এস দিলীপ রায়।
উত্তর আমেরিকার শস্য কিনোয়াকে বলা হয় সুপারফুড। দানাদার ফসলটি থেকে উচ্চ আমিষ সমৃদ্ধ খাবার তৈরি হয়। প্রথমবারের মতো লালমনিরহেটে কিনোয়া চাষে সাফল্য পাওয়ায় সেখানে আবার এই ফসল চাষ করা হচ্ছে।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার হাতুরা গ্রামের মুকুল মিয়া (৬০) ৫৫ শতাংশ জমিতে কিনোয়া চাষ করেছেন। গত বছর ১৩ শতাংশ জমিতে তিনি এর চাষ করেছিলেন। এরই মধ্যে তার কিনোয়া গাছে ফলন এসেছে। তিনি মার্চের মাঝামাঝি সময়ে ফসল ঘরে তোলার আশা করছেন।
লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শামীম আশরাফ ডেইলি স্টারকে বলেন, কিনোয়া দেখতে চীনা কাউনের মতো। এটি মূলত উত্তর আমেরিকা মহাদেশের ফসল। শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫ বছর গবেষণার পর গতবছর দেশে মাঠ পর্যায়ে প্রথম কিনোয়ার চাষ হয়।
তিনি বলেন, কিনোয়া উচ্চ আমিষ সম্পন্ন খাবার। এটিকে ‘সুপার ফুড’ বলা হয়। কিনোয়াতে অ্যামিনো অ্যাসিড এবং লাইসিন থাকে যা স্বাস্থ্যকর টিস্যু বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। কিনোয়া আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন-ই, পটাসিয়াম এবং ফাইবারের একটি উৎকৃষ্ট উৎস। রান্না করা হলে এর দানাগুলি আকারে চারগুণ হয়ে যায়।
‘লালমনিরহাটে কিনোয়ার আশানুরূপ ফলন পাওয়া যাচ্ছে। কৃষকরা এর বিপণন করতে পারলে আর্থিকভাবে লাভবান হবেন। এটা করার চেষ্টা চলছে,’ তিনি বলেন।
কিনোয়া চাষি মুকুল মিয়া ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘গত বছর ১৩ শতাংশ জমিতে কিনোয়া চাষ করে ৯০ কেজি ফলন পেয়েছি। একটি বেসরকারি কোম্পানির সহায়তায় কিনোয়া চাষ করছি। তারাই আমার কাছে কিনোয়া কিনেছে। এর গাছের পাতা শাক হিসেবে ব্যবহার করা যায়। বাজারে বিক্রির সুবিধা পেলে আরও বেশি জমিতে কিনোয়া চাষ করতাম।’
মুকুল মিয়া বলেন, প্রতি শতাংশ জমিতে কিনোয়া চাষ করতে খরচ হয় ৩০০-৪০০ টাকা। প্রতি কেজি কিনোয়া ৫০০-৬০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে কিনোয়া বীজ বপন করতে হয়।
একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কৃষিবিদ ইকবাল হাসান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, আমার প্রতিষ্ঠান কিনোয়ার সপ্লাই চেইন তৈরি করতে কাজ করছেন। আপাতত বীজের জন্য একজন কৃষককে দিয়ে উৎপাদন চলছে। এদেশে কিনোয়ার চাহিদা আছে। কিছু প্রতিষ্ঠান বিদেশ থেকে এটি আমদানি করে।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার কুলাঘাট ইউনিয়নে হাতুরা গ্রামে কিনোয়া চাষে সাফল্য।-ডেইলি স্টার