বঙ্গবন্ধুকণ্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা এক ইঞ্চি জমি বা জায়গাও যেন খালি পড়ে না থাকে। প্রধানমন্ত্রীর সে নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুমানা আক্তার।
উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বাসভবন চত্বরেই পরিত্যক্ত প্রায় ৩৫ শতাংশ খালি যায়গাকে চাষাবাদ এর উপযোগী করে উন্নত জাতের টমেটো, বেগুন, ফুলকপি, বাঁধাকপি, সিম, ব্রুকলি, লাউ, তরমুজ, লালশাক ও মরিচ সহ নানান জাতের শাক-সবজি এবং দেশীয় ফলমূল আবাদ শুরু করেছেন। এর পাশাপাশি বাংলো চত্বরের প্রবেশ পথে গড়ে তুলেছেন দৃষ্টিনন্দন নানা প্রজাতির ফুলের বাগান। এছাড়াও রয়েছে দেশীয় প্রজাতির হাঁস মুরগী ও কবুতরের খামার। দেখে বোঝার উপায় নেই এটি সরকারি বাংলো নাকি খামার বাড়ি। এই বাগানে উৎপাদিত ফসল উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বাসায় রান্নার দৈনন্দিন চাহিদা পুরন শেষে উৎপাদিত ফসল উপজেলার সকল অফিসারদের মাঝে ভাগ করে দেয়া হয়।
এমন একটি সুন্দর উদ্যোগ নেওয়ায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে সাধুবাদসহ ধন্যবাদ জানিয়েছেন উপজেলায় নিয়োজিত বিভিন্ন দপ্তরের অফিসার, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও স্থানীয় সাধারণ মানুষ ।
মানুষকে সচেতন করার লক্ষ্যেই মূলত এমন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে জানান এই কর্মকর্তা । এর মাধ্যমে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মানুষদের বুঝাতে চেয়েছেন, প্রত্যেকেই নিজেদের পরিত্যক্ত ভূমি থেকে সব ধরনের ফসল সবসময় উৎপাদন করে নিজেদের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব। সবাই যদি বাড়ির আশপাশ আঙ্গিনাসহ পরিত্যক্ত ভূমি ফেলে না রেখে, পরিত্যক্ত ভূমিতে ফসল উৎপাদনে উৎসাহী হয় তাহলে দেশের চাহিদা পূরণে সহায়ক ভূমিকা রাখা সম্ভব হবে। ইওএনওর বাগান পরিচর্যার কাজে নিয়োজিত আব্বাস উদ্দিন বলেন আমাদের বাড়িতে কোন সবজি ও মোরগী কিনতে হয়না আমাদের সবার এই বাগানের সবজি দিয়ে হয়ে যায়। উপজেলা ভূমি অফিসের স্টাফ তাজুল ইসলাম বলেন আমরা নিয়মিত এই বাংলোতে আসি বাগানের বিভিন্ন ফল ও সবজি নিয়ে যাই এই বাগান দেখে আমরা উদ্ধুদ্ধ হয়ে ভূমি অফিসের খালি জমিতে চাষাবাদ শুরু করেছি।
এ ব্যাপারে বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুমানা আক্তার বলেন করোনা পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ, এক ইঞ্চি পতিত যায়গাও যেন খালি পড়ে না থাকে। সে নির্দেশনাকে বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে আমি দেখলাম, আমার বাসভবন চত্বরেই পতিত বা খালি যায়গা পড়ে রয়েছে, সে যায়গাতে আমি শাক-সবজি রোপণের মাধ্যমে চাষাবাদ শুরু করেছি। এতে যেমন পারিবারিক পুষ্টি চাহিদা পূরণ হচ্ছে, ঠিক তেমনি এখানে যেহেতু নানা প্রয়োজনে বিভিন্ন মানুষের যাতায়াত, এই চাষগুলো দেখে অনেকেই অনুপ্রাণিত হয়ে নিজেদের পতিত বা খালি জায়গাগুলোতে শাক-সবজি বা অন্যান্য ফল-ফলাদি চাষাবাদ করে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়ন করবেন বলে আমি আশাবাদী।
এছাড়াও আমার উদ্দেশ্য হলো সাধারণ মানুষদের দেখানো, যাতে সবাই তাদের বাড়ির আশপাশ আঙ্গিনা পরিত্যক্ত জমিগুলো খালি না রেখে নানা জাতের সবজি চাষ শুরু করে। এই পরিত্যক্ত জমিগুলোতে বছর জুড়েই বিভিন্ন মৌসুমের নানা জাতের বিষমুক্ত সবজি চাষ করে খেতে পারবে।
এতে তাদের অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে, অপর দিকে জৈবসারে বিষমুক্ত ভালোমানের সবজি খেতে পারবে। এতে দুদিকেই লাভবান হওয়া যাবে।