রাঙামাটির কাউখালীতে ঘুমন্ত অবস্থায় স্ত্রী ও শাশুড়ীকে লোহাড় শাবল দিয়ে খুচিয়ে ও জবাই করে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে স্বামী।
শুক্রবার গভীর রাতে উপজেলা সদরের নিকট কাশখালী গ্রামে হত্যাকান্ডের এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন ফাতেমা আক্তার (২৬) ও তার বৃদ্ধ মা আয়েশা খাতুন (৬১)। ঘাতক স্বামী মো: বিল্লাল হোসেন (৩৫) কে আটক করে পুলিশে দিয়েছে এলাকাবাসী।
কাউখালী থানার অফিসার ইনচার্জ রাজীব চন্দ্র কর ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেছেন এ ব্যাপারে কাউখালী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। লাশ উদ্ধার করে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে পোষ্ট মর্টেমের জন্য প্রেরন করা হয়েছে। পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। খুনের ঘটনায় পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায় কাউখালী উপজেলার কাশখালী এলাকার মৃত আব্দুর রশিদের মেয়ে ফাতেমা বেগম (২৭) আক্তারের সাথে মো: বিল্লাল হোসেন (৩৫) পিতা: মৃত আনজু মিয়া সাং: বাইরা থানা: মুরাদনগর জেলা কুমিল্লার সাথে বিগত তিন বছর পূর্বে পারিবারিকভাবে বিবাহ হয়।বিবাহের পর ফাতেমা আক্তার শ্বশুর বাড়িতে থাকতো। তাদের সংসারে ২ বছরের একটি শিশু সন্তানও আছে।
কিন্ত বিয়ের পর থেকে ঘাতক স্বামী মো: বিল্লাল হোসেন স্ত্রী ফাতেমা আক্তারকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতেন। স্বামীর নির্যাতন সইতে না পেরে গত দুই মাস পৃর্বে কাউখালীর কাশখালী এলাকায় মায়ের নিকট চলে আসে। এখানে ফাতেমা বেগমের মা বসবাস করে। তাদের পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা কুমিল্লার মুরাদনগরে বসবাস করে। মায়ের নিকট চলে আসার পর গত ২৯ জুলাই সামাজিক ভাবে কাজী অফিসের মাধ্যমে স্বামী বিল্লাল হোসেনকে ডির্ভোস দেয়। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে কুমিল্লা থেকে ঘাতক স্বামী বিল্লাল হোসেন কাশখালী এলাকায় শশুর বাড়ীতে আসে। শশুড় বাড়ীতে আসলে স্ত্রী এবং শাশুড়ীর সাথে ঝগড়া হয়। ঝগড়া করার পর সে শশুড় বাড়ী থেকে বেরিয়ে গিয়ে কোন এক স্থানে ওৎ পেতে থাকে।
শুক্রবার রাত গভীর রাতে বিল্লাল হোসেন গোপনে শশুড় বাড়িতে গিয়ে তাদের বসত ঘরের পিছনের মাটি খুড়ে ঘরে প্রবেশ করে ঘুমন্ত অবস্থায় স্ত্রী ফাতেমা আক্তার (২৬) ও বৃদ্ধ শাশুড়ী আয়েশা খাতুন (৬১)কে ঘরে থাকা লোহার শাবল দিয়ে খুচিয়ে ও জবাই করে হত্যা করে পালিয়ে যায়। এ সময় ঘরে থাকা শিশু সন্তান মোঃ বাইতুল্লাহ কান্না করে পার্শ্ববর্তী বাড়ির জনৈক রোকেয়া বেগমকে জানাইলে রোকেয়া বেগম তাৎক্ষণিক ভাবে এলাকার স্থানীয় লোকজনকে সংবাদ দিলে ঘাতক বিল্লাল হোসেন পালিয়ে যাবার সময় বেতছড়ির পাইন বাগান এলাকা থেকে স্থানীয় এলাকাবাসীরা আটক করে পুলিশে সোর্পদ করে।
কাউখালী থানার অফিসার ইনচার্জ রাজীব চন্দ্র কর জানান ধারনা করা হচ্ছে পারিবারিক কলহের জেরে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। এ ব্যাপারে নিহত ফাতেমা আক্তারের ভাই মোঃ ইসমাইল বাদী হয়ে কাউখালী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছে।