খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় তামাক ছেড়ে, ভুট্রা চাষ করে ভাগ্য বদলেছে কৃষক নুরনবীর। নিজের অধীনে থাকা ২০ বিঘা জমিতে তামাক চাষ করে সফল হতে না পারায়। মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে তামাক চাষাবাদ থেকে। নিজের প্রচেষ্টা আর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগীতায় নিজের অধীনে থাকা জমিতে চাষাবাদ করছেন ভুট্রা।
ধীরে ধীরে কৃষকরা তামাকের ক্ষতিকর দিক বুঝতে পেরে অনেক তামাক চাষের বিকল্প ফসল হিসেবে ভুট্রা, আখ, সরিষা, শাকসবজি উৎপাদনে ঝুঁকছে। সাম্প্রতিক কয়েকটি বছর ধীর ধীরে তামাক চাষ কমে আসছে। সূত্রে জানাযায়, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ হতে কীটনাশক, সার, বীজসহ নানা মুখী সহযোগীতা দিয়ে আসছে উপজেলা কৃষি অফিস। কৃষি অফিসের তথ্য মতে লক্ষ্যমাত্রার চাইতে বেশি উৎপাদিত হয়েছে উপজেলায় ভুট্রা চাষ। গত ৫ বছরে অন্তত ৫০ হেক্টর জমিতে তামাক ছেড়ে বিকল্প ফসল উৎপাদিত হচ্ছে।
এদিকে তামাক ছেড়ে বিকল্প চাষ হিসাবে ভুট্রাসহ নানামুখী ফসল উৎপাদনে কৃষক ঝুঁকছে বিষয়টি উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সফলতা মনে করছে উপজেলা প্রশাসন। তামাক ছেড়ে ভুট্রা চাষ করে সফল কৃষক নুরনবীর জন্য আজ ১৬ ফ্রেবুয়ারী তুলে দেওয়া হয়েছে সফল কৃষক সম্মাননা ও আর্থিক সহায়তা। এসময় উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আরাফাতুল আলম জানান, নুরনবী সফল কৃষক নিজেও তামাক চাষ ছেড়ে বিকল্প ফসল উৎপাদন করেছে পাশাপাশি আরো ১০ জন কৃষককে ভুট্টা চাষে উৎসাহিত করেছেন, সহায়তা প্রদান করেছেন।
সম্মাননা পেয়ে নুরনবী বলেন, ৫ বছর ধরে ভূটা চাষ করি। আগে তামাক চাষ করতাম। ৪০ শতক জমিতে ভুট্রা চাষে ব্যায় হয় ১৮ হতে ২০ হাজার টাকা। বিক্রয় হয় ৬০-৭০ হাজার টাকা। ভুট্রা চাষে কষ্ট এবং স্বাস্থঝুকিঁ নেই। তাছাড়া ভুট্রা চাষ করলে গাছের প্রতিটি অংশই আমাদের কাজে লাগে। তামাক চাষ ছেড়েছেন কেন এমন প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন, তামাক চাষে খরচ ও কষ্ট বেশি আর স্বাস্থ্য জন্য ঝুঁকি। তামাক পাতা শুকাতে তামাক চুল্লিতে প্রচুর বনের কাট পুড়তে হয়। একবার আমি তামাক পাতা শুকাতে চুল্লিতে দেই মাঝ পথে লাকড়ি শেষ হয়ে যায়। নিরুপাই হয়ে বাড়ির আঙ্গিনায় থাকা বড় তিনটি ফলজ কাঁঠাল গাছ কেটে তামাক চুল্লিতে দেই, ফলজ গাছ কেটে তামাক চুল্লিতে দেওয়া আমার অনেক খারাপ লাগছে তাই তামাক চাষ ছেড়ে বিকল্প চাষ হিসেবে ভূটা ও শাক সবজি চাষ করি। আমার দেখা দেখি এখন অনেকে ভূটা চাষ করছে তবে তামাক চাষের জমিতে ভূটা চাষ করে লাভবান হওয়া সম্ভব।
দীঘিনালা কৃষি কর্মকর্তা মো: শাহাদাৎ হোসেন বলেন, আমাদের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সবসময় উপজেলা কৃষকের পাশে রয়েছে। প্রণোদনা, সার, বীজ, কীটনাশক দিয়ে থাকি। পাশাপাশি আমাদের ব্লক সুপারভাইজার মাঠে গিয়ে কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে থাকে। আমাদের কৃষি বিভাগের প্রচেষ্টায় অনেক কৃষক তামাক চাষ ছেড়েছে। বিকল্প চাষে নানামুখী ফসল উৎপাদন করছে।