পার্বত্য চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের আওতাধীন জেলার বরকল উপজেলার সুভলং ইউনিয়নের বরুনাছড়ি বাজারে আজ রবিবার সকাল ১১টায় “হাতি-মানুষ দ্বন্দ্ব নিরসনে কার্যকর উপায় বিশ্লেষণ” শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাঙামাটি বন সার্কেলের উপ-বন সংরক্ষক আবু নাছের মোঃ ইয়াছিন নেওয়াজ। এতে সভাপতিত্ব করেন,পার্বত্য চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোঃ রেজাউল করিম চৌধুরী।
এসময় উপস্থিত ছিলেন,তরুন জ্যোতি চাকমা, চেয়ারম্যান, সুভলং ইউনিয়ন পরিষদ,সুবলং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ হাসানাত,মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, মেম্বার সুভলং ইউনিয়ন পরিষদ, মোঃ আবুল কালাম,ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিম (ইআরটি) সদস্যবৃন্দ, স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও হাতি অধ্যুষিত এলাকার সাধারণ জনগণ।
প্রধান অতিথি বলেন, হাতি আমাদের অন্যতম মূল্যবান একটি সম্পদ। হাতির সাথে দ্বন্দ্ব সংঘাতে না জড়িয়ে হাতি রক্ষায় আমাদের এগিয়ে আসতে হবে। আমরা নিজেদের প্রয়োজনে হাতির আবাসস্থল ধ্বংস করে ফেলেছি। তাই হাতি খাদ্যের সন্ধানে লোকালয়ে চলে আসে। হাতি যাতে ফসলের ক্ষতি না করে এই জন্য তিনি হাতি অপছন্দ করে এমন শস্য যেমন করলা,কাকরুল, মরিচ প্রভৃতিসহ কাটা জাতীয় লেবু, বড়ই প্রকৃতির গাছ লাগানোর পরামর্শ প্রদান করেন।
অনুষ্ঠানের সভাপতি বলেন, হাতি সুরক্ষায় বর্তমান সরকার নানাবিধ কর্মসূচি গ্রহন করেছেন। হাতি দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের জন্য বর্তমান সরকার বন্যপ্রাণী দ্বারা আক্রান্ত মানুষের জানমালের ক্ষতিপূরণ বিধিমালা-২০২১ প্রণয়ন করেছেন।
বিধিমালায় বলা হয়েছে কোন মানুষ হাতির আক্রমনে মৃত্যু বরণ করলে সরকার তিন লক্ষ টাকা, পঙ্গু কিংবা আহত হলে এক লক্ষ টাকা এবং ফসল কিংবা ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হলে সর্বোচ্চ পঞ্চাশ হাজার টাকা ক্ষতি পূরণ প্রদান করা হয়।
ইতোমধ্যে ভাসান্যাদম ইউনিয়নে হাতি দ্বারা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরণকারী ১ জনকে তিন লক্ষ টাকা এবং ফসল ও ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ ২৫ জনকে তিন লক্ষ পয়ষট্টি হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে। উপস্থিত জনসাধারণকে তিনি হাতি সুরক্ষায় সার্বিক সহযোগিতার অনুরোধ জানান।
সুভলং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তরুন জ্যোতি চাকমা বলেন, বরুনাছড়ি এলাকায় প্রায় সময়ই ৯-১০টির মত হাতি দেখা যায়। হাতিকে তিনি বরুনাছড়ি এলাকার অন্যতম ঐতিয্যবাহি বন্যপ্রাণী হিসেবে উল্লেখ করেন এবং হাতি সুরক্ষায় সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন। মোঃ জাহাঙ্গীর আলম মেম্বার পার্বত্য চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগ কর্তৃক হাতি সংরক্ষনে জনসচেতনা মূলক অনুষ্ঠানের আয়োজনের জন্য বন বিভাগকে ধন্যবাদ জানান।
সুভলং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ হাসানাত বলেন, হাতি দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ মানুষ যাতে দ্রুত ক্ষতি পূরণ পায়, এই জন্য উপস্থিত বন বিভাগের কর্মকর্তাদের তিনি অনুরোধ জানান। উপস্থিত হাতি অধ্যুষিত এলাকার জনসাধারণ হাতি-মানুষ দ্বন্দ্ব নিরসন শীর্ষক সেমিনারে বিভিন্ন প্রস্তাব উত্থাপন করেন এবং উপস্থিত বন বিভাগের কর্মকর্তাবৃন্দ উত্থাপিত প্রস্তাবসমূহ দ্রুত বাস্তবায়নের আশ্বাস প্রদান করেন।