চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গান মানে শ্যাম সুন্দর বৈষ্ণব এবং শেফালি ঘোষের কথা মনে পড়ে যায়। ষাট দশক হতে নব্বই দশক পর্যন্ত এই জুটির গান চট্টগ্রামের গ্রামেগঞ্জে এত বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল, সেই সময় কোন ফাংশনে আঞ্চলিক গান ছাড়া গানের আসর জমতো না। শুধু চট্টগ্রাম নয়, বাংলাদেশের আনাচে কানাচে এমনকি দেশের বাহিরেও চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গান মানুষের হৃদয়কে জয় করতে পেরেছে। তারই ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রাম জেলার অনেক জনপ্রিয় কন্ঠ শিল্পীরা আঞ্চলিক গানের চর্চাকে ধরে রেখেছেন এবং জনপ্রিয় হয়েছেন।
রাঙামাটি জেলার কাপ্তাই উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির শিল্পী বসুদেব মল্লিক এবং লিপি দাশ চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গান মঞ্চে গেয়ে ইদানীং বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। ” শ্যাম – শেফালির সেই বিখ্যাত গান ” আঁর বাইক্কা টিয়া দে”, ” ওরে বাস কনট্রাক্টার, এক্কান সিট হইবনি আঁর” কিংবা কক্সবাজারের জনপ্রিয় কন্ঠ শিল্পী বুলবুল আক্তারের ” ও কালাচান গলার মালা” এম এন আক্তারের ” কইলজ্জার ভিতর গাঁথি রাইখুম তোঁয়ারে” কিংবা সন্দিপনের ‘ নাইয়র নিবা নিবা বলি, গানগুলো গেয়ে কাপ্তাইয়ের বিভিন্ন মঞ্চে দর্শকদের অকুন্ঠ প্রশংসা অর্জন করেছেন জনপ্রিয় আঞ্চলিক গানের জুটি বসু- লিপি।
গত সোমবার কথা হয় বসুদেব মল্লিক ও লিপি দাশের সাথে এই প্রতিবেদকের। তাঁরা বলেন, আমাদের মাটির গান লোকজ গান এবং অঞ্চল ভিত্তিক গান। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম একসাথে জুটি বেঁধে চট্টগ্রামের জনপ্রিয় আঞ্চলিক গান গুলো মঞ্চে করবো। গত ৩ বছর ধরে আমরা কাপ্তাইয়ের বিভিন্ন মঞ্চে এবং কাপ্তাই উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গানগুলো পরিবেশন করে আসছি এবং দর্শকের প্রচুর সাড়া পাচ্ছি। শুধু কাপ্তাই নয়, রাঙ্গুনিয়া, রাউজান সহ অনেক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আমরা জনপ্রিয় আঞ্চলিক গান গুলো পরিবেশন করেছি। আমরা ভবিষ্যতেও চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গান গুলোকে দর্শক শ্রোতাদের সামনে তুলে ধরবো।
কাপ্তাই উপজেলা সদর এর বাসিন্দা দিলীপ পাল, আলি আকবর বলেন, উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির বিভিন্ন প্রোগামে বসু- লিপির কন্ঠে দ্বৈত আঞ্চলিক গান গুলো আমরা শুনেছি। খুব ভালো লেগেছে তাদের পরিবেশনা।
কাপ্তাই উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির যুগ্ম সম্পাদক নাট্য ব্যক্তিত্ব আনিছুর রহমান এবং উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির নির্বাহী কমিটির সদস্য রওশন শরীফ তানি ও জ্যাকলিন তনচংগ্যা বলেন, আমাদের সহকর্মী শিল্পী বসুদেব মল্লিক ও লিপি দাশের কন্ঠে দ্বৈত আঞ্চলিক গান গুলো ইদানীং বেশ ভালো লাগছে। তাঁরা ইতিমধ্যে উপজেলায় আলাদা একটা জায়গা করে নিয়েছে।