খাগড়াছড়ির পানছড়িতে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের হুমকি প্রদান ও চাঁদাবাজির প্রতিবাদে এবং বিপুল-সুনীল-লিটন-রুহিনের খুনীদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে পানছড়ি গণঅধিকার রক্ষা কমিটি।
আজ মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি ২০২৪) দুপর ১:৩০টায় পুজগাঙের মুনিপুর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি বড়কলক ঘুরে আবার মুনিপুরে এসে সংক্ষিপ্ত প্রতিবাদ সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
সমাবেশে গণঅধিকার রক্ষা কমিটির সদস্য সঞ্চয় চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন গণঅধিকার রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক অনীল চন্দ্র চাকমা ও সদস্য মানেকপুদি চাকমা।
এছাড়া তাদের সাথে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ পানছড়ি উপজেলা শাখার সভাপতি সুনীল ময় চাকমা ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের পানছড়ি উপজেলা শাখার সভাপতি রিপন ত্রিপুরা।
সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটদানে অংশগ্রহণ না করায় গতকাল সাবেক মহিলা মেম্বার সুজাতা চাকমা, বর্তমান মেম্বার মন্দিরা চাকমা, গণঅধিকার রক্ষা কমিটির সদস্য ও সমাজ সেবক রমেল মার্মাকে সেনাসৃষ্ট নব্যমুখেশ সন্ত্রাসীরা দেওয়ান পাড়ায় ডেকে নিয়ে অস্ত্রের মুখে মারধর, হয়রানি এবং ২ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করেছে।
বক্তারা ঠ্যাঙাড়ে সন্ত্রাসীদের এমন কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারাদেশে ৭০টির অধিক রাজনৈতিক সংগঠন ও বহু সাধারণ জনগণ ভোট বর্জন করেছে। ভোটাধিকার দেশের নাগরিকদের রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক অধিকার। জনগণের ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের যদি এভাবে মারধর, হয়রানি, হুমকি চাঁদা দাবি করা হয় তাহলে সারা দেশে যারা ভোট প্রদান করেনি তাদের কাছ থেকেও চাঁদা দাবি করুন।
সরকার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে মন্তব্য করে তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে জনপ্রতিনিধিরা জনগণের স্বার্থে লড়াই সংগ্রামে সর্বদা সোচ্চার। এই কারণে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাদের উপর এ ধরনের মানসিক-শারীরিকভাবে হয়রানি নির্যাতন করা হচ্ছে। রাষ্ট্রীয় ইন্ধনেই সন্ত্রাসীরা এমন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে বলে তারা অভিযোগ করেন।
বক্তারা গত ১১ ডিসেম্বর বিপুল চাকমাসহ ৪ ছাত্র-যুব নেতাকে হত্যা ঘটনায় জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার না করায় তারা আবার জনপ্রতিনিধিদেরকে হুমকি-ধমকি, মারধর, হয়রানি করতে শুরু করেছে। কিন্তু প্রশাসন সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
বক্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, রাষ্ট্রীয় মদদে ঠ্যাঙাড়েদের এমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড আর চলতে দেওয়া যায় না। এই খুনি-সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সর্বত্র রুখে দাঁড়াতে হবে। আমরা যদি নিরব থাকি তাহলে তাদের এই অপরাধকর্ম আরো দিন দিন বেড়ে যাবে।
সমাবেশ থেকে বক্তারা অবিলম্বে জনপ্রতিনিধিদের হুমকি প্রদানকারী ও বিপুলসহ চার খুনে জড়িত ঠ্যাঙাড়ে নব্যমুখোশ সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং তাদের সকল ধরনের কর্মকাণ্ড বন্ধ করে দেয়ার দাবি জানান।