রাঙামাটি জেলার কাপ্তাইয়ের রেমিট্যান্স যুদ্ধা ইউনুছ একজন সফল মাছ চাষী। কাপ্তাই হ্রদের ডেবায় নেটের মধ্যে তেলাপিয়া মাছের চাষ করে স্বাবলম্ভী হওয়ার আশায় ইউনুছের এই উদ্যোগ। কাপ্তাই জেটিঘাটের খুব কাছাকাছি ইউনুছের বাসা-বাড়ি। বাড়ির সামনে কাপ্তাই হ্রদের অংশ বিশেষ ডেবার মধ্যে বৈজ্ঞানিক উপায় বের করে নেটজাল দিয়ে তেলাপিয়া মাছের চাষ করেছেন প্রবাসী ইউনুছ। নেট পদ্ধতিতে মাছ চাষে অনেক খরচ ও ব্যয় বহুল। তার পরও হাল ছাড়ছে না ইউনুছ। এই মাছ চাষই তার একমাত্র অবলম্ভন।
খোজ খবর নিয়ে জানা গেছে,ইউনুছ একজন প্রবাসী লোক। সে ২০০৩ সালে থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত প্রায় ২০ বছর প্রবাসে জীবন কাটে তার। সেম দীর্ঘ ২০ বছর ধরে সৌদি আরব ছিলেন। দেশে এসে বেকার অবস্থায় পড়ে যায়।ভাবতে থাকে কি ব্যবসা করবে। তখন দিশেহারা হয়ে ও আত্বীয়স্বজনদের পরামর্শক্রমে এক পর্যায়ে সিদ্ধান্তে পৌছে নেটজালের মাধ্যম বাড়ির সামনে মাছের চাষ করবে। পরে সে ২০২২সালের মে মাসে মাছ চাষ শুরু করে। হ্রদের প্রায় এক একর পানিতে নেট পদ্ধতিতে ৩০ হাজার তেলাপিয়া মাছের পোনা ছাড়েন। এক বছর হলো তার মাছ চাষের বয়স। প্রতিটি তেলাপিয়া প্রায় ৭-৮ গ্রাম ওজন হয়েছে। এক কেজির উপরে হলেই সে মাছ বিক্রি করবে।
কাপ্তাই জেটিঘাট এলাকার স্থানীয়রা জানান, ইউনুছ একজন রেমিট্যান্স যোদ্ধা ছিলেন। সে দীর্ঘ দিন প্রবাসে ছিলেন। ২-৩ বছর হলো দেশে আসছে। দেশে আসার পর অনেক চিন্তা ভাবনা করে মাছ চাষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দেখতেছি মাছ চাষ করে সে সফল হবে। তার প্রতিভা আছে। সে কষ্ট করতে পারে। সে মাছ চাষ করে স্বাবলম্ভী হবে। কাপ্তাইয়ে ৫-৬টি স্থানে নেট দিয়ে মাছ চাষ করে তার মধ্যে ইউনুছের মাছ চাষ প্রকল্পটি অনেক বড়। সরকারী বেসরকারি সহায়তা পেলে সে অনেক দূর এগিয়ে যাবে।
কর্ণফুলী ফিস এগ্রো ফার্ম এর মালিক ও প্রবাসী মোঃ ইউনুছ বলেন,প্রায় ১০ -১৫ শতাংশ জমির পানির উপর নেট পদ্ধতিতে ৩০ হাজার তেলাপিয়া পোনা দিয়ে মাছ চাষ শুরু করা হয়েছে। এতে সব কিছু মিলিয়ে প্রায় ৩০ লক্ষ টাকার মত পুঁজি ব্যয় করতে হয়েছে তার । প্রতিদিন ৬-৮ জন লোক এর পেছনে সময় দিচ্ছে। এক বছর হলো তার মাছ চাষের বয়স। বর্তমানে তার নেটের মাছ ওজন হয়েছে ৭শ- ৮ শ গ্রাম। ১ কেজির বেশী ওজন হলেই বাজারজাত বা বিক্রি করা হবে।
ইউনুছ আরো বলেন,কি করে চারটা ডাল ভাত খাব। পাহাড়ে গাছ,বাঁশ ও হ্রদে মাছ নাই,মানুষ কি করে চলবে। আয় রোজগার বলতে কিছুই নেই। কাজ কর্ম নাই তাই কঠিন বিপদে আছে এখানকার মানুষ। গত এক বছর আগে মাছ চাষের উপর আমি খাগড়াছড়ি মৎস্য অধিদপ্তরের অধীনে খাগড়াছড়ি মিনি মৎস্য হ্যাচারির মাধ্যমে প্রশিক্ষণ করে আসি। আশা করি মাছ চাষ করে আমার বেকারত্ব দূর হবে। তবে পাশা-পাশি সরকারি বেসরকারি সহযোগিতা পেলে আমি আরো উন্নতি করতে পারবো।
কাপ্তাই উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ নাসির উদ্দিন বলেন,সরকারি ভাবে উপজেলা পরিষদ বিভিন্ন সময়ে এ ধরনের বিষয়ের উপর বেকারত্ব দূর করতে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন। তাই উপজেলা প্রাণি সম্পদ বিভাগের সাথে যোগাযোগ করে সকল ধরনের সহযোগিতা নিতে পারেন। এধরনের উদ্যোক্তাদের সরকারি বেসরকারি সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।