছি।
জসিম বলেন, কাজের সময় এ ধরণের ঘটনা ঘটুক তা কারোর কাম্য নয়। কিন্তু ভাগ্য খারাপ। এত বড় দুর্ঘটনা আমাকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। ভেঙে পড়া স্লেব উদ্ধার করে পুনরায় তা স্থাপন করতে আমার আরো ৩০-৪০ লাখ টাকা বাড়তি খরচ করতে হবে।
ঘটনার পর পর নির্মাণকারী সংস্থা এলজিইডি কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। রাঙামাটি এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী আহামদ শফি বলেন, ঘটনার পর ৪ সদস্যর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটি আগামী ২ কার্য দিবসে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবে। তিনি বলেন আমাদের প্রাথমিক তদন্ত বলছে ঠিকাদারের দুর্বলতার কারণে এ ঘটনা ঘটেছে।
এদিকে এ ঘটনার পর রাঙামাটি জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল জাহেদুল ইসলাম, কোতয়ালী থানার ওসি কবির হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ওসি কবির হোসেন বলেন এ ঘটনায় এখনো থানায় কোন মামলা হয়নি। মামলা হলে পুলিশ কাজ শুরু করবে।