রাঙামাটির লংগদুতে দিন দুপুরে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে পঁচা গরুর মাংস বিক্রির অভিযোগ উঠেছে মাংস বিক্রেতা মনির হোসেন মনার বিরুদ্ধে। জানা যায়, আসলে সে পেশাদার কসাই না। বিভিন্ন জায়গায় থেকে সে বাসি গরুর মাংস এনে মাইনীমূখ বাজারে বিক্রি করে থাকে। এ ধরনের অনৈতিক কাজের জন্য তাকে পূর্বেও বিভিন্ন লোকজন সর্তক করেছেন।
গত শনিবার (১৪জুলাই) জেলার সব চাইতে সুনামধন্য ও বড় বাজার মাইনীমুখ এঘটনা ঘটে। মাংস বিক্রেতা মনির হোসেন দীর্ঘদিন ধরে প্রতিনিয়ত এভাবেই তার অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। কথায় আছে না দশদিন চোরের একদিন মালিকের।
লংগদু সোনাই এলাকার মাংস ক্রেতা নুর আহাম্মদ জানান, শনিবার দুপুর ২টার সময় মনার মাংসের দোকান থেকে সে ১কেজি মাংস ক্রয় করে নিয়ে বাসায় যাই। পরবর্বতীতে মা মাংস রান্না করতে গেলে দেখে মাংস থেকে পঁচা গন্ধ বের হচ্ছে। মার কথা শুনে আমি পরবর্তীতে সে মাংস নিয়ে আমি মাইনীমুখ বাজারে চলে আসি এবং স্থানীয় মাইনীমুখ ইউ পি চেয়ারম্যান ও গণমাধ্যম কর্মীদের মাংস গুলো দেখাই। যা দেখে পঁচা মাংস বলে সবাই প্রমাণিত করেন।
এবিষয়ে মাংস বিক্রেতা মনির হোসেন মনার কাছে জানতে চাইলে, প্রথমে এসব বিষয়ে তিনি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও পরবর্তীতে স্থানীয়দের চাপে তিনি স্বীকার করেন সে ফ্রিজের মাংস বিক্রি করেছে। কিন্তু আপনি জানা সত্বেও ফ্রিজের পঁচা মাংস কেন বিক্রি করলেন? জানতে চাইলে তিনি কোন সঠিক উত্তর দিতে পারেনি।
তবে এই ধরণের কাজ আর করবেনা বলে সে ক্ষমা চায় প্রতিনিধির কাছে। বিষয়টি একবার নয় এর আগে আরো বেশ কয়রকবার করেছিলো। যার ফলে বাজার কমিটি তাকে সতর্ক করলেও এপথ ছাড়েনি সে। আপনি বস্তা ভরে গোস্ত গাড়ি দিয়ে কোথায় হতে নিয়ে আসেন? জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি দীঘিনালা এবং খাগড়াছড়ি থেকে গরু ছাগলের মাথাসহ নাড়ি ভুঁড়ি নিয়ে এসে এখানে বিক্রি করি। অথচ মাংস বিক্রি করতে হলে অবশ্যই তাকে সুস্থ্য গরু জবাই করে প্রমানসহ ক্রেতাদের মাঝে বিক্রি করতে হবে।
মাইনীমূখ বাজার ব্যবসায়ি কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন ওরফে সোহেল বলেন, উক্ত ব্যবসায়িকে এসব অনৈতিক কাজের জন্য আগেও বেশ কয়েকবার সতর্ক করা হয়েছে। তিনি বাজারে নিয়মিত মাংস বিক্রি করেনা হঠাৎ করে কোন জায়গা থেকে গরুর মাংস নিয়ে এসে দুই তিন ঘন্টার মধ্যে বিক্রি শেষ করে চলে যায়। এসব বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন তার বিরুদ্বে আইনী ব্যবস্থা গ্রহন করা উচিৎ।
মাইনীমুখ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কামাল হোসেন কমল বলেন, এই ব্যসায়িকে কয়েকবার নিষেধ করা হয়েছে। যেহেতু তার কোন পরিবর্তন হয়নি। তার বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরী বলে মনে করি।
লংগদু থানার অফিসার ইনচার্জ হারুন অর রশিদ বলেন, অবশ্যই বিষয়টি বড় ধরনের অপরাধ। উক্ত তথ্য ও অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
উপজেলা স্বাস্থ্য বিষয়ক কর্মকর্তা অনন্ত চাকমা বলেন, এই ধরনের কাজ খুবই মারাত্মক এবং স্বাস্থ্যের জন্য বিরাট ক্ষতিকর ও বড় ধরনের অপরাধ। আমরা শীঘ্রই এবিষয়ে কসাইয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, এবিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থার নেওয়ার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।