পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত অনগ্রসর (উপজাতি-বাঙালি) সকল জাতিগোষ্ঠীর জন্য জনসংখ্যা অনুপাতে পার্বত্য কোটা সুবিধা দেওয়ার দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে আজ (১১ জুলাই) বৃহস্পতিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও মহানগর শাখা।
এতে উপস্থিত ছিলেন, পিসিসিপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক রাসেল মাহমুদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সভাপতি মো: দিদারুল আলম সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
এসময় নেতৃবৃন্দ বলেন, গত ১০ বছরের পরিসংখ্যান বলছে, ৫০টিরও বেশি সংখ্যালঘু ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জন্য সংরক্ষিত মোট ৩ হাজার ১০৮টি আসনের অর্ধেকেরও বেশি (৫৬ শতাংশ) শুধু পার্বত্য চট্টগ্রামের চাকমা ছাত্রদের দখলে। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জনসংখ্যায় চাকমারা বাংলাদেশের মোট ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী জনসংখ্যার শতকরা ২৯ ভাগ। একইভাবে, মারমা সম্প্রদায় মোট ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী জনসংখ্যার ১৪ শতাংশ এবং তারা কোটা সুবিধা পায় ১৪ শতাংশ, ত্রিপুরা সম্প্রদায়ে জনসংখ্যা ৯ শতাংশ এবং কোটা-সুবিধা পায় ০৭ শতাংশ।
বাংলাদেশের গড় শিক্ষার হার ৭২.৯ শতাংশ, কিন্তু প্রত্যন্ত পার্বত্য জনপদে চাকমাদের শিক্ষার হার ৭৩ শতাংশ। এই অগ্রগতি বঞ্চনা ও অনগ্রসরতার পরিচায়ক নয়। শিক্ষার কারণে পেশা ও কর্মক্ষেত্রে চাকমা জাতিগোষ্ঠীর সুস্পষ্ট আধিপত্য রয়েছে।
অন্যদিকে, পার্বত্য চট্টগ্রামের অন্যান্য ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর শিক্ষার হার মাত্র ৪৫ শতাংশ ও পার্বত্য বাঙালিদের ২৩ শতাংশ। এক গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে, ‘এটা সুযোগের তারতম্য, ভারসাম্যহীনতা এবং নৃ-গোষ্ঠীর মধ্যে অভ্যন্তরীণ বৈষম্যের প্রমাণ। এখানে চাকমা বাদে বাকি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের জনসংখ্যা ৭১ শতাংশ। অথচ এসব ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী উচ্চ শিক্ষায় ভর্তি ও সরকারি চাকরির কোটা-সুবিধা পাচ্ছে মাত্র ৪৪ শতাংশ।
যেখানে উপজাতি কোটায় চাকমারাই অন্যান্য ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের সাথে বৈষম্য করছে সেখানে বাঙালিদের অবস্থান টা কোথায়? বাঙালিদেরকে তো টোটালি কোন সুযোগই দিচ্ছে না।
উপজাতি কোটার বেশির ভাগ সুবিধা নিচ্ছে চাকমারা। এখানে অবশ্যই সমতা আনতে হবে। সমতা আনতে না পারলে উপজাতি কোটা বাতিল করতে হবে।
পিসিসিপি শুধু বাঙালিদের জন্য বলছে না, অন্যান্য পিছিয়ে পরা ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী যেমনঃ পাংখোয়া, মুরং, বম, লুসাই, সহ সকল ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদেরও সমতা ও ন্যায্যতার ভিত্তিতে কোটা সুবিধা দেওয়ার জন্য বলছে।
ন্যায্য ও সমতার ভিত্তিতে কোটা সুবিধা বন্টন করতে পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত সকল জাতিগোষ্ঠীকে জনসংখ্যা অনুপাতে পার্বত্য কোটা চালু করে সমান ভাবে সুযোগ দিতে হবে।