দীর্ঘ ৮মাস পর রাঙামাটি নৌপথে লঞ্চ চলাচল শুরু হয়েছে। শুক্রবার (৫জুলাই) রাঙামাটি জেলার ৬ উপজেলার সাথে লঞ্চ চলাচল শুরু হয়েছে। শুক্রবার সকাল সকাল সাড়ে ৭টায় রিজার্ভ বাজারস্থ লঞ্চ ঘাট হতে বিরতিহীন লঞ্চটি লংগদু উপজেলা হয়ে বাঘাইছড়ির উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। একই ভাবে রাঙামাটির রিজার্ভ বাজার লঞ্চ ঘাট হতে বরকল,নানিয়ারচর ও জুরাছড়ির উদ্দেশ্যে লঞ্চ ছেড়ে গেছে। প্রায় ৮মাস পর লঞ্চে করে বাড়ি যেতে পেরে খুশি অনেকেই। লঞ্চ যাত্রীরা খুব আনন্দ ভোগ করছে। কাপ্তাই হ্রদের পানি শুকিয়ে যাওয়ার কারনে ২০২৩ সালের নভেম্বর হতে হ্রদে লঞ্চ চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। শ্রক্রবার(৫ জুলাই)২০২৪ লঞ্চ চলাচল শুরু করা হয়।
উৎসব মূখর লঞ্চ যাত্রীরা বলেন,কাপ্তাই হ্রদে পানি বাড়ার কারনে দীর্ঘ ৮মাস নৌপথে যাতায়াত করতে পেরে আমাদের কাছে অনেক আনন্দ লাগছে। লঞ্চে করে রাঙামাটি থেকে বাঘাইছড়ি যাওয়ার মজাটাই আলাদা। তবে মান্দাতা আমলের এসব লঞ্চ বাতিল করে লঞ্চের আদলে আরো উন্নতমানের যানবাহন প্রয়োজন আছে বলে তারা মনে করেন। এক কথায় যে সব লঞ্চ এই রোডে চলে ওই লঞ্চ গুলোকে আরো আধুনিকায় করা দরকার।গত ৫-৬দিন টানা ভারী বর্ষণে কাপ্তাই হ্রদে পানি বৃদ্ধি পাওয়ার কারনে লঞ্চ চলাচল চালু হয়েছে। শুক্রবার থেকে জেলার ৬ উপজেলার সাথে যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল শুরু হয়েছে। উপজেলা গুলো হলো-বাঘাইছড়ি,লংগদু,নানিয়ারচর,বরকল, জুরাছড়ি ও বিলাইছড়ি। নদী পথে লঞ্চ চলাচল ফিরে পেয়ে অনেকের মনে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
লঞ্চ যাত্রী আরিফুল ইসলাম ও ব্যাংকার মোঃ হোসেন বলেন,দীর্ঘ ৮ মাস পর লঞ্চে করে রাঙামাটি হতে বাঘাইছড়ি যেতে পেরে আনন্দ ভোগ করছেন। কাপ্তাই হ্রদে প্রচুর পলি পড়ে হ্রদের নব্যতা হারিয়ে ফেলেছে। যার ফলে প্রতি বছর ৭-৮ মাস ধরে রাঙামাটি নৌ পথে নৌ যান চলাচল বন্ধ থাকে। তিনি বলেন,আমাদের দাবি কাচালং নদী ও কাপ্তাই হ্রদের নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে একটাই উপায় নদী খনন বা ড্রেজিং এর উদ্যোগ নিতে হবে। কাপ্তাই হ্রদ রক্ষা একটি কমিটি গঠন করা এখন সময়ের দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
লঞ্চ মালিক সমিতির সভাপতি মঈন উদ্দিন সেলিম ক্ষোভের সাথে বলেন, এশিয়া মহাদেশের একমাত্র কাপ্তাই কৃত্রিম হ্রদ রক্ষা করা দায় মনে হয় লঞ্চ সংশ্লিষ্টদের। এখানে আর কারও ভূমিকা নাই! হ্রদ বাঁচাতে সকলের ভূমি থাকা প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, ৮মাস পর শুক্রবার লঞ্চ চলাচল চালু করা হয়েছে। একমাত্র নব্যতার কারনে। সরকার বার বার বলে আসছে কাপ্তাই হ্রদ ড্রেজিং করা হবে। কিন্তু তা ফলপ্রসু হচ্ছে না কেন তা আমরা জানিনা। কাচালং নদী ও কাপ্তাই হ্রদ ড্রেজিং করার দরকার যেখানে সেখানে না করে তারা মাইনী বাজার সংলগ্ন এলাকার কাচালং নদীতে ড্রেজিং করে সে মাটি কাপ্তাই হ্রদে ফেলছে। এই ড্রেজিং জনগণের কোন উপকারেই আসেনি। কাপ্তাই হ্রদ ড্রেজিং করা হলে ৬ উপজেলার মানুষ উপকৃত হবে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান বলেন, কাপ্তাই হ্রদ খনন বা ড্রেজিং এর ব্যাপারে মন্ত্রনালয়ে কয়েকবার আলোচনা করা হয়েছে। কিন্তু এখনো ওই ব্যাপারে সরকারি ভাবে কোন আদেশ আসেনি। এব্যাপারে লেখালেখি অব্যাহত রয়েছে।