রবিবার, মার্চ ২৬News That Matters

খাদ্য বরাদ্ধের অভাবে ৯ বছরেও চালু হয়নি দুই ছাত্রাবাস

শেয়ার করুন:
DCIM100MEDIADJI_0081.JPG

রাঙামাটির দুই উপজেলায় নির্মিত আবাসিক ছাত্রাবাস ৯ বছর ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। এরই মধ্যে নষ্ট হয়ে গেছে ছাত্রাবাসের সৌরবিদ্যুতের ব্যাটারিসহ অনেক আসবাব। এতে প্রতিবছর ১৬০ শিক্ষার্থী আবাসিক পড়াশোনার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। খাদ্য বরাদ্দ না দেওয়ায় হোস্টেল দুটি চালু করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। হোস্টেল দুটি নির্মাণে ব্যয় হয় ৪ কোটি টাকা।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের তথ্যমতে, দুর্গম পাহাড়ের শিশুদের নিরবচ্ছিন্ন পড়াশোনা চালিয়ে নিতে বিদ্যালয়ে আবাসিক হোস্টেল নির্মাণ করা হয়। এ জন্য জেলার কাউখালী উপজেলার ঘাগড়া ও লংগদু উপজেলার আটারকছড়া এলাকায় তিন তলা বিশিষ্ট দুটি ছাত্রাবাস নির্মাণ করে দেয় এলজিইডি। এতে ১৬০ শিক্ষার্থীর আবাসন ব্যবস্থা হয়।

এদিকে নির্মাণকাজ শেষে ২০১২ সালে সংশ্লিষ্ট উপজেলা শিক্ষা বিভাগে হস্তান্তর করে এলজিইডি। হস্তান্তরের ৯ বছর পেরোলেও চালু করা যায়নি হোস্টেল দুটি। বর্তমানে এসব ছাত্রাবাস পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।

ঘাগড়ার কাউখালী ছেলাছড়া গ্রামের লালন মনি চাকমা বলেন, ‘কাউখালীর অনেক দুর্গম এলাকা রয়েছে। হোস্টেলটি চালু হলে এ হোস্টেলে থেকে এসব অঞ্চলের ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করতে পারত। হোস্টেল চালু না হওয়ায় ছেলেমেয়েরা এ সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।’

রিপা চাকমা বলেন,

এত সুন্দর একটি ভবন ফেলে রাখা হয়েছে দেখে আশ্চর্য হতে হয়। রাতে এ ভবনকে ভুতুড়ে মনে হয়। এটি মানুষের কোনো উপকারে আসছে না। চালু হলে এলাকার জন্য মঙ্গল হবে।’

ছেলাছড়া আবাসিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক

চিং সাথোয়াই রোয়াজা বন্ধ হোস্টেল সম্পর্কে  বলেন, ‘সব ঠিকঠাক আছে। হোস্টেল পরিচালনার জন্য জনবলও নিয়োগ দেওয়া হয়ে গেছে।

তাঁরা বসে বসে বেতন তুলছেন। শুধু খাদ্য বরাদ্দ দেওয়া হলে হোস্টেলটি চালু করা যাবে। কিন্তু খাদ্য বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে না। হোস্টেলটি চালু না হওয়ায় এরই মধ্যে কিছু জিনিস নষ্ট হয়ে গেছে। সোলার প্যানেল ব্যাটারিগুলো নষ্ট হয়ে গেছে।’

আটাকরছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কল্যাণ মিত্র চাকমা বলেন,

হোস্টেলটি চালু করা হলে পাহাড়ের ছেলেমেয়েদের উপকার হবে। কিন্তু চালুর উদ্যোগ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। সব ঠিক, শুধু খাদ্য বরাদ্দ দেওয়া হলে হোস্টেলটি চালু করা যায়।

জেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রবিউল আলম বলেন, ‘

ভবন নির্মাণ করা হলেও হোস্টেলের শিক্ষার্থীদের জন্য খাদ্য বরাদ্দ রাখা হয়নি। সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে হোস্টেল দুটি চালুর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।’

প্রায় ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ছাত্রাবাস দুটির নির্মাণকাজ শেষ হয় ২০১২ সালে। ১৯৯৭ সালে পার্বত্য চুক্তি মোতাবেক জেলা পরিষদের কাছে হোস্টেলগুলো হস্তান্তর করে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ।

হোস্টেল চালুর ব্যাপারে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরী বলেন, ‘

আমরা হোস্টেল চালুর উদ্যোগ গ্রহণ করছি। এটি চালু করতে যা যা করণীয় জেলা পরিষদ তা করবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *