আমেরিকা ও ভারতের যৌথ মদদে অস্থিতিশীল করে পার্বত্য চট্টগ্রামকে বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করার পাঁয়তারা চলছে বলে দাবি তুলেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি’।
শুক্রবার (৪ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা পার্বত্য চট্টগ্রামের বিরুদ্ধে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র রুখতে এবং বাংলাদেশের অখণ্ডতা রক্ষার্থে সাত দফা দাবি উত্থাপন জানান।
সমাবেশে স্টুডেন্ট ফর সভারেন্টির আহ্বায়ক মুহম্মদ জিয়াউল হক বলেন, ‘বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামে ভারত উপজাতি বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসীদের প্রশিক্ষণসহ অন্যান্য সহায়তা দিচ্ছে। তা ছাড়া সম্প্রতি ভারত থেকে প্রকাশ্যে বাংলাদেশের পাহাড়কে বিচ্ছিন্ন করার হুমকি আসছে। একইভাবে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে (ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল) আমেরিকার স্বার্থ রয়েছে। বাংলাদেশ যদি এখানে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন না করে মার্কিন স্বার্থের বিপরীত ব্লকে চলে যায়, তাহলে কিন্তু আমেরিকা এই অঞ্চলে সুবিধা করতে পারবে না। তাদের এই বিষয়গুলো স্মরণ রাখা উচিত।’
হিল হিউম্যান রাইটস অ্যাক্টিভিস্ট মিনহাজ ত্বকি বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামে বিভিন্ন ভিকটিম রুল কার্ড ব্যবহার করা হয়। আমার তিন পুরুষ থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে বাস করছি, আমাকে বলা হচ্ছে স্যাটেলার। জানি না কীভাবে স্যাটেলার বলা হয়!’
ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, ‘৫ আগস্টের পর দেশকে বিশৃঙ্খলা করা অন্যতম পাঁয়তারা হলো, পার্বত্য চট্টগ্রামে বিশৃঙ্খলা তৈরি করা। পাহাড়ে শান্তি রক্ষার জন্য যদি আমাদের জীবন দিতে হয়, অবশ্যই আমরা জীবন দিতে প্রস্তুত।’
পার্বত্য চট্টগ্রামের বিরুদ্ধে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র রুখতে এবং বাংলাদেশের অখণ্ডতা রক্ষার্থে বিক্ষোভ সমাবেশে উত্থাপিত সাত দফা দাবিগুলো হলো- ১. বাংলাদেশের উপজাতিদের সম্বোধনের ক্ষেত্রে আদিবাসী ও জুম্ম শব্দ ব্যবহার এবং বাংলাদেশের বাঙালিদের সম্বোধনে স্যাটেলার শব্দ ব্যবহারকে রাষ্ট্রদ্রোহিতা ঘোষণা করতে হবে এবং এই শব্দ ব্যবহারকারীদের কালো তালিকাভুক্ত করে শাস্তিযোগ্য আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। ২. বাংলাদেশের অখণ্ডতা রক্ষায় পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের সব অঞ্চলে অবশ্যই পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি-১৯০০ বাতিল করতে হবে। এ জন্য একই আইন প্রচলন ও কার্যকর করতে হবে। ৩. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি চাকরিতে উপজাতি কোটা বাতিল করতে হবে। ৪. ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজির ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে অবশ্যই নিরপেক্ষ ও ভারসাম্যমূলক ভূমিকা পালন করতে হবে। ৫. পার্বত্য সশস্ত্র সংগঠনগুলোকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। ৬. পার্বত্য অঞ্চলে চলমান অস্থিতিশীলতা নিরসন, সন্ত্রাস দমন ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক সেনাক্যাম্প বাড়াতে হবে। এবং ৭. ১৯৯৭ সালের চুক্তি অনুযায়ী উপজাতি কর্তৃক সশস্ত্র কার্যক্রম বন্ধ না করায় সংবিধানবিরোধী পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাতিল করতে হবে।